রংপুরের বদরগঞ্জ থানার সামনে এক সাংবাদিককে পেটানোর জেরে গতকাল থানার তিন পুলিশ সদস্যকে ক্লোজড করে রংপুর পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে। একই সাথে বদরগঞ্জ থানার ওসি এ কে এম আতিকুর রহমানের অপেশাদার আচরণ তদন্তে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রংপুরকে প্রধান করে ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
গতকাল ২১ মার্চ শুক্রবার বিকেলে রংপুর রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি আমিনুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। ঘটনার ব্যাপারে জানা গেছে, গত ১৯ মার্চ (বুধবার) বদরগঞ্জ থানার সামনে ক্লাবে বসে দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার বদরগঞ্জ প্রতিনিধি সালাম বিশ্বাস ও আরো কয়েকজন সাংবাদিক খবর লিখছিলেন। এমন সময় থানা থেকে একটি গাড়ি বের হয়ে এসে ক্লাবের সামনে দাঁড়ায় এবং কয়েকজন পুলিশ সদস্য গাড়িতে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। তাদের বাদ বাকবিতন্ডার ছবি সালাম বিশ্বাস তার মুঠো ফোনে ধারণ করার চেষ্টা করেন। এ ঘটনায় গাড়িতে থাকা কনস্টেবল আলামিন তাকে ভিডিও ধারণ বন্ধ করতে বলে অন্যথায় মারধরের হুমকি প্রদান করে। কথা শেষ করেই কনস্টেবল আলামিন এসআই রবিউল ইসলাম এবং কনস্টেবল মুজিবুর রহমান তার হাতে থাকা মোবাইল ফোন কেড়ে নেয় এবং তাকে চ্যাংদোলা করে ধরে নিয়ে থানার ভিতরে যান। থানায় অবস্থানরত ওসি একেএম আতিকুল ইসলামের সামনে পুনরায় তাকে মারধর করেন এবং গালিগালাজ করেন। খবর পেয়ে বদরগঞ্জে কর্মরত সংবাদ কর্মীরা থানায় ছুটে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে বদরগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ ভর্তি করান।বর্তমানে তিনি সেখানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তিনি ডান হাত এবং ডান পায়ে আঘাতের কারণে হাঁটতে পারছে না।এ ঘটনা সাংবাদিক মহলে জানাজানি হলে সবার মাঝে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। কর্তব্যরত অবস্থায় পুলিশ সদস্যদের এহেন অপেশাদার আচরণের তীব্র নিন্দা জানানো হয়। ঘটনাটি পুলিশের ঊর্ধ্বতন মহল অবহিত হলে রংপুরে অতিরিক্ত ডিআইজি আমিনুল ইসলামের নির্দেশে রংপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে প্রধান করে ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির সদস্যরা প্রাথমিক তদন্তে ঘটনার সত্যতা পেয়ে তিন পুলিশ সদস্যকে ক্লোজড করে রংপুর পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করেন। ক্লোজড হওয়া পুলিশ সদস্যরা হলেন, এএসআই রবিউল ইসলাম, কনস্টেবল আলামিন, এবং কনস্টেবল মুজিবুর রহমান। পুরো ঘটনায় রংপুরের সাংবাদিক মহলে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার না হলে ভবিষ্যতে আন্দোলন কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছেন সাংবাদিক নেতারা।