গত ৪ আগস্ট (রবিবার) মুন্সীগঞ্জের সুপার মার্কেট এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন মুন্সীগঞ্জ শহরের উত্তর ইসলামপুর এলাকার রিয়াজুল ফরাজি,নূর মোহাম্মদ ডিপজল ও মোহাম্মদ সজল। এ ছাড়া সেদিন অর্ধশতাধিক গুলিবিদ্ধসহ আহত হন শতাধিক ছাত্র-জনতা এবং এই আন্দোলনে বিভিন্ন সময়ে মুন্সীগঞ্জের আরও ছয় জন ঢাকায় নিহত হন।
তাই গত রবিবার (৮ সেপ্টেম্বর) বিকাল ৫টার দিকে মুন্সীগঞ্জের সরকারি হরগঙ্গা কলেজ প্রাঙ্গণে ছাত্র-জনতার সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক সারজিস আলম উপস্থিত হয়ে বলেন, ‘আমাদের বাবা মা আমাদের শিখিয়েছেন, ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার হতে হবে। নয়তো সমাজের তথাকথিত মর্যাদাবান কিছু একটা হতে হবে। কিন্তু, তারা আমাদের কোনোদিনই এ স্বপ্নটি দেখায়নি যে,আমাদের ভালো রাজনীতিবিদ হতে হবে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এই সমন্বয়ক বলেন, যদি ছাত্র-জনতা একসঙ্গে মাঠে নামে, তাহলে শুধু শেখ হাসিনাই নয়, পৃথিবীর যেকোনও ফ্যাসিস্টের পতন ঘটানো সম্ভব। মুন্সীগঞ্জসহ সারা দেশে ছাত্র-জনতা ঐক্য গড়ে তোলে এবং ৫ আগস্ট তাদের প্রচেষ্টায় শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়। এগুলো আমাদের ব্যাকগ্রাউন্ড। কিন্তু সামনে আমাদের জন্য কী আছে সেটি নিয়ে আমাদের ভাবতে হবে।
সারজিস আলম আরো বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দল ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে তাদের সর্বোচ্চ দিয়ে চেষ্টা করেছে কিন্তু ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন ঘটাতে পারেনি। যেদিন ছাত্র-জনতা সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে মাঠে নেমে এসে সামনের সারিতে ছিল সেদিন ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন হয়েছে। বর্তমানে ছাত্রদের ওপর বাংলাদেশ মানুষের যে আস্থা রয়েছে দেশের তথাকথিত রাজনৈতিক দলগুলোর ওপরও সে আস্থাটি নেই।
সারজিস ছাত্রদের নির্দেশনা দিয়ে বলেন, ‘বিগত ফ্যাসিস্ট সরকার যেভাবে রাস্তায় নির্বিচারে পশুপাখির মত মানুষ হত্যা করেছে, যেভাবে লাশ ময়লার স্তূপের মতো ট্রাকে করে নিয়ে গিয়েছে সেগুলোর ডকুমেন্টেশন করে রাখতে হবে।’তিনি বলেন, ‘রাষ্ট্রের সঙ্গে মানুষের যে সাংঘর্ষিক যে ধারাগুলো রয়েছে- সেগুলো পরিবর্তন করা উচিত। নতুনভাবে সাজানো উচিত। অন্তবর্তীকালীন সরকারকে স্পষ্টভাবে বলতে চাই, তারা যেন এ কাজটি তাদের জায়গা থেকে করেন।