লিবিয়া মাফিয়াদের হাতে জিম্মি সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলার হানিফ সরকার। এমন দাবি ভুক্তভোগী পরিবারের। পরিবারটির দাবি মোবাইলে অডিও -ভিডিও বার্তা পাঠিয়ে দালালরা হাতিয়ে নিয়েছে লাখ টাকা।

তথ্য অনুসন্ধানে জানাযায়, প্রথমে হুট করেই মুঠোফোনে কয়েক সেকেন্ডের ভিডিও। হাত পা বাঁধা কাউকে বেধড়ক মারধর করছে এক ব্যক্তি। স্বামী হানিফকে চিনতে ভুল হলো না স্ত্রী ফরিদা খাতুনের। সাথে ভয়েস ম্যাসেজ। জীবন বাঁচাতে টাকা চাইছে ভুক্তভোগী হানিফ। কিছুক্ষণ পরই একের পর এক শরীরের ক্ষত চিহ্নের ছবি।এর পর শুরু হয় স্বামীকে বাঁচানোর লড়াই। লিবিয়ার মাফিয়া সিন্ডিকেটের দালালরা যোগাযোগ শুরু করে টাকার জন্য। পাঠায় ইসলামী ব্যাংকের ১ টি অ্যাকাউন্ট নম্বর। সাথে শুরু হয় তীব্র মারধর ও মেরে ফেলার হুমকি।

স্বামীর জীবন বাঁচাতে ইসলামী ব্যাংকের নির্ধারিত অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠায় ভুক্তভোগী হানিফের স্ত্রী। এভাবে হুমকি দিয়ে চেকের মাধ্যমে লাখ টাকা নেয়ার পরও খোঁজ নেই রায়গঞ্জ উপজেলার হানিফ নামে এক প্রবাসীর।

লিবিয়ায় নিখোঁজ হানিফ সরকারের স্ত্রী ফরিদা খাতুন জানান, আমার স্বামীকে উপজেলার সোনাখাড়া ইউনিয়নের রুপাখাড়া গ্রামের সহেদ আলীর ছেলে ফারুক, লিবিয়া নিয়ে যাওয়ার কথা বলে ৫ লাখ টাকা নেয়। টাকা নেওয়ার পরে ঐ দেশে ২ বছর ধরে কাজ করে বাড়িতে নিয়মিত টাকা পাঠাচ্ছিল হানিফ। হঠাৎ ২ বছর পর এ ঘটনার মুখোমুখি হবে তা তারা কল্পনাও করতে পারেন নি। পরিবারের এক মাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তির এই অবস্থায় তাদের কোন কিছুই মাথায় আসছে না। খেয়ে না খেয়ে স্বামীকে বাঁচাতে প্রতিদিন এদিক ওদিক ছুঁটে চলেছেন তিনি। 

ভুক্তভোগীর মেয়ে হালিমা খাতুন রিয়া এ বিষয়ে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার ওয়েজ অনার্স কল্যাণ বোর্ড, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে গত ২ জানুয়ারি একটি লিখিত অভিযোগ জমা দিলেও কোন প্রতিকার পাননি তারা। এ ঘটনায় ১৩ ফেব্রুয়ারি সলঙ্গা থানায় হেলাল (৪৮)সহ একাধিক অজ্ঞাতনামা উল্লেখ করে মামলা করেছেন লিবিয়ায় নিখোঁজ হানিফের স্ত্রী ফরিদা খাতুন।

অভিযুক্ত হানিফ ও বিদেশ যাত্রার সহযোগী ফারুকের সাথে যোগাযোগ করলেও কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি। 

সলঙ্গা থানার ওসি তদন্ত রণজিৎ নন্দী বলেন, ‘লিবিয়ায় হানিফ নামে এক ব্যক্তিকে জিম্মি করে অর্থ আদায় করা হয়েছে। সেই সাথে তাকে অমানুষিক নির্যাতন করা হচ্ছে এমন এঘটনায় একটি মামলার তদন্ত চলামনা আছে। 
বিষয়টি তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’ তা ছাড়া মানবপাচারের ঘটনায় মামলায় আসামী গ্রেফতারের বিষয় পুলিশ সচেষ্ট রয়েছে। তবে অভিভাবকদের সচেতন হওয়ার আহবান জানিয়ে বৈধ পথে বিদেশ যাওয়ার পরামর্শ দেন তিনি। 

রায়গঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবির বলেন, ‘দুতাবাসের মাধ্যমে লিবিয়ায় বন্দি যুবকদের ফিরিয়ে আনতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর ভুক্তভোগীর পরিবার মামলা করলে তাদের সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।