কুড়িগ্রামের চর রাজীবপুর উপজেলা হিসাবরক্ষণ অফিসে দীর্ঘদিন ধরে চলছে সীমাহীন অনিয়ম ও দায়িত্বহীনতা। মাসের পর মাস কর্মস্থলে অনুপস্থিত উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা এ কে এম সামিউল ইসলাম। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন সেবাগ্রহীতারা।
গত ৬ ও ৭ এপ্রিল (রোববার ও সোমবার) দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রাজীবপুর উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তার কক্ষ তালাবদ্ধ। অফিসে কর্মরত অন্যান্য কর্মকর্তারাও অনুপস্থিত। শুধু আউটসোর্সিংয়ে নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মচারী আশরাফুল ইসলাম একা বসে কম্পিউটারে বিল তৈরির কাজ করছেন। অথচ এই কাজটি করার কথা অফিসের কম্পিউটার অপারেটর মো. মুকুল মিয়ার। তবে শেষ কবে তিনি অফিসে এসেছেন, তা কেউ জানেন না।
কম্পিউটার অপারেটরের দায়িত্ব পালন সম্পর্কে জানতে চাইলে আশরাফুল বলেন, “আমি সহযোগিতা করি। এটা আমার দায়িত্ব না, তবে টাইপিং পারি বলে কাজ করি।”
এদিকে শুধু কর্মকর্তা সামিউল ইসলামই নন, অফিসে অনুপস্থিত থাকেন অন্যান্য কর্মকর্তারাও। ফলে পুরো অফিস কার্যক্রম এককভাবে চালাচ্ছেন আশরাফুল ইসলাম। অভিযোগ রয়েছে, ঘুষ ছাড়া কোনো বিলই প্রদান করা হয় না। বিলের পরিমাণ যত বেশি, ঘুষের পরিমাণও তত বেশি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ভুক্তভোগী জানান, “আমরা কাজ করেও ঘুষ না দিলে বিল পাই না। এই অফিসে আশরাফুল ছাড়া আর কাউকে দেখি না। আগে শরীফ নামে একজন ছিলেন, তিনিও বদলি হয়ে গেছেন। এখন পুরো অফিস আশরাফুলের নিয়ন্ত্রণে। কিছু বলতে গেলে বিল আটকে দেওয়া হয়। আবার অনেকে কোনো কাজ না করেও বিল তুলতে পারে। টাকার বিনিময়ে এখানে সবই সম্ভব।”
অফিসে কেন অনুপস্থিত জানতে একাধিকবার ফোন করা হলেও কর্মকর্তা সামিউল ইসলাম ও কম্পিউটার অপারেটর মুকুল মিয়ার মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে কুড়িগ্রাম জেলা হিসাব ও অর্থ কর্মকর্তা মো. মহসীন আলী মুঠোফোনে বলেন, “আমার কাছে তারা ছুটি নেয়নি। হয়তো রংপুর বিভাগীয় অফিস থেকে নিতে পারে।”
এমন পরিস্থিতিতে রাজীবপুরের সচেতন মহল দ্রুত এই অনিয়ম ও দুর্নীতির সুষ্ঠু তদন্ত এবং কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন