সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রমের আওতায় সরকার দেশের বয়স্ক জনগোষ্ঠী, বিধবা নারী ও প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে প্রতি বছর বাজেটে অর্থ বরাদ্দ রাখলেও এর সুফল থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন উপকারভোগী। চ্যানেল একুশ সাম্প্রতিক অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে এসব ভাতা প্রদানের ক্ষেত্রে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ।
এমনি অভিযোগ উঠেছে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের বিরুদ্ধে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রতি মাসে সরকারের বরাদ্দকৃত বয়স্ক, বিধবা, মাতৃত্বকালীন ও প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের ভাতা পাওয়ার জন্য দুর্ভোগে পরতে হচ্ছে। এ জন্য তাদের বাধ্য হয়ে দিতে হচ্ছে ঘুষ।
ভাতাভোগীরা বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে যে ভাতা আমাদের দেওয়া হয় তা ঠিকমত পাচ্ছিনা। আমাদের টাকাগুলো কে বা কারা আমাদের অজান্তে উঠিয়ে ফেলছে। আমরা বারবার সোনারগাঁও উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ে অবগত করেও বছরকে বছর পেরিয়ে গেলেও কোন সুরাহা পাচ্ছি না। উপজেলা সমাজ সেবায় নজরুল ও শফিউল নামের দুই ব্যক্তির কাছে আমরা হয়রানির শিকার হচ্ছি। তাদের কাছে আমাদের সমস্যা কথা তুলে ধরলেও তারা একের পর এক সময় দিয়ে যাচ্ছে কিন্তু তারপরেও কোনরকম সহযোগিতা করছে না।
পিরোজপুর ইউনিয়নের এক ভুক্তভোগী বলেন, এক বছর যাবত আমার মার বয়স্ক ভাতা থেকে বঞ্চিত আমরা। বারবার উপজেলা সমাজসেবার শরণাপন্ন হলেও কোনভাবে মিলছে না শুরাহা ।
এভাবে, সম্মানদি ইউনিয়নের আব্দুল মালেক বয়স্ক ভাতার নিবন্ধন থাকলেও ছয় মাস যাবত ঘুরছেন ভাতা পাওয়ার আশায় তবুও মিলছে না বয়স্ক ভাতা। দেই, দিচ্ছি, চলে যাবে ,আবার আসেন, হয়ে যাবে, সিম পরিবর্তন করেন, আপনার ভাতার টাকা হ্যাকাররা নিয়ে গেছে, বিভিন্ন রকমের অজুহাত শুনতে হচ্ছে এ সমাজসেবা কার্যালয় থেকে।
এভাবে রবিবার ৭ জুলাই বয়স্ক ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতার হয়রানি শিকার হয়ে উপজেলা সমাজসেবা অফিসের সামনে ভীর করতে দেখা যায় । তাদের একটি কথা আমরা আমাদের অধিকার ভাতা কেন পাচ্ছি না।
জানা যায়, ভুক্তভোগীরা প্রতিদিন ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষার সময় পার করে নিরাশ হয়ে আবারো চলে যেতে হয় বাড়িতে। তাহলে বয়স্ক ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা, গর্ভবতী ভাতা সহ বিভিন্ন ভাতার টাকা যাচ্ছে কোথায়, আর তা পাচ্ছে কারা, এমনই কৌতুহল জেগে উঠেছে এখন সামাজিক মাধ্যমে।
গুঞ্জন শুরু হয়েছে তাহলে কি সারা বাংলাদেশের নেয় সোনারগাঁ উপজেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরেও কি দুর্নীতি ও অনিয়মের ছোঁয়া মিলেছে। কারা জড়িত এ লুটপাটের সাথে। কাদের কাছে যাচ্ছে এ নিরীহ মানুষের শেষ সম্বল টুকু।
এ বিষয়ে, সোনারগাঁ উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের কর্মকর্তা ইকবাল হোসেন বলেন, আমরা ভাতা প্রদানের আগ মুহূর্তে ইউনিয়ন পরিষদ ও মসজিদের ইমাম সাহেবদের মাধ্যমে সতর্ক করে দেই যে কোনভাবেই উপজেলা সমাজসেবা থেকে কোন ফোন যাবে না। আপনারা কোন ফোনে বিভ্রান্ত হবেন না। কাউকে কোন ওটিপি নাম্বার বা অন্য কোন তথ্য দিবেন না।
তিনি আরোও বলেন, আমার সমাজ সেবায় যদি কেউ অন্যায়ের সাথে বা ঘুষ বাণিজ্যের সাথে জড়িত থাকে তা প্রমাণিত হলে উর্ধ্বতম কর্মকর্তাদের নির্দেশ অনুযায়ী আইনগত ব্যবস্থা নেব।