মৌলভীবাজার জেলা " দুটি পাতা একটি কুঁড়ি" চায়ের রাজধানী,পাহাড়, হাওড়,জলাভূমি অপরুপ সাজে সাজিয়েছে বিশ্বরাজ প্রাকৃতিক বৈচিত্রময়

মৌলভীবাজার জেলা " দুটি পাতা একটি কুঁড়ি" চায়ের রাজধানী,পাহাড়, হাওড়,জলাভূমি  অপরুপ সাজে সাজিয়েছে বিশ্বরাজ প্রাকৃতিক বৈচিত্রময়  সৌন্দর্যময় সমৃদ্ধ অঞ্চলে মানুষের রিগ্ধতা, ভালবাসা,সহানুভূতি বিষয় ফুটিয়ে তোলা,আধ্যাত্মিক বন্ধন গড়ে তোলা, চা জনগোষ্ঠী ও নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীকে ট্যুরিজমের অংশ বিশেষ সম্পৃক্তার মেলবন্ধন গড়ে তোলা এবং ট্যুরিজম দেশ ও বর্হিবিশ্বে ছড়িয়ে দেওয়া জন্য ১ম বারের মত  বাংলাদেশ সরকার গেজেট স্বীকৃতি প্রাপ্ত শ্রীমঙ্গল উপজেলায় বসবাসরত  বর্ণিল জীবন ও সংস্কৃতি মেলবন্ধন ২৬টির'ও বেশি নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠী, চা জনগোষ্ঠী ও বাঙ্গালি সংস্কৃতির   ভাষা,বর্ণ,খাবার দাবার,পোশাক,জীবনাচরণ, নানা বর্ণের, নানা রঙের  ঐতিহ্য, ও বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতি,উৎপাদিত পণ্য ও রসনা সম্ভার স্টল প্রদর্শনে "হারমোনি  ফেস্টিভ্যাল" ২০২৫ গত ১০' জানুয়ারী হতে ১২' জানুয়ারী সকাল ১১ ঘটিকা হতে রাত ৮ ঘটিকা পর্যন্ত তিনদিন ব্যাপী  ৮নং কালিঘাট ইউনিয়ন অন্তর্গত কাকিয়াছড়া চা বাগান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠ প্রাঙ্গনে আয়োজন সম্পন্ন করেছে বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়। প্রধান অতিথি বাংলদেশ অন্তর্বতীকালীন সরকার প্রধান উপদেষ্টার মূখ্য সচিব এম সিরাজ উদ্দিন ফিতা কেটে "হারমোনি ফেস্টিভ্যাল" তিনদিন শুভ উদ্ধোধন করেন ও বক্তব্য বলেন আমি না আসলে আমার সারা জীবনের এ পর্যন্ত অনেক কিছু অজানা থেকে যেত। আমি ছাত্র ছিলাম,শিক্ষক ছিলাম বহু বছর চাকরী করেছি। এই জায়গায় পরিবার নিয়ে অনেকবার এসেছি। কিন্তু আমার জানা ছিল না  এখানে অনেক অনেক  নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠী বাস করে। তারপর তিনি সবর, রিকিয়াশন,বাড়াইক,গারো,ভূঁইয়া,রাজবল্লব,খাড়িয়া,খাসিয়া,মনিপুরী,ত্রিপুরা,গড়াইত,কুর্মী,ভূমিজ,গঞ্জু আরও অনেক নৃতাত্ত্বিক না ধরে প্রকাশ করেন। আমরা সবাই এই ভূ-খন্ডের অধিবাসী অর্থ্যাৎ ভূমিজ যা এখানে বসবাস করে। তিনি বলেন আমি যখন প্রবেশদ্বারে প্রবেশ করি তখন তারা হাসিমূখে দু' পাশে হাত বাড়িয়ে স্বাগতম জানাই। আশা করি এই হাসিমূখ তাদের চিরস্থায়ী হবে। মৌলভীবাজার শহর শ্রীমঙ্গল সিলেট বিভাগ বাংলাদেশের পর্যটনের প্রধান আকর্ষণ এলাকা। প্রকৃতি এটাকে অপরুপ সাজে সাজিয়েছে এখানে পাহাড়,হাওড়,জলাভূমি, চা বাগান যেন বিশ্বরাজ। যা বাংলাদেশে অনেক জায়গায় এরকম প্রকৃতির সৌন্দর্য নেই। পর্যটন শিল্পের উদ্দ্যোগে বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর লোকের সাথে পর্যটকের মেল বন্ধন করা যেতে পারে।  আপনারা জানেন গত ৫ আগষ্ট ফ্যাসিবাদ সরকার উৎখাতের ফলে প্রধান উপদেষ্টা ড. মোঃ ইউনূস দেশ ও জাতির হাল ধরেছেন। তিনি( ড. মোঃ ইউনূস) বলেছেন এই বাংলাদেশ সবসময় হাসিমূখের বাংলাদেশ,আনন্দের বাংলাদেশ, ফ্যাসাদের বাংলাদেশ নয় উৎসবমূখর বাংলাদেশ থাকবে। প্রকৃতিতে যে নৃতাত্বিক জনগোষ্ঠী বাস করে তাদের ট্যুরিজমে সমম্পৃক্তা করে ট্যুরিজমে আয়ের অংশ কমিউনিটি উন্নয়নে  সমৃদ্ধ করা হবে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। চাশ্রমিক ব্যাপারে তিনি বলেন তারা ফুলের তোড়া দিয়ে বরণ করে নিয়েছে।  চা জনগোষ্ঠী  এ অঞ্চলে বিশাল জনগোষ্ঠী। তারা অর্থনীতিতে অবদান রাখছে। তাদের প্রতি সরকারের যেভাবে দায়বদ্ধতা আছে সেভাবে এই স্টেটগুলো চা কোম্পানীর দায়বদ্ধতা আছে।
তাদের দুঃখ কষ্টের কথা অনেক শুনেছি।  চা শ্রমিক কমলি রবিদাস ও ছেলে সন্তোষ রবিদাস এর বাস্তব বিষয়ে কথা বলেন।  তিনি বলেন এই অঞ্চলে অনেক, অসংখ্য সংগ্রামী চা শ্রমিক মায়েরা আছে ঠিক তেমনি অসংখ্য নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর মায়েরা আছে। বিশেষ অতিথি  বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সচিব নাসরিন জাহান বলেন হারমোনি ফেস্টিভ্যাল শুধু মৌলভীবাজার শ্রীমঙ্গলের না এটা গোটা বাংলাদেশের হারমোনি ফেস্টিভ্যাল। নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠী ও চা জনগোষ্ঠীকে ট্যুরিজমে অংশের সাথে একটা মেলবন্ধন তৈরী করা। তিনি আরও বলেন শুধু শ্রীমঙ্গলে না সিলেট বিভাগ ট্যুরিজম অংশ হিসেবে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে। ট্যুরিজম বিষয়টা কিভাবে বাংলাদেশ ও বর্হিবিশ্বে ছড়িয়ে দেওয়া যায় সেই বিষয়ে ট্যুরিজম বোর্ড কাজ করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আবু তাহের মুহাম্মদ জাবের উদ্ধোধনি অনুষ্ঠান ও সভাপতিত্বে বলেন হারমোনি ফেস্টিভ্যাল হচ্ছে আমাদের দেশে মানুষের রিগ্ধতা,ভালবাসা,সহানুভূতি, আধ্যাত্মিক বন্ধন ট্যুরিজম বিষয়টা গড়ে তোলার জন্য ভবিষতে ট্যুরিজম বোর্ড কাজ করবে। মৌলভীবাজার চা জনগোষ্ঠী আদিবাসী ফ্রন্ট সভাপতি ও বাড়াইক সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি পরিমল সিং বাড়াইক বলেন আজকের বর্ণিল অনুষ্ঠানের পিছনে আমাদের চা জনগোষ্ঠী সকল জাতিগোষ্ঠী নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠী আছেন তাদেরকে আমরা সম্পৃক্ততা করার চেষ্টা করেছি। বর্তমানে ট্যুরিজম বোর্ড কর্মকর্তা ও উপজেলা প্রশাসন আমাদের সুযোগ করে দিয়েছেন তার জন্য চা জনগোষ্ঠী ও নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠী  কৃতজ্ঞ। তিনি আরও বলেন আমাদের হারিয়ে যাওয়া ভাষা, সংস্কৃতি,বৈচিত্রময় ঐতিহ্য রক্ষায় এত বড় আয়োজন সুযোগ করে দেওয়ায় আমরা অত্যন্ত আনন্দিত ও খুশি হয়েছি। বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়ন সহ সভাপতি ও কন্দ সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি পংকজ কন্দ বলেন হারমোনি ফেস্টিভ্যাল একটি চমৎকার আয়োজন। শ্রীমঙ্গলে ২৬টি নৃতাত্ত্বিক  জনগোষ্ঠী রয়েছে তার মধ্যে চা জনগোষ্ঠী ও আদিবাসী জনগোষ্ঠী বেশি। SHED  বাংলাদেশ জরিপ মোতাবেক  ৬৪ টি নৃতাত্ত্বিক  চা জনগোষ্ঠী রয়েছে। বাংলাদেশ সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় জরিপে ১৬৪ টি পদবীধারী রয়েছে। বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড,বেসামরিক বিমান ও পর্যটন শিল্প মন্ত্রণালয় উদ্দ্যোগে হারিয়ে যাওয়া ভাষা, সংস্কৃতি,বর্ণ,ফুড,ঐতিহ্য রক্ষায় শ্রীমঙ্গল উপজেলা কাকিয়াছড়া চা বাগান মাঠে হারমোনি ফেস্টিভ্যাল সুযোগ করে দিয়েছেন তার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ ইসলাম উদ্দিন বলেন ১ম বারের মত শ্রীমঙ্গল উপজেলায় হারমোনি ফেস্টিভ্যাল অনুষ্ঠিত হলো। শ্রীমঙ্গলে বসবাসরত ২৬টি নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠী, চা জনগোষ্ঠীর ফোকাল পার্সন ও ট্যুরিজমের সাথে সংযুক্ত স্টেক হোল্ডারের সাথে পরামর্শ করেছি। শ্রীমঙ্গল উপজেলায় সুশীল সমাজসহ সকলের সহযোগিতায় আমরা এই প্রোগ্রাম আয়োজন করেছি। মানুষ যেভাবে সাড়া দিয়েছে কল্পানাতীত।হারমোনি ফেস্টিভ্যাল যার যার ঘরে পৌছে গিয়েছে। তিনি দেশ ও বাইরে সকল ট্যুরিষ্টদের শ্রীমঙ্গল ভ্রমণে আহ্বান জানান। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ ইসলাম উদ্দিন ও সহধর্মিণী  হারমোনি ফেস্টিভ্যাল আয়োজক,নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠী, চা জনগোষ্ঠী, চা বাগান মালিক,আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী,সাংবাদিক,সুশীল সমাজ, দর্শানার্থী সহ সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ, প্রতিবছর এভাবে প্রোগ্রাম করার জন্য আহ্বান, আশাবাদ ব্যক্ত করে ৩দিন ব্যাপী হারমোনি ফেস্টিভ্যাল অনুষ্ঠান সমাপ্তি ঘোষণা করেন।