রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানা এলাকার কুখ্যাত মাদকসম্রাট ও স্থানীয় যুবলীগ নেতা মো. মাসুম (৩৫) অবশেষে ডিবি পুলিশের জালে আটক হয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

সোমবার (১৪ জুলাই) রাতে ওয়ারী বিভাগ গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের একটি টিম ধলপুর সিটি পল্লী এলাকা থেকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে। মঙ্গলবার বিকেলে আদালত মাসুম ও তার দুই সহযোগীকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

ডিবি পুলিশ জানায়, মাসুমের বিরুদ্ধে যাত্রাবাড়ী থানায় দায়েরকৃত মামলাসহ (মামলা নং-৫০, ১৩ জানুয়ারি ২০২৫) অন্তত ২০ থেকে ২৫টি মামলা রয়েছে। এসব মামলায় রয়েছে হত্যা, মাদক ব্যবসা, জমি দখল, চাঁদাবাজি, পুলিশের ওপর হামলা, ও ভয়ভীতি প্রদর্শনের মতো গুরুতর অভিযোগ। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় একজন শিক্ষার্থী হত্যার ঘটনাতেও তার সম্পৃক্ততা রয়েছে বলে জানিয়েছে তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র।

গ্রেফতারকৃত অন্য দুজন হলেন ধলপুর এলাকার আব্দুল করিমের ছেলে মো. নাইমুল হক (২৯) এবং দ্বীন ইসলামের ছেলে নাসির (২৯)। তারাও মাসুমের অপরাধ সাম্রাজ্যের সহযোগী বলে জানিয়েছে ডিবি।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ধলপুর এলাকায় মাসুম দীর্ঘদিন ধরে একটি ভয়ঙ্কর অপরাধ চক্র পরিচালনা করে আসছিলেন। তার মাদক ব্যবসা থেকে আয় করা কোটি কোটি টাকা দিয়ে সে বিভিন্ন রাজনৈতিক মহলে মাসোহারা দিয়ে প্রভাব বিস্তার করে আসছিলেন। এলাকায় মাদক বেচাকেনা, জমি দখল, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, এবং ভয়ভীতি প্রদর্শন ছিল নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, মাসুমের কারণে ধলপুর সিটি পল্লীতে স্বাভাবিকভাবে বসবাস করা কঠিন হয়ে পড়েছিল। কেউ তার বিরুদ্ধে মুখ খুললে পড়তে হতো সন্ত্রাসী হামলার মুখে।

তার গ্রেফতারের পর এলাকাবাসী স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন। তারা জানান, “দীর্ঘদিন পর শান্তির আশায় বুক বাঁধতে পারছি। আশা করি, এবার ধলপুর এলাকায় শান্তি ফিরে আসবে এবং মাদক-সন্ত্রাসমুক্ত সমাজ গড়ে উঠবে।”

বিষয়টি নিশ্চিত করে যাত্রাবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. কামরুজ্জামান বলেন, “যুবলীগ নেতা পরিচয়ে পরিচিত মাসুম ও তার দুই সহযোগীকে ডিবি পুলিশ আদালতে পাঠিয়েছে। ১৩ জানুয়ারির মামলাটিসহ অন্য মামলাগুলোও তদন্তাধীন রয়েছে।”