টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে টনসিলের ভূল অস্ত্রোপচারের কারনে তাসরিফা আক্তার নামে ৯ বছরের এক শিশু মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে।উপজেলা সদরের সমবায় মার্কেটের ২য় তলায় বেসরকারি ক্লিনিক মির্জাপুর মডার্ণ হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এ ঘটনা ঘটে।


নিহত শিশু তাসরিফা দেলদুয়ার উপজেলার লাউহাটি ইউনিয়নের পাচুটিয়া গ্রামের পারভেজ মিয়ার মেয়ে।শিশুটির বাবা পারভেজের অভিযোগ ভূল অপারেশনের কারণে তার মেয়ের মৃত্যু হয়েছে।তিনি বলেন,অপারেশনের পৌঁনে দুই ঘন্টা পরেই তার মেয়ের মৃত্যু হয়।এদিকে শিশুর মৃত্যুর পর হাসপাতালের কর্তৃপক্ষ,চিকিৎসক ও নার্স গা-ঢাকা দিয়েছেন বলে জানা গেছে।ক্লিনিকটি ১০ বেডের সরকারি অনুমতি থাকলেও ১৫ থেকে ২০ বেড রেখে ক্লিনিকটি চালানো হচ্ছে।মৃত শিশুর বাবা পারভেজ মিয়া জানান,তিনি রপ্তানি এলাকার একটি কারখানায় মেকানিক পদে চাকরি করেন।শুক্রবার সকালে স্ত্রী পলি আক্তারকে সঙ্গে নিয়ে মেয়ে তাসরিফার টনসিলের চিকিৎসা করাতে মির্জাপুর মডার্ণ হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে আসেন।ক্লিনিকের চিকিৎসকেরা পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তাকে টনসিলের অপারেশনের জন্য ভর্তি করেন।দুপুর পৌঁনে ২টার দিকে নাক কান ও গলার চিকিৎসক ডা.মো.মাসুম বিল্লাহ তাসরিফার অস্ত্রোপচার করেন।
সোয়া ২টার দিকে অস্ত্রোপচার শেষে তাকে বেডে নেওয়া হয়।এর কিছুক্ষণ পর তাসরিফার হাত-পা ছটফট করতে থাকে,পরে পারভেজ ও পলি নার্স-চিকিৎসকদের ডাকতে থাকেন।একজন নার্স এসে বলেন টনসিল অপারেশনের রোগী হাত পা ছটফট করেই থাকে।এর কিছুক্ষণ পর তাসরিফার অবস্থা আরও খারাপ হয়ে অচেতন হয়ে পড়ে।পরে নার্স এসে তাকে কুমুদিনী হাসপাতালে পাঠান।সাড়ে তিনটার দিকে কুমুদিনী হাসপাতালে নেয়া হলে সেখানে চিকিৎসক জানান,শিশুটির মৃত্যু হয়েছে।পরে মৃত শিশু নিয়ে আবার ক্লিনিকে এসে ভুল চিকিৎসায় শিশুর মৃত্যুতে পারভেজ মিয়া ও পলি বেগম চিৎকার-চেঁচামেচি শুরু করেন।তখন অস্ত্রোপচার করা চিকিৎসক ডা.মো.মাসুম বিল্লাল-নার্সসহ কর্তৃপক্ষ সেখান থেকে চলে গিয়ে গা-ঢাকা দেন।পারভেজ অভিযোগ করে বলেন,ওরা আমার মেয়েকে অপারেশনের নামে জবাই করে খুন করেছে।আমি এর বিচার চাই।চিকিৎসক ডা.মো.মাসুম বিল্লাহ মুঠোফোনে বলেন,অস্ত্রোপচার সফল হয়েছে। এ্যানেস্থেসিয়ার কারণে রোগীর মৃত্যু হতে পারে।তবে এ্যানেস্থেসিয়া ডা.সাইফ আব্দুল্লাহ বলেন, এ্যানেস্থেসিয়ায় ভুল হলে রোগীর জ্ঞান ফিরবে না।কিন্ত অপারেশনের পর রোগীর জ্ঞান ফিরেছে।আমিসহ শিশুর বাবা-মা শিশুর সঙ্গে কথাও বলেছি।এদিকে শিশুর মৃত্যুর ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ টাকার বিনিময়ে সমঝোতার চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।শিশু মৃত্যুর অভিযোগের বিষয়ে ক্লিনিকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল হালিম ও পরিচালক মোস্তফা মিয়া চিকিৎসকের সঠিক তথ্য দিতে পারেননি।তারা শিশুর বাবার সঙ্গে মীমাংসার চেষ্টা চালাচ্ছেন বলে জানান।
মির্জাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি)মুহাম্মদ রাশেদুল ইসলাম বলেন,শিশু মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর ক্লিনিকে পুলিশ পাঠানো হয়েছিলো।অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি জানান।