প্রতিবছরের ন্যায় ১৫ জানুয়ারী ২০২৫ ইংরেজি বুধবার জকিগঞ্জের ফুলতলী ছাহেববাড়ী সংলগ্ন বালাই হাওরে অনুষ্ঠিত হবে উপমহাদেশের প্রখ্যাত বুযুর্গ, সুলতানুল আরিফীন, রঈসুল কোররা ওয়াল মুফাসসিরীন, উস্তাযুল মুহাদ্দীসিন, মুজাদ্দিদে জামান, শামসুল উলামা হযরত আল্লামা আব্দুল লতিফ চৌধুরী ফুলতলী ছাহেব কিবলাহ (র.)-এর বার্ষিক ইন্তেকাল বার্ষিকী উপলক্ষে বিশাল ঈসালে সওয়াব মাহফিল। মাহফিল উপলক্ষে ইতোমধ্যে সকল প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন। লক্ষ লক্ষ মুসলিম জনতাকে বরণ করতে প্রস্তুত হয়েছে বালাই হাওর। প্রতিবছর ঈসালে সাওয়াব মাহফিলে বাংলাদেশ সহ বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে আল্লামা ফুলতলী ছাহেব কিবলাহ (রহ)-এর লাখ লাখ ভক্ত-মুরিদীন, মুহিব্বীন ও ধর্মপ্রান মানুষের সমাগম ঘটে। এ অঞ্চলে ফুলতলী ছাহেব বাড়ীর ঈসালে সাওয়াব মাহফিল হচ্ছে সর্ববৃহৎ গণজামায়েত।

মাহফিল উপলক্ষে সকল প্রস্তুতি ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। মাহফিলে প্রখ্যাত পীর-মাশায়িখ, আলিম-উলামা, ইসলামী শিক্ষাবিদ, চিন্তাবিদ ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত হবেন।

ঈসালে সাওয়াব মাহফিল উপলক্ষ্যে লক্ষ লক্ষ মুসলিম জনতাকে বরণ করতে প্রস্তুত হয়েছে বালাই হাওর। জকিগঞ্জ-আটগ্রাম রোডে রতনগঞ্জ বাজারের উত্তর ও দক্ষিণ উভয় দিকে গাড়ি পার্কিংয়ের জন্য বৃহৎ পরিসরে দশটি মাঠ প্রস্তুত করা হয়েছে। রতনগঞ্জ বাজার থেকে ছাহেববাড়ি অভিমুখী রাস্তার মুখে মোটরসাইকেল রাখারও ব্যবস্থা করা হয়েছে। সার্বিক শৃঙ্খলার জন্য স্বেচ্ছাসেবকদের প্রস্তুত করা হয়েছে। ইতোমধ্যে তাদের প্রশিক্ষণ ও দায়িত্ব বণ্ঠনও সম্পন্ন হয়েছে।

এদিকে স্থানীয় প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে। মাহফিলকে সফল ও স্বার্থক করে তুলতে ঈসালে সাওয়াব মাহফিল বাস্তবায়ন কমিটির পক্ষ থেকে সর্বস্তরের মুসলিম জনতার সার্বিক সহযোগিতা কামনা করা হয়েছে।

বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় আল্লামা ফুলতলী ছাহেব কিবলাহ (র.)-এর মাজার জিয়ারতের মাধ্যমে শুরু হবে মাহফিলের কার্যক্রম। এরপর খতমে কুরআন ও দোয়ার মাধ্যমে শুরু হবে মূল অনুষ্ঠান। এতে বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে খতমে বুখারী, খতমে খাজেগান, দালাইলুল খায়রাত শরীফের খতম, যিকর মাহফিল, বিষয়ভিত্তিক বয়ান ও স্মৃতিচারণমূলক আলোচনা। মাহফিলে তা’লীম-তরবিয়ত প্রদান করবেন ফুলতলী পীরের বড় ছেলে আল্লামা ইমাদ উদ্দিন চৌধুরী ফুলতলী। 

উল্লেখ্য, শামসুল উলামা আল্লামা ফুলতলী ছাহেব ক্বিবলাহ উপমহাদেশে সুপরিচিত এক মহান ব্যক্তিত্ব। ১৯১৩ সালে জকিগঞ্জ উপজেলার নিভৃত পল্লী ফুলতলীতে তাঁর জন্ম। প্রায় শতবর্ষব্যাপী জীবন অতিবাহিত করে ২০০৮ সালের ১৫ জানুয়ারি তিনি ইন্তেকাল করেন। এই দীর্ঘজীবনে তিনি দীনের বহুমুখী খিদমত আঞ্জাম দিয়েছেন। ইলমে কিরাতের ক্ষেত্রে তাঁর অবদান অনন্য ও বিশ্ববিখ্যাত। ইলমে হাদীসের খিদমতে তাঁর রয়েছে পৌনে এক শতাব্দীর প্রোজ্জ্বল ইতিহাস। সমাজের অসহায়-দুঃস্থ মানুষের সেবায় তাঁর রয়েছে বহুবিধ খিদমত। ইসলামী শিক্ষা বিস্তারে তিনি দেশ-বিদেশে অনেক মসজিদ-মাদরাসাও প্রতিষ্ঠা করেছেন।