১৯৮৪ সালে নানা বৈচিত্র্য, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, বহুরুপী কল্পনাময় পরিবেশের কারণে বৃহত্তম নোয়াখালী থেকে এই নদীমাতৃক ১৪৪০ কিঃমিঃ মেঘনার তীরবর্তী বিস্তৃত এলাকাকে একটি স্বতন্ত্র জেলা 'লক্ষ্মীপুর' নামে তৎকালীন সরকার স্থান দিয়েছেন। কিন্ত দীর্ঘ ৪০ বছর অতিক্রম হলেও বাংলাদেশের মানুষ বিশেষায়িত জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে এখনো লক্ষ্মীপুরকে নোয়াখালীর সাথে অঙ্গিভূত করে উপস্থাপন করা হয়।

লক্ষ্মীপুরে বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত এবং বিপদসীমার উপরে প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। বানভাসিদের সহযোগিতায় এগিয়ে এসেছে স্থানীয় সামাজিক সংগঠন ও নন্দন ফাউন্ডেশন এবং রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি লক্ষ্মীপুর জেলা শাখা। 

১৯৮৪ সালে নানা বৈচিত্র্য, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, বহুরুপী কল্পনাময় পরিবেশের কারণে বৃহত্তম নোয়াখালী থেকে এই নদীমাতৃক ১৪৪০ কিঃমিঃ মেঘনার তীরবর্তী বিস্তৃত এলাকাকে একটি স্বতন্ত্র জেলা 'লক্ষ্মীপুর' নামে তৎকালীন সরকার স্থান দিয়েছেন। কিন্ত দীর্ঘ ৪০ বছর অতিক্রম হলেও বাংলাদেশের মানুষ বিশেষায়িত জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে এখনো লক্ষ্মীপুরকে নোয়াখালীর সাথে অঙ্গিভূত করে উপস্থাপন করা হয়।

২০২৪ সালের প্লাবন গত ৪০ থেকে ৫০ বছরে প্রাকৃতিক দূর্যোগের ইতিহাসে স্বাক্ষী হয়ে থাকবে। স্বাক্ষী হয়ে এই মহা প্রলয়ে বাংলাদেশের মানুষের মানবিক উদারতা আর একে প্রতি অন্যের এগিয়ে আসার চিত্র এবং মনুষ্যত্ব। কিন্ত দুঃখজনক হলেও সত্যি, গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টি এবং ভারতীয় বাঁধ উম্মুক্ত করার ফলে বুড়িচং, কুমিল্লা, ফেনী এবং নোয়াখালী জেলা বন্যার ভয়াবহতার চিত্র। ফেনী এবং নোয়াখালী অনবরত পানির চাপে যখন লক্ষ্মীপুর জেলার ৫টি উপজেলার লক্ষ লক্ষ মানুষ পানিবন্দি হয়ে বিভৎস জীবন যাপন করছে।

তখন লক্ষ্মীপুর জেলাকে নোয়াখালীর অঙ্গিভূত করে প্রচারণার কারণে জাতীয় পর্যায়ে লক্ষ্মীপুর সদর, কমলনগর, রায়পুর, রামগঞ্জ, রামগতিসহ সবকটি উপজেলার বন্যার্ত এবং উপকূলীয় আবাসীদের বিভৎসতার সঠিক চিত্র উঠে আসেনি।এই বানভাসি মানুষের নিকট নেই কোন পর্যাপ্ত বিশুদ্ধ খাবার পানি, শুকনো খাবার, কিংবা জরুরী ঔষধ বা সেবা। আশ্রয়কেন্দ্র স্বল্পতা এবং কোথাও কোথাও আশ্রয়কেন্দ্র পানিতে তলিয়ে যাওয়া সমস্যার বিদ্যমান। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায় থেকে কোনধরনের সাহায্য, ত্রাণ এবং সুপানীয় সুবিধা পৌছায়নি অদ্যবধি। স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, ঢাকাসহ অন্যান্য পর্যায় থেকে ত্রাণ সুবিধা আসলেও সেগুলো চৌমুহনী চৌরাস্তা থেকে সরাসরি ফেনী এবং নোয়াখালী জেলার দিকে চলে যায়।

আরো জানা যায়, লক্ষ্মীপুর জেলার স্থানীয় কিছু সামাজিক সংগঠন ও ক্রীড়া সংঘ তাদের নিজস্ব উদ্যেগে এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিদের সহযোগিতা পানিবন্দি মানুষের বাসায় প্রতিনিয়ত নির্দিষ্ট পরিমানে বিশুদ্ধ পানি শুকনো খাবার পৌছানো অব্যাহত রেখেছে। কিন্ত এই সহযোগিতা বিপুল সংখ্যক জনসংখ্যার জন্য পর্যাপ্ত নয়। তবে জাতীয় গণমাধ্যমের এটিএন বাংলা, দেশ টিভি, এবং মর্নিং পোস্ট গত কয়েকদিন যাবৎ লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার বাঙ্গা-খাঁ, দঃ মান্দারী, জকসিন, পৌরসভার ৩, ১১, নং ওয়ার্ডের বানভাসিদের সাথে যোগাযোগ করায় গত ২৫ ও ২৬ তারিখে স্থানীয় কয়েকটি সামাজিক সংগঠন তাদের বিশুদ্ধ পানি, শুকনো খাবার, এবং ডাঃ মোঃ জয়নাল আবেদীনের নেতৃত্বে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা ও জরুরি ঔষধ দেয়া হয়েছে।

স্থানীয় পানিবন্দিদের সাথে কথা বলে জানা যায়, গত ২০ বছরেও এমন প্রলয়ংকরী বন্যা তারা দেখেনি। ফলে বন্যা পূর্ববর্তী কোন প্রস্তুতি না থাকায় তাদের জীবন জীবিকার উপর বিস্তর প্রভাব পড়েছে। তবে স্থানীয় সামাজিক সংগঠনঃ- 

১. জে বি ফাউন্ডেশন 

২. পূর্ব বাংগা-খাঁ পল্লী উন্নয়ন ক্লাব

৩. নন্দন ফাউন্ডেশন 

৪. ডাঃ মোঃ জয়নাল আবেদীন 

৫. রওশন জাহান ইস্টার্ন মেডিকেল কলেজ টীম

৬. উত্তর দূর্গাপুর সংঘ

৭. দঃ মান্দারী যুব সমাজ 

৮. রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি লক্ষ্মীপুর জেলা শাখা 


এছাড়াও এগিয়ে রয়েছে রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা। কিন্ত দুশ্চিন্তার বিষয় হলো, বন্যা পরিস্থিতি এখন পর্যন্ত অপরিবর্তিত রয়েছে এবং গত দু'দিন থেকে টানা বৃষ্টি। ফলে অপরিবর্তিত অবস্থায় লক্ষ্মীপুর জেলার নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। বর্তমানে বিপদসীমার উপরে প্লাবিত হয়েছেঃ-

১৪ নং মান্দারী ইউনিয়নের অন্তর্গত দক্ষিণ মান্দারী, মটবী, আমিন বাজার, তেওয়ারি হাট, দাসের হাট, দিঘলী বাজার।

৮ নং দত্তপাড়া ইউনিয়নের দত্তপাড়া, বশিকপুর, বটতলী, উত্তর জয়পুর, শ্রীরামপুর। 

৬নং বাঙ্গা খাঁ ইউনিয়নের বাঙ্গা খাঁ, নেয়ামতপুর, জকসিন।

১৮ নং কুশাখালি ইউনিয়নের লাহারকান্দি গ্রাম

রায়পুর,  রামগঞ্জ এবং কমল নগর উপকূলীয় সমগ্র এলাকা।

রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি লক্ষ্মীপুর জেলা শাখা এখন পর্যন্ত উদ্ধার কার্যক্রম অব্যহত রেখেছে।