নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলায় মাটি ব্যাবসা নিয়ে বিরোধের জের ধরে ১৩ মামলার আসামি যুবলীগ ক্যাডার জাকির হোসেনকে (৪৪) পিটিয়ে হত্যা করা হয়।
মঙ্গলবার (১৩ মে) সন্ধ্যায় নোয়াখালীর বাংলাবাজার পলোয়ানপোল এলাকার একটি খাল থেকে জাকির হোসেনের মৃতদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ সময় মৃতদেহ ফেলতে আসা দুইজনকে আটকের পর গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেছে স্থানীয়রা।
নিহত জাকির সোনাইমুড়ী উপজেলার ৮নং সোনাপুর ইউনিয়নের তিনতেড়ী এলাকার হাসানপুর গ্রামের দূর্গা পাটোয়ারী বাড়ির রফিক উল্লাহর ছেলে ও ইউনিয়ন যুবলীগের সক্রিয় কর্মি ছিলেন তিনি।
আটককৃতরা হলেন- সোনাইমুড়ি উপজেলার সোনাপুর ইউনিয়নের কালিকাপুর গ্রামের নুরুল আমিনের ছেলে আবুল বাশার বাবু (৩৬), সদর উপজেলার পশ্চিম মাইজপাড়া গ্রামের জয়নাল আবেদীনের ছেলে সিএনজি চালক আনোয়ার হোসেন (৩২)।
পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায় জাকির আওয়ামীলীগ শাসনামলে এলাকায় প্রভাব বিস্তার করতেন। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ১৩টি মামলা রয়েছে। গত ৫ আগস্ট আওয়ামীলীগ সরকার পতনের পর তিনি তাবলিগে চলে যান। ফিরে এসে তিনি এলাকায় মাটির ব্যবসা শুরু করেন। জাকির প্রতি গাড়ি মাটি বিক্রি করে ১২শত টাকা। একই এলাকার ল্যাংড়া নজরুল, তুহিন, সাদ্দামসহ ১০-১২ জন প্রতি গাড়ি মাটি বিক্রি করেন ১৬শত টাকা। এ নিয়ে গত কয়েকদিন আগে প্রতিপক্ষের সাথে তার বিরোধ তুমুল আকার ধারণ করে। এ ঘটনায় গত দুদিন আগে জাকিরের মাটি কাটার ভেকু মেশিন পুড়িয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। এরপর মঙ্গলবার দুপুরের দিকে মাটির দাম নিয়ে দ্বন্দ্বের জের ধরে তাকে তুলে নিয়ে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। পরবর্তীতে সেখান থেকে বাংলাবাজার ফলবান পোল এলাকায় খাল পাড়ে সিএনজি থেকে লাশ ফেলে পালানোর সময় স্থানীয়রা ধাওয়া দিয়ে ২জনকে আটক করে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করে।
নিহতের স্ত্রী ফাতিমা বেগম হিরা অভিযোগ করে বলেন প্রতিপক্ষের লোকজন তাকে ডেকে নেয়, এরপর মৃত্যুর খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে আমার স্বামীর লাশ সনাক্ত করি।
সোনাইমুড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ মোরশেদ আলম বলেন, নজরুলের সঙ্গে জাকিরের ঝামেলার কথা আমরাও শুনেছি। জাকির একজন চিহিৃত সন্ত্রাসী ছিলো। তার বিরুদ্ধে সোনাইমুড়ী থানায় হত্যা, ডাকাতি, নারী শিশু নির্যাতনসহ ১১টি মামলা রয়েছে। এছাড়া বেগমগঞ্জ থানায় ডাকাতি ছিনতাইসহ কয়েকটি মামলা রয়েছে।
বেগমগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোঃ হাবিবুর রহমান বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।