দীর্ঘ ২২ বছর পর কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলা বিএনপির সম্মেলন অনুষ্ঠিত হলেও ব্যাপক হট্টগোল ও বিশৃঙ্খলার কারণে অসম্পূর্ণ অবস্থায় শেষ হয়েছে। দ্বিতীয় অধিবেশন না হওয়ায় উপজেলা কমিটি ঘোষণাও স্থগিত রাখা হয়েছে।

হোসেনপুর উপজেলা বিএনপির সবশেষ সম্মেলন হয়েছিল ২০০৩ সালে। দীর্ঘ বিরতির অনুষ্ঠিত এ সম্মেলন বিরোধপূর্ণ পরিস্থিতির কারণে অসম্পূর্ণই থেকে গেল। বিএনপির স্থায়ী কমিটির প্রভাবশালী সদস্য মির্জা আব্বাস এবং চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সালাম হোসেনপুরের কৃতি সন্তান। হোসেনপুর বিএনপি'র (১৯ আগস্ট)  দুপুরে উপজেলা সদরের কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠে আহ্বায়ক কমিটির উদ্যোগে যে সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়ে গেল সেই সম্মেলনে মির্জা আব্বাস-আব্দুস সালাম উপস্থিত থাকলে কোন রকমের হট্টগোল পাল্টাপাল্টি গোলযোগ ছাড়াই নতুন নেতৃত্ব বেছে নিতেন। দ্বিতীয় অধিবেশনে নতুন কমিটির সভাপতি সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা স্থগিত এর কারণ প্রভাবশালী এই দুই নেতাকে সম্মেলনে উপস্থিত রাখতে না পারাটাকেই দায়ী করছেন তৃণমূল বিএনপি'র নেতাকর্মীরা।
হোসেনপুর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক জহিরুল ইসলাম মবিনের সভাপতিত্বে প্রথম অধিবেশনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ময়মনসিংহ বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা বিএনপির সভাপতি শরীফুল আলম। উদ্বোধন করেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম। প্রধান বক্তা ছিলেন ময়মনসিংহ বিভাগের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবু ওয়াহাব আকন্দ। বক্তব্য রাখেন কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক খালেদ সাইফুল্লাহ সোহেল। অধিবেশনের শুরু থেকেই দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি স্লোগান ও হট্টগোলে উত্তেজনা তৈরি হয়। নেতাদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলেও বিশৃঙ্খলার কারণে দ্বিতীয় অধিবেশন সম্পন্ন করা হয়নি। ফলে উপজেলা বিএনপির নতুন কমিটি ঘোষণাও পিছিয়ে যায়। জানা গেছে, হোসেনপুর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক জহিরুল ইসলাম মবিন গ্রুপ এবং যুগ্ন-আহ্বায়ক আবুল হাসিম সবুজ-মাহাবুব-মনিরুল হক রাজন-কাঞ্চন-বাক্কার গ্রুপ সম্মেলনে পাল্টাপাল্টি স্লোগান দিতে থাকে। এতে হট্টগোল ও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। কেন্দ্রীয় ও জেলার শীর্ষ নেতারাও শুরু থেকেই দুই পক্ষের গ্রুপিংয়ের বিষয়টি আঁচ করতে পেরেছিলেন। এজন্যই উপজেলা সদরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল বলে জানা গেছে। সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দিতে গিয়ে জেলা বিএনপির সভাপতি শরীফুল আলম বলেন, আমরা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলে কমিটি দেবো। ত্যাগীরা কেউ বাদ পড়বে না। এ সময়ও পাল্টাপাল্টি স্লোগান ও হট্টগোলে চলে। কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শরীফুল আলম প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকেও নতুন কমিটি উপহার দিতে না পারাটাকেই মির্জা আব্বাস-আব্দুস সালামের বিকল্প নেই বলে মনে করছেন হোসেনপুর উপজেলা বিএনপির কর্মী সমর্থক। মির্জা আব্বাস-আব্দুস সালামের বিচক্ষণ সিদ্ধান্তেই হোসেনপুর উপজেলা বিএনপি'র পরবর্তী কমিটির আত্মপ্রকাশ ঘটবে। সেই কমিটি হবে একটি সুশৃংখল কমিটি যেখানে দলের ত্যাগী নেতারা মূল্যায়িত হবেন। এমনটাই আশা করছেন মির্জা আব্বাস-আব্দুস সালাম ভক্ত হোসেনপুর উপজেলার ৯৯% বিএনপি'র নেতাকর্মীরা। জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম জানিয়েছেন, সুবিধাজনক সময়ে দ্বিতীয় অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে। ততদিন পর্যন্ত বর্তমান আহ্বায়ক কমিটিই দায়িত্ব পালন করবে।