প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ডিসেম্বরের শেষের দিকে মার্কিন ডলারের বিপরীতে রিয়ালের দ্রুত অবমূল্যায়নের পর ইরানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সেই সময়কার গভর্নর আলী সালেহাবাদিকে বরখাস্ত করা হয়েছিল।তবে আলী সালেহাবাদির স্থলাভিষিক্ত হওয়া মোহাম্মদ রেজা ফারজিন মূল্য স্থিতিশীল রাখার প্রয়াসে প্রয়োজনীয় পণ্য আমদানির জন্য ডলারের বিপরীতে মুদ্রার হার কৃত্রিমভাবে ২ লাখ ৮৫ হাজার রিয়াল রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। ফারজিন শনিবার বলেন, ‘আজকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক মুদ্রা ও স্বর্ণের রিজার্ভের ক্ষেত্রে কোনও সীমাবদ্ধতার সম্মুখীন হচ্ছে না এবং মুদ্রার মূল্য ওঠানামার পেছনে মিডিয়া হাইপ এবং সমাজে মনস্তাত্ত্বিক কার্যক্রমই হলো প্রধান কারণ।
এছাড়া গত শনিবার রিয়ালের আরেক দফা পতনের পর দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক দাবি করে, মার্কিন নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও ইরাকে ইরানের ৩২৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার পাওয়া গেছে এবং বাজারে প্রবেশ করানো হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে রোববার ইরানের কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানায়, তেহরানের কাছে মুদ্রার কোনও সংকট নেই বোঝাতে একজন ব্যক্তির কাছে বিক্রি করা যেতে পারে এমন মুদ্রার সর্বোচ্চ পরিমাণ শিগগিরই বাড়িয়ে দেওয়া হবে। আর সেটি হলে ইরানের কোনও ব্যক্তির কাছে বার্ষিক ২ হাজার ইউরো (২১৭৬ মার্কিন ডলার) থেকে ৫ হাজার ইউরো (৫৪৩৯ মার্কিন ডলার) বিক্রি করা যেতে পারে।
সংবাদমাধ্যম বলছে, গত বছরের ১৬ সেপ্টেম্বর হিজাব পরাকে কেন্দ্র করে ইরানে পুলিশের হেফাজতে ২২ বছর বয়সী কুর্দি তরুণী মাহসা আমিনির মৃত্যুর পর দেশটিতে সহিংস বিক্ষোভ শুরু হয়। এরপর থেকে এখন পর্যন্ত ইরানি রিয়ালের বেশ বড় দরপতন হয়েছে। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, ১৯৭৯ সালে ইরানে ইসলামি বিপ্লবের পর এটিই সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ। আর তাই বিদ্যমান পরিস্থিতিতে মুদ্রার অবমূল্যায়ন রুখতে ইরানের পুলিশ বাহিনী সাম্প্রতিক মাসগুলোতে কয়েক ডজন মুদ্রা কারবারিকে গ্রেপ্তারের ঘোষণা দিয়েছে।মূলত ইরানের বিরুদ্ধে বিদ্যমান অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞাকে রিয়ালের রেকর্ড দরপতনের অন্যতম কারণ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। বিশেষ করে দেশটির বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর ওপর নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি তেহরানের বিরুদ্ধে ইইউয়ের নানা বিধিনিষেধকে রিয়ালের দরপতনের অন্যতম কারণ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।