গতকাল বৃহস্পতিবার (০২ মে) রাত দশটা পনেরো মিনিটে রাজধানী উত্তরার জসিমউদ্দিনে ঘটে এক ভয়াবহ সিএনজি দুর্ঘটনা, দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন তিনজন একজনের অবস্থা গুরুতর।
মোঃ ইব্রাহীম (২২) নামে এক যুবক জসিম উদ্দিন থেকে রাস্তা পার হয়ে সেক্টর -৪ এর ৭নং রোডের গেইটের দিকে আসার সময় ঢাকা-ময়মনসিংহ হাইওয়ে রোডে সিএনজির সাথে ধাক্কা খেয়ে গুরুতর আহত হয় এবং সিএনজি টি উল্টে গিয়ে দুমড়ে-মুচড়ে যায়। সাথে সাথে ঘটনাস্থলে থাকা মানুষ ভীড় করে এবং এমন সময় আমি (মোঃ আকিবুর রহমান) অফিস শেষে বাসায় ফিরছিলাম তখন আশেপাশে থাকা দুয়েক জন পথচারীকে সাথে নিয়ে ইব্রাহিমকে রাস্তা পার করায় সেই সময় সিএনজি চালক ঘটনাস্থল থেকে চলে যায় এবং সিএনজি তে থাকা বাকি যাত্রীরা মোটামুটি স্বস্তি বোধ করায় বাসায় চলে যায়। এরপর ইব্রাহিমকে নিয়ে জরুরি ভিত্তিতে উত্তরা সেক্টর-৬ কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে নিয়ে যাই এবং ৯৯৯ এ কল করে উত্তরা পূর্ব থানার এসআই মোঃ আবুল হাসান কে ঘটনা জানালে সাথে ওনার ফোর্স নিয়ে হসপিটালে চলে আসে। তখন তার কাছে সমস্ত ঘটনাবলি খুলে বললে ওনাদের সর্বাত্মক সহযোগিতায় রোগীর প্রাথমিক চিকিৎসা করা হয়, রোগীর কাছ থেকে তার বাবার নাম (বাচ্চু মিয়া) মাতার নাম (আয়েশা) এবং ঠিকানা জানা যায় রাজধানীর মিরপুর-২, ৬০ফিট, আমতলা কিন্তু সে কোন ফোন নাম্বার বলতে পারে নি এবং দাবি করে ঘটনাস্থল থেকে ফোনটি হারিয়ে গেছে কেননা ঘটনাস্থলে থাকা প্রতক্ষ্যদর্শীদের অনেকেই যে যার মত ছবি ভিডিও করায় ব্যস্ত এবং কেউ কেউ সেই সুযোগ মোবাইল মানিব্যাগ হাতিয়ে নিতে ব্যস্ত এবং অনেক খোঁজাখুঁজি করেও ফোনটি পাওয়া যায়নি। ফলে আত্মীয়-স্বজন কারো সাথে কোন যোগাযোগ সম্ভব হয়নি।
এরপর অবস্থার আরো অবনতি হতে থাকলে একসময় সে আবোল তাবোল প্রলাপ বকতে থাকে, তখন রাত ১২টায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে অতিদ্রুত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলে, তখন এসাই আবুল হাসানের সহযোগিতায় উত্তরা পশ্চিম থানার এসআই হানিফ এর সাথে যোগাযোগ করে রাত ২টায় তাকে ঢাকা মেডিকেল এ নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করে দেই এবং তখন পর্যন্ত ভুক্তভোগীর কোন আত্মীয় স্বজনের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়ে ওঠে নি। ঘটনার শুরু থেকেই কর্তব্যরত প্রত্যেক পুলিশ সদস্য সর্বোচ্চ সহযোগিতা ও মানবিক সেবা প্রদান করেন। সর্বশেষ ভোর পাঁচটায় এসআই হানিফ জানান ঢাকা মেডিকেল এ চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার বাবাকে খোঁজে বের করা যায় এবং বর্তমানে তাকে তার বাবার কাছে হস্তান্তর করা হয়।
ঘটনার প্রেক্ষিতে দুর্ঘটনা গুলোর কারণ এবং প্রতিকার সম্পর্কে এসাই আবুল হাসান জানান - রাজধানীর উত্তরার জসিমউদ্দিন অনেক বেশি ব্যস্ততম জায়গা কিন্তু ফ্লাইওভার থাকার কারণে সেখানে কোন ওভারপাস নেই যে কারণে যাত্রীরা ঝুঁকি নিয়েই রাস্তা পারাপার হয়ে থাকেন। এ কারণেই সেখানে প্রায়শই ঘটে থাকে এমন অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা যার ফলে প্রাণ চলে যায় অসংখ্য মানুষের। এই বিষয়ে তিনি আরো বলেন রাস্তা পারাপারে সকল যাত্রীদের নিজে থেকে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত ও যথা সম্ভব ওভারপাস কিংবা সেখানে ট্রাফিক সিগন্যাল মেনে রাস্তা পার হওয়া উচিত। প্রশাসনের কাছে তিনি আরো আশা রেখে বলেন এখানে যেহেতু ফ্লাইওভারের কারণে ওভারপাস করা সম্ভব নয় তাই সর্বসাধারণের কথা চিন্তা করে আন্ডারপাসের ব্যবস্তা করা জরুরি।