বর্ষার মৌসুম শেষ হলেও বন্ধ হয়নি মেহেন্দিগঞ্জের মাসকাটা নদীর ভয়াবহ ভাঙন তান্ডব। প্রতিদিনের অব্যাহত ভাঙনে ছোট হয়ে আসছে মেহেন্দিগঞ্জের সাদেকপুর ইউনিয়নের ছোট্ট একটি গ্রাম মৃধারহাট। ভাঙনের ভয়াবহতা বাড়ছে প্রতিনিয়ত। তীব্র ভাঙনে প্রতিদিনই বিলীন হয়ে যাচ্ছে ঘর-বাড়ি, হাট-বাজার, ফসলি জমিসহ সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো। সব হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়ছে স্থানীয় বাসিন্দারা। প্রত্যেক বছর বর্ষার সময় এই এলাকার নদীভাঙন ভয়াবহ রূপ দেখা দেয়।

বর্ষার মৌসুম শেষ হলেও বন্ধ হয়নি মেহেন্দিগঞ্জের মাসকাটা নদীর ভয়াবহ ভাঙন তান্ডব। প্রতিদিনের অব্যাহত ভাঙনে ছোট হয়ে আসছে মেহেন্দিগঞ্জের সাদেকপুর ইউনিয়নের ছোট্ট একটি গ্রাম মৃধারহাট। ভাঙনের ভয়াবহতা বাড়ছে প্রতিনিয়ত। তীব্র ভাঙনে প্রতিদিনই বিলীন হয়ে যাচ্ছে ঘর-বাড়ি, হাট-বাজার, ফসলি জমিসহ সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো। সব হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়ছে স্থানীয় বাসিন্দারা।

প্রত্যেক বছর বর্ষার সময় এই এলাকার নদীভাঙন ভয়াবহ রূপ দেখা দেয়।


বারে বর্ষার সময় ভাঙন বেড়েছিল অন্যান্য বছরের চেয়েও কয়েক গুণ বেশি। সেইসঙ্গে অস্বাভাবিক জোয়ারে ডুবেছে অসংখ্য লোকালয়। তবে এবছর চিত্রটা ভিন্ন , বর্ষার মৌসুম শেষ হয়ে গেলেও এখনো ভাঙন কমেনি। জোয়ার এলেই ফসলি জমি পেরিয়ে পানি ঢুকে পড়ে বসতভিটায়। এতে ভয়ঙ্করভাবে বিপর্যস্ত হন স্থানীয়রা।


রুহুল (১৪), পড়াশোনা করছে সাদেকপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ৯ম শ্রেনীতে। কিছুদিন আগেও নিজ বাড়িতে ছুটে বেড়াতো এই কিশোর । পড়াশোনার জন্য বাড়ির পাশেই ছিল স্কুল। তবে নদী ভাঙন কেরে নিয়েছে তার সবকিছু নিজের বসতভিটার পাশাপাশি হারিয়ে গেছে শিক্ষাজীবন। এখন প্রতিদিন প্রায় তিন কিলোমিটার পথ পারি দিয়ে আসতে হয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। তবে নদী সংলগ্ন এই  ভবনটিও প্রায় নদীগর্ভে বিলীনের পথে।  অনেকেই ভয়ে ক্লাস করতে আসে না। তাছাড়া, জোয়ারের পানি স্কুলের ভিতরেও প্রবেশ করে পড়াশুনায় মারাক্তক ব্যাঘাত ঘটাচ্ছে। রুহুলের মত এমন অসংখ্য শিক্ষার্থীর ভবিষ্যত এভাবেই নদীগর্ভে হারিয়ে যাচ্ছে। অনিশ্চয়তায় কাটছে তাদের প্রতিটা দিন।

ক্ষতিগ্রস্থ এলাকার স্থানীয় কৃষক আলমগীর বেপারী (৫৬) বলেন, নদী ভাঙনের কারণে দিন দিন কমে যাচ্ছে ফসলি জমি। এছাড়া বেড়িবাধঁ না থাকায় জোয়ারের পানি ফসলের ব্যাপক ক্ষতি করছে। কৃষকরা কাঙ্খিত ফসল না পাওয়ায় আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ছেন। এখানে কৃষক আলমগীরসহ ক্ষতিগ্রস্থ আরো কৃষকরা তাদের কাঙ্খিত অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এর সাথে বাড়ছে পানিবাহিত নানা রোগের উপদ্রব। প্রায় সারাবছর বিভিন্ন ধরনের শারীরিক জটিলতায় ভোগেন এখানকার মানুষ। কলেরা, ডায়রিয়া সহ নানান ধরনের অসুখ যেন এখন নিত্যসঙ্গি।

এছাড়াও সাদেকপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন বলেন, তিনি স্থানীয় সংসদ সদস্য এম.পি পংকজ নাথ (মেহেন্দিগঞ্জ, হিজলা, কাজিরহাট) এর সাথে কথা বলে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) এর বরাবর নদী ভাঙন রোধে দ্রুত একটি প্রকল্প বাস্তবায়নের আবেদন করেন। পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) কর্তৃক জানানো হয় যে, বাঁধ নির্মানের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে।

সম্প্রতি মেহেন্দিগঞ্জের নদী ভাঙন পরিস্থিতি পরিদর্শনে এসে পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী কর্নেল (অব.) জাহিদ ফারুক নদী ভাঙন প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, দ্রুত নদী ভাঙন রোধে প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে।


প্রতিনিয়ত নদী ভাঙনের এই ভয়াবহতা থেকে দ্রুত পরিত্রান চান মেহেন্দিগঞ্জের মানুষজন।