কথা বলার মধ্য দিয়ে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল হাস্যরসে পরিণত হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের প্রচার সম্পাদক সাদিক কায়েম। তিনি অভিযোগ করে বলেন, কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিব-নাছির ভাই পাঁচ মিনিট কথা বললে সাড়ে ৪ মিনিট‌ই শিবিরের বিরুদ্ধে বিষোদগার ছড়ায়। আমার মনে হয় শিবির ওয়ার্ড বাদ দিলে তারা ১ মিনিট কথা বলতে পারবে কিনা সন্দেহ।

বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে এমনটাই মন্তব্য করেন তিনি।

তিনি বলেন, জুলাই পরবর্তী আমাদের আকাঙ্ক্ষা ছিল প্রতিটি ক্যাম্পাসে ছাত্র সংসদ নির্বাচন হয়ে যাবে। সে আলোকে জুলাই পরবর্তী আমরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে প্রশাসনের কাছে যতগুলো দাবি উত্থাপন করেছি তার প্রথম দফা দাবি ছিল প্রতিটি ক্যাম্পাসে ছাত্র সংসদ নির্বাচন দেওয়া। আমরা বলেছি জুলাই বিপ্লবের পর প্রতিটি ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতির আমূল পরিবর্তন হবে এবং ছাত্র রাজনীতি হবে ছাত্র সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে। শিক্ষার্থী প্রতিনিধিরাই প্রতিটি ক্যাম্পাসে নেতৃত্ব দেবে। সেই জায়গা থেকে এক বছর পর গতকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ছাত্র সংসদের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। দেরিতে হলেও যে তফসিল ঘোষণা করেছে সেটাকে আমরা স্বাগত জানাই। এর পাশাপাশি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের তফসিল ঘোষণা করেছে। আমাদের আশা থাকবে যত ধরনের হুমকি‌ই দেওয়া হোক না কেন; তফসিল অনুযায়ী যেন নির্বাচন সম্পন্ন হয়। শিক্ষার্থীরা যাকেই ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবে আমরা তাকেই স্বাগত জানাব। 

সাদিক কায়েম বলেন, আমরা আশা করছি খুব‌ই প্রাণবন্ত একটা নির্বাচন হবে। এর মাধ্যমেই আগামী বাংলাদেশের নির্বাচিত প্রতিনিধি আসবে। প্রতিটি ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের দাবি দাওয়া-আকাঙ্ক্ষার কথা বলবে। জুলাইয়ের শহীদদের যে চেতনা, তাদের স্প্রিটিরে কথাগুলো বলবে। আগামীর বাংলাদেশ বিনির্মাণে তারা নেতৃত্বে দেবে। আমরা সেই প্রত্যাশা রাখছি। এক‌ই সাথে আমাদের আরেকটি দাবি দাওয়া হচ্ছে মাত্র তিনটি ক্যাম্পাসের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। বাংলাদেশ সকল বিশ্ববিদ্যালয়, সকল কলেজ, সকল প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়সহ সকল ক্যাম্পাসে দ্রুত তফসিল ঘোষণা করবে। আমাদের বন্ধুপ্রতিম ছাত্রসংসদ যারা আছে, তাদের অনুরোধ করবো যখন কোন কথা বলবে অবশ্যই এটার রেফারেন্স সহকারে কথা বলা। আমাদের কাছে মনে হচ্ছে বন্ধুপ্রতিম ছাত্র সংগঠন বিশেষ করে ছাত্রদলের যদি কথা বলি তারা এমন এমন কথা বলে যে কথা বলার মাধ্যমে ছাত্রদলের মতো একটা বড় সংগঠন হাস্যরসে পরিণত হচ্ছে। আমি অনুরোধ করবো এটার মাধ্যমে ছাত্রদলের যে ঐতিহ্য আছে, তারা তো মজলুম ছিল, তাদের যে ঐতিহ্য, তাদের যে ইমেজ সেটা নষ্ট হচ্ছে। আমরা অনুরোধ করবো জুলাই পরবর্তী যে ছাত্র রাজনীতি এখানে দোষারোপের রাজনীতি শিক্ষার্থীরা পছন্দ করছে না। 

তিনি আরও বলেন, তারা যদি বাংলাদেশের প্রশ্নে একত্রিত হয়ে জুলাইয়ের চেতনাকে ধারণ করে শিক্ষার্থীদের যে আকাঙ্ক্ষা, শিক্ষার্থীদের যে চাওয়া-পাওয়ার সেই আলোকে যদি কথা বলে তাহলে শিক্ষার্থীরা তাদের স্বতঃস্ফূর্তভাবে তাদের সাপোর্ট দিবে। এটা করলে সবচেয়ে ভালো হয়। এর বাইরে যদি এরকম অপ্রাসঙ্গিক কথাবার্তা বলে, দোষারোপের কথাবার্তা বলে তাহলে এর মাধ্যমে ছাত্রদল ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এবং এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের ছাত্রদলের প্রতি বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি হচ্ছে। যেহেতু তারা আমাদের বন্ধুপ্রতিম, অবশ্যই তাদের পরামর্শ দিব সেই আগের ধারায় যে রাজনীতি, ছাত্রলীগের কায়দায় যে রাজনীতি, ট্যাগিংয়ের রাজনীতি, প্রোপাগান্ডার রাজনীতি, এখান থেকে বের হয়ে আসলে সবচেয়ে ভালো হয়।