এ-সব পর্যটকদের ভ্রমণের পরিপূর্ণতা দিতো কিন্তু, সাম্প্রতিক সময়ে হাড় কেটে তৈরি হচ্ছে সুদীর্ঘ রাস্তা আর সেই রাস্তা ঘিরে তৈরি হচ্ছে লালা বমের উঁচু উঁচু ইমারত।

একসময়ের দেশের সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ মনে করা ও বর্তমানের তৃতীয় সর্বোচ্চ চূড়া হিসেবে স্বীকৃত কেওক্রাডং আজ ধ্বংসের দারপ্রান্তের কোনো নিবুনিবু প্রদীপ! বান্দরবানের রুমা উপজেলার বাংলাদেশ-মায়ানমার সীমানা মধ্যবর্তী অবস্থান প্রকৃতির প্রাণ খ্যাত এই পাহাড়ের। সাধারণত প্রকৃতির এই নিদর্শন সমূহ রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন হলেও কেওক্রাডং ও এর আশেপাশের প্রায় বিশ বিঘা জমির মালিক লালা বম।

তিনি ১৯৯৩ সালে তৎকালীন ডিসি অফিস থেকে শত বছরের জন্য  অত্র পাহাড় ও জমির লিজ নেন।কেওক্রাডং জুড়ে প্রাণ-প্রকৃতির মেলবন্ধন এতো বছর বেশ ভালো ভাবেই চলছিল। দেশীয় ও বিদেশি পর্যটকদের পছন্দের তালিকায় ছিলো কেওক্রাডং সামিট। বিশেষ করে শীতের মৌসুমে, মেঘের সাথে ভাব জমাতে পর্যটন প্রিয় হয়ে উঠতো কেওক্রাডং। মেঘের মধ্যে বসে আগুন জ্বালিয়ে রান্না করে কলা পাতার থালায় খেতে বসা, তাবু ঘেরে রাত্রি যাপন।

এ-সব পর্যটকদের ভ্রমণের পরিপূর্ণতা দিতো কিন্তু, সাম্প্রতিক সময়ে হাড় কেটে তৈরি হচ্ছে সুদীর্ঘ রাস্তা আর সেই রাস্তা ঘিরে তৈরি হচ্ছে লালা বমের উঁচু উঁচু ইমারত। পর্যটকদের সুবিধার জন্য এসব করা হলেও সে'টা প্রকৃতির মাঝে একদমই বেমানান। এতে প্রকৃতি তাঁর স্বরূপ হারায়। বন্যেরা বনে সুন্দর, শিশুরা মাতৃক্রোড়ে তেমনি, পাহাড়কে পাহাড়ের মতো থাকতে দিলেই এর সৌন্দর্য ফুটে উঠে। ইট-পাথরের নানা জঞ্জালে ঘেরা শহরের মানুষগুলো পাহাড়ে যায় একটু প্রশান্তির খোঁজে কিন্তু সেখানে গিয়ে আবার নতুন করে জঞ্জালের সাথে পরিচিত হতে হলে মানুষ আর পাহাড় মুখী হবেনা। ধ্বস নামবে দেশের পর্যটন শিল্পে। হারিয়ে যাবে ঐতিহ্য।