বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশের ময়মনসিংহ জেলাতেও যথাযোগ্য মর্যাদায় জাতীয় ও জেলা পর্যায়ে বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে পালন করা হয়েছে আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস।
দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে সোমবার (৮সেপ্টেম্বর) ময়মনসিংহ জেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসন ও উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা অধিদপ্তরের ময়মনসিংহের আয়োজনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
‘প্রযুক্তির যুগে সাক্ষরতার প্রসার’ প্রতিপাদ্য নিয়ে উক্ত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক(যুগ্মসচিব) মোঃ মুফিদুল আলম।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) লুৎফন নাহার এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আলোচনা পুর্বে
সাক্ষরতা দিবস উপলক্ষে প্রবন্ধ রচনা ও উপস্থাপন করেন ময়মনসিংহ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের সহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ বাকী বি আনসারী।
সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সদর সহকারী কমিশনার ভূমি সৈয়দা তামান্না হোরায়রা, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ ওবায়দুল্লাহ,
ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. ফয়সল আহ্মেদ,প্রাইমারী টিচার্স ট্রেইনিং ইন্সটিটিউট ময়মনসিংহের
সুপারিনটেনডেন্ট মোহাম্মদ শাহজাহান কবীর, ইন্সট্রাক্টর (কম্পিউটার সায়েন্স)মোঃ সাইদুর রহমান প্রমুখ।
জেলা প্রশাসক মুফিদুল আলম বলেন-বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে সাক্ষরতা শুধু অক্ষরজ্ঞান অর্জনের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। বরং এটি মাতৃভাষায় পড়া, লেখা, অনুধাবন, যোগাযোগ ও গণনার দক্ষতার পাশাপাশি দৈনন্দিন জীবনে জ্ঞান প্রয়োগের সক্ষমতা অর্জনের মাধ্যম। সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে সাক্ষরতার বিকল্প নেই।
তিনি বলেন, বর্তমান প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে টিকে থাকার জন্য কর্মমুখী ও দক্ষতাভিত্তিক শিক্ষার গুরুত্ব অপরিসীম।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) লুৎফন নাহার সভাপতির বক্তব্যে জানান-বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর সর্বশেষ প্রতিবেদন (বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সমীক্ষা ২০২৪) অনুযায়ী, দেশের সাত বছর ও তদূর্ধ্ব জনগোষ্ঠীর মধ্যে সাক্ষরতার হার ৭৭ দশমিক ৯ ভাগ। অর্থাৎ, এখনও প্রায় ২২ দশমিক ১ ভাগ মানুষ নিরক্ষর রয়ে গেছে। এই জনগোষ্ঠীর বড় একটি অংশ বিদ্যালয়বহির্ভূত শিশু, ঝরে পড়া শিক্ষার্থী এবং শিক্ষা থেকে বঞ্চিত প্রাপ্তবয়স্ক নারী-পুরুষ। তাদের সাক্ষরজ্ঞান ও কর্মমুখী প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ মানবসম্পদে রূপান্তর করা উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সংবিধানে শিক্ষা অবৈতনিক ও বাধ্যতামূলক করার অঙ্গীকারের পাশাপাশি নিরক্ষরতা দূরীকরণেও সরকার নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
জেলা প্রশাসক আরও বলেন, আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থাকে এমনভাবে গড়ে তুলতে হবে, যেখানে প্রথাগত শিক্ষার পাশাপাশি ডিজিটাল দক্ষতা অর্জনের সুযোগ সবার জন্য– বিশেষ করে নারী, শিশু, প্রান্তিক জনগোষ্ঠী ও বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তিদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। শিক্ষকদের ডিজিটাল প্রশিক্ষণ, শিক্ষার্থীদের হাতে প্রয়োজনীয় প্রযুক্তি এবং অভিভাবকদের দৃষ্টিভঙ্গিতে পরিবর্তন আনার জন্য আমাদের সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।
ময়মনসিংহ সদরের বয়ড়া ছালাকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক বিলকিছ আক্তার রুমার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন সহকারী পরিচালক, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস,বিভিন্ন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান, বিভিন্ন অফিসের কর্মকর্তা ও সদর উপজেলার সহকারী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারবৃন্দ এবং প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান ও সহকারী শিক্ষকবৃন্দ।