রবিবার (০৩ আগস্ট) দুপুরে বালিয়াকান্দি সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে চলমান অনিয়ম, ঘুষ, দুর্নীতি এবং দলিল লেখক সিন্ডিকেটের মাধ্যমে অতিরিক্ত অর্থ আদায় বন্ধে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণের ৫ দফা দাবীতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে স্থানীয়রা।
এসময় গওছেল আযম গহের, মিরাজুল ইসলাম, আব্দুর রশিদ, ফিরোজ, জমির সহ স্থানীয় লোকজন উপস্থিত ছিলেন। পরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করে।
তারা অভিযোগ করে বলেন, বালিয়াকান্দি সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে দীর্ঘদিন যাবৎ নানাবিধ অনিয়ম, ঘুষ-দুর্নীতি ও দলিল লেখকদের সিন্ডিকেটের মাধ্যমে দলিল নিবন্ধন প্রক্রিয়ায় অতিরিক্ত অর্থ আদায় করা হচ্ছে। সরকারী ফির থেকে অতিরিক্ত টাকা না দিলে দলিল সম্পাদন হয় না। সাধারণ জনগণ নির্ধারিত সরকারি ফি জমা দেওয়ার পরও নানা অজুহাতে অতিরিক্ত অর্থ দিতে বাধ্য হচ্ছেন। কেউ এই অনৈতিক দাবির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলে তাদের কাজ অকারণে বিলম্বিত বা ঝুলিয়ে রাখা হয় এমনকি দলিল হয় না। এর ফলে সাধারণ মানুষ হয়রানি ও আর্থিক ক্ষতির শিকার হচ্ছেন। এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ সেবাখাতে এ ধরনের অনিয়ম জনসেবার মৌলিক অধিকারকে ভূলুণ্ঠিত করছে।
মানববন্ধনে ৫টি দাবী করা হয়। দাবীগুলো হলো, বালিয়াকান্দি সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের যাবতীয় কার্যক্রমের প্রতি প্রশাসনিক তদারকি বৃদ্ধি করা। সিন্ডিকেটভুক্ত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে তদন্তসাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ। সরকারি ফি ছাড়া অতিরিক্ত অর্থ আদায় বন্ধে নজরদারি নিশ্চিত করা। দলিল নিবন্ধন প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা। অনিয়মে জড়িত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ।
খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, রাজবাড়ী সদর, পাংশা, কালুখালী, বালিয়াকান্দি ও গোয়ালন্দ উপজেলাতে সাব রেজিষ্ট্রি অফিসে দলিল লেখক সমিতির নামে সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে। এ সিন্ডিকেটের মাধ্যমে দলিল প্রতি সরকারী নির্ধারিত অর্থের ৪-৫গুন অর্থ আদায় করে থাকে। তাদের চাহিদা মতো অর্থ না দিলে দলিল রেজিষ্ট্রি করতে নানা তালবাহানা করে। সংশ্লিষ্ট সাব-রেজিষ্ট্রারদের ছত্রছায়ায় দলিল লেখক সিন্ডিকেটের সভাপতি-সম্পাদকের কাছে দলিল দাখিলের আগে সংকেতিক চিহৃ না দিলে সে দলিল রেজিষ্ট্রি হয় না। সমিতিতে অতিরিক্ত ফি জমা দেওয়ার পর দলিল সম্পাদন হয়। প্রতি মাসে ওই অতিরিক্ত অর্থ দলিল লেখকদের মাঝে বন্টন করা হয়। দীর্ঘদিন প্রকাশ্যে ঘুষ বাণিজ্যে চললেও যেন দেখার কেউ নেই। ৫টি উপজেলার দলিল লেখক সমিতি বিলুপ্ত ঘোষণা করে সরকারী মূল্যে দলিল রেজিষ্ট্রির ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানিয়েছেন জমির ক্রেতা-বিক্রেতারা।