শেরপুর নালিতাবাড়ীতে অন্যকে ফাঁসাতে গিয়ে ফেঁসে গেলেন সজিব মিয়া (২৫) নামে এক ছাত্রদল নেতা । বেড়িয়ে এলো পরকীয়ার সম্পর্ক!
শনিবার (১৬ মার্চ রাতে শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার রাজনগর ইউনিয়নের মধ্য রাজনগর সাইনবোর্ড এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
সজীব মিয়া ওই গ্রামের নছিম উদ্দিনের ছেলে ও রাজনগর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি।
জানা গেছে, গত ৩ বছর পুর্বে পার্শ্ববর্তী দোহালিয়া গ্রামের ময়জদ্দিন ওরফে বুলু মিয়ার ছেলে মিজানুর রহমান রিপন বিয়ে করেন মধ্য রাজনগর সাইনবোর্ড এলাকার ছানারুল হকের মেয়ে সামছুন নাহার সুমিকে। কিন্তু বিয়ের পর থেকেই স্বামী স্ত্রীর মধ্যে বনিবনা হচ্ছিল না। এক পর্যায়ে গত বছরের ২৫ এপ্রিল তাদের মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে। এরপর থেকে মিজানুর রহমান রিপন সিলেটে থেকে পড়াশোনা করছেন। সুমি থাকেন তার পিতার বাড়িতে।
গ্রামবাসীরা জানান, এসময় সুমির সাথে রাজনগর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি সজীব মিয়ার পরকীয়ার সম্পর্ক গড়ে উঠে। এ সম্পর্কের সুত্র ধরে সুমি ও সজীব মিয়া সুমির বিচ্ছেদ হওয়া স্বামী মিজানুর রহমানকে ফাঁসাতে এক গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয় তারা।
জানা যায়, ছাত্রদল নেতা সজীব মিয়া ও সুমি কৌশলে নোটারী পাবলিকে মিজানুর রহমান ও সুমির ছবি যোগ করে ৭ লাখ টাকা দেনমোহর বসিয়ে মিজানুর রহমানের স্বাক্ষর জাল করে পুনরায় বিবাহ হয়েছে মর্মে একটি নাটক সাজায়। এবং ১৫ মার্চ শুক্রবার সন্ধায় সজীব মিয়া সুমিকে মিজানুর রহমানের বাড়িতে উঠিয়ে দেন। সুমি মিজানুর রহমানের বাড়িতে উঠে স্ত্রীর মর্যাদা দাবি করে। এসময় গ্রামবাসীরা বিষয়টির সঠিকতা যাচাই ও সমাধানের জন্য একটি শালীশ বৈঠকের আয়োজন করেন। ওই গ্রামের ইউপি সদস্য আনোয়ার হোসেন জানান,শালীশ বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী অনুসন্ধানে নোটারি পাবলিকের ঘটনাটি ভূয়া প্রমানিত হয়। ইউপি সদস্য আনোয়ার হোসেনসহ গ্রামবাসীরা জানান, নোটারী পাবলিকের ঘটনার তারিখ ও সময়ে মিজানুর রহমান সিলেটে অবস্থান করছিলেন। এঘটনার পর গত ১৬ মার্চ শনিবার রাতে সুমির বাড়িতে ছাত্রদল নেতা সজীব মিয়া ও সুমির মধ্যে পরকীয়ার ঘটনা চলাকালে গ্রামবাসীরা সজীব মিয়াকে হাতে নাতে আটক করেন। গ্রামবাসীরা ছাত্রদল নেতা সজীব মিয়াকে উত্তম মাধ্যম দিয়ে ঘরে আটকে রাখেন। পরে রাতে গোপন সমঝোতার পর তাকে ছেড়ে দেয়া হয় বলে গ্রামবাসীরা জানান। মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে এ ষড়যন্ত্রের ঘটনাটি ফাঁস হয়ে যায়। পরে মিজানুর রহমান বাদি হয়ে সুমি, সুমির পিতা ছানারুল হক ও ছাত্রদল নেতক সজীব মিয়াসহ ৪ জনকে বিবাদী করে নালিতাবাড়ী থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। এব্যাপারে সজীব মিয়ার সাথে কথা হলে তিনি বলেন, সুমির ঘটনার বিষয়টি আমি সহযোগিতা করে আসতেছি। তাই বিষয়টি নিয়ে কি করা যায় পরামর্শ করতে ওই রাতে সুমিদের বাড়িতে গিয়েছিলাম। তিনি আরো বলেন সুমিদের বাড়িতে আমাকে নিয়ে কোন ঘটনা ঘটেনি। কেউ তাকে মারধর ও করেনি। সুমিদের সহযোগিতা করার কারনে তার ও সুমিদের প্রতিপক্ষরা তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। সুমির সাথে তার চাচা ভাতিজি সম্পর্ক রয়েছে বলে জানান তিনি। এবিষয়ে সুমির সাথে কথা বলতে পরদিন সুমিদের বাড়িতে যোগাযোগের যাওয়া হলে বাড়িতে কাউকেই পাওয়া যায়নি। ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।
নালিতাবাড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মো,সোহেল রানার সাথে গনমাধ্যমের কথা হলে তিনি বলেন, এবিষয়ে একটি অভিযোগ পাওয়া গেছে তদন্ত পূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।