মুন্সীগঞ্জ টংগীবাড়ী উপজেলার নশংকর গ্রামের কৃষ্ণ সরকারের মেয়ে স্বর্ণা রাণী রায় গত সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দুপুর দেড়টার দিকে শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে মৃত্যু বরণ করেন। তার মরদেহ গত মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে নিজ এলাকার পুরা শ্মশানে দাহ করা হয়েছে বলে পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে।
২০২৩ সালের ৮ ই সেপ্টেম্বর উত্তর কামারখাড়া গ্রামের মিজি বাড়ির দিলিপ রায়ের ছেলে দীপ্ত রায় পরিবারের অমতে স্বর্ণা রাণীকে জোরপূর্বক বিয়ে করেন। দীপ্ত রায় এলাকায় ভবঘুরে ও মাদকাসক্ত ছিলেন বলে জানা যায়। বিয়ের কিছুদিন পরই দীপ্ত ও তার মা ভুক্তভোগীকে তার বাবার বাড়ি থেকে যৌতুক এনে দেওয়ার জন্য চাপ দিতেন ও মারধর করতেন।
স্বর্ণা সেই বিষয়টি তার পরিবার ও আত্মীয় স্বজনদের একাধিকবার জানিয়েছিলেন বলে স্বর্ণার পরিবার থেকে জানা যায়। পরে এ বছরের ৩০ জুলাই সকালে আবারও যৌতুকের দাবিতে স্বর্ণাকে মারধর করে তার শরীরে আগুন ধরিয়ে দেন স্বামী ও শ্বাশুড়ি।এতে গুরুতর দগ্ধ হলে স্বর্ণার স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে চিকিৎসক তাকে শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে রেফার করেন। সেখানে ১ মাস ১৬ দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে অবশেষে সোমবার মৃত্যুর কোলে ঢলে পরেন তিনি।
নিহত স্বর্ণার বাবা কৃষ্ণ সরকার বলেন, আমার মেয়েরে ওরা অনেক মারধর করতো। আগুন দেওয়ার ৫ দিন আগেও ওরা ৪-৫জন মিলে আমার মেয়েরে খুব মারছে। পরে ৩০ জুলাই ওকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে রান্না ঘরে নিয়ে ওর স্বামী ও শাশুড়ি মিলে স্বর্ণার গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। আমার মেয়ে মৃত্যুর আগে তার বোনের কাছে সব বলে গেছে। আমি ওর স্বামী ও শাশুড়ির বিচার চাই। আমি আমার মেয়ের সৎকার কাজে ব্যস্ত আছি। সৎকার কাজ শেষে আমি থানায় অভিযোগ দায়ের করবো।
টঙ্গিবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহিদুল ইসলাম বলেন, আমি মৌখিকভাবে বিষয়টি শুনেছি। নিহত ওই নারীর পরিবারের অভিযোগ, তার শাশুড়ির দেওয়া আগুনে তিনি দগ্ধ হয়েছেন। ওই নারী মারা যাওয়ার পরে আমাকে তারা ঢাকা থেকে ফোন করেছিলেন। আমি বলেছি, অভিযোগ থাকলে মরদেহ ময়নাতদন্ত করাতে হবে। পরে মরদেহের ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।