রাজধানীতে আবারও গণপরিবহনের চালক-কন্ডাক্টরের হাতে শিক্ষার্থী নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে দ্বিগুণ ভাড়া দাবি করা নিয়ে তর্কের জেরে কবি নজরুল সরকারি কলেজের এক শিক্ষার্থীকে চলন্ত বাস থেকে ফেলে চাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। পরে বাসের কাঁচ দিয়ে আঘাত করে তার হাত গুরুতর জখম করা হয়।
বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) বিকেলে রাজধানীর পোস্তগোলা এলাকায় রাইদা পরিবহনের একটি বাসে এই ঘটনা ঘটে। আহত জাহিদ হাসান কবি নজরুল সরকারি কলেজের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। বর্তমানে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
ভুক্তভোগী ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সূত্রে জানা যায়, জাহিদ হাসান ধোলাইপাড় থেকে পোস্তগোলা হয়ে নদীর ওপারে যাওয়ার জন্য রাইদা পরিবহনের একটি বাসে ওঠেন। গন্তব্যে পৌঁছানোর পর ভাড়া দেওয়ার সময় কন্ডাক্টর তার কাছে সরকার-নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে দ্বিগুণ দাবি করেন। এ নিয়ে জাহিদের সঙ্গে কন্ডাক্টরের কথা-কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে বাস থেকে নামার জন্য দরজায় এক পা রাখতেই চালক অতর্কিতভাবে বাসটি দ্রুতগতিতে চালিয়ে দেন। এতে জাহিদ ছিটকে রাস্তায় পড়ে যান।
প্রাণে বেঁচে গিয়ে তিনি উঠে দাঁড়িয়ে বাসে হাত রাখলে চালক ক্ষিপ্ত হয়ে ভাঙা কাঁচের গ্লাস দিয়ে তার হাতে সজোরে আঘাত করেন। এতে তার ডান হাতের একাধিক স্থান গভীরভাবে কেটে গিয়ে মারাত্মক রক্তক্ষরণ শুরু হয়। ঘটনার পরপরই আশেপাশের লোকজন তাকে উদ্ধার করে দ্রুত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়।
এ বিষয়ে আহত শিক্ষার্থী জাহিদ হাসান কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, "আমি টিউশনি করতে যাচ্ছিলাম। বৈধ ভাড়া দিতে চাইলেও কন্ডাক্টর দ্বিগুণ ভাড়া দাবি করে। এর প্রতিবাদ করায় আমাকে বাস থেকে ফেলে দিয়ে মেরে ফেলার চেষ্টা করা হয়। আমি উঠে বাসে হাত রাখতেই চালক কাঁচ দিয়ে আমার হাতে আঘাত করে।"
ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পর কবি নজরুল সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এ বিষয়ে কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান বলেন, "আমি ঘটনাটি শুনেছি, এটি অত্যন্ত ন্যক্কারজনক। আমাদের একজন শিক্ষার্থী এমন পাশবিকতার শিকার হবে, তা মেনে নেওয়া যায় না। যে পরিবহনের বাসে এই ঘটনা ঘটেছে, আমরা দ্রুত তাদের শনাক্ত করে কঠোর আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করব।"
এই ঘটনায় অভিযুক্ত বাসচালক ও কন্ডাক্টরের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।