২৫শে মার্চের রাতেই মানিকগঞ্জের ট্রেজারীতে রক্ষিত অস্ত্র ও গোলাবারুদ লুট করে ছাত্র ও যুবকদের মাঝে বিতরণ করা হয়। পরের দিন থেকে ক্যাপ্টেন হালিম চৌধুরীর আলুর গুদামের পেছনে শুরু হয় অস্ত্র প্রশিক্ষণ। এপ্রিল মাসের ২য় সপ্তাহে হেলিকপ্টারে করে বিপুল সংখ্যক পাক সেনা মানিকগঞ্জ শহরে ঢুকে পড়ে। প্রথমে প্রতিহতের কথা চিন্তা করলেও কৌশলগত কারণে পিছিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নেয় বিপ্লবী পরিষদ। মানিকগঞ্জ ছেড়ে কর্মীসহ বিপ্লবী পরিষদের নেতৃবৃন্দ অবস্থান নেয় হরিরামপুর উপজেলার দূর্গম অঞ্চলে। সেখানে প্রশিক্ষণ নিয়ে মানিকগঞ্জের মুক্তিযোদ্ধারা সংগঠিত হয়ে পাল্টা হামলা করার শক্তি অর্জন করে। এরপর থেকে মানিকগঞ্জের বিভিন্ন অঞ্চলে মুক্তি বাহিনীর সাথে পাক বাহিনীর বেশ কয়েকটি যুদ্ধ হয়। এরমধ্যে গোলাইডাঙ্গা, সুতালড়ি, আজিমনগর, বায়রা, নিরালী সাটুরিয়া, নারচি, বালিরটেক, গাজিন্দা, মানোরাসহ বিভিন্ন স্থানে যুদ্ধ হয়। তবে গোলাইডাঙ্গার যুদ্ধে ৮১ জন পাক হানাদার ঘটনাস্থলে শহীদ হন। পরের দিন পাক বাহিনী হেলিকপ্টারে আরও সৈন্য বৃদ্ধি করে গোলাইডাঙ্গা গ্রামে হামলা চালিয়ে কয়েকশ ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেয়। গুলি করে হত্যা করে ৮জন নিরীহ গ্রামবাসীকে।
ডিসেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকেই মুক্তি বাহিনীর আক্রমণে পাক সেনারা মানিকগঞ্জের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে পিছিয়ে যেতে শুরু করে এবং ১৩ ডিসেম্বরের মধ্যে মুক্তিযোদ্ধাদের পাল্টা হামলায় পাক বাহিনী মানিকগঞ্জ ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। প্রতিবছরের ন্যায় এবছরও এই দিনটি পালন করা হয়েছে মানিকগঞ্জ জেলার হানাদার মুক্ত দিবস হিসেবে। রাত ১২.০১ মিনিটে মানিকগঞ্জ জেলার জেলা প্রশাসক জনাব মুহাম্মদ আব্দুল লতিফ ও পুলিশ সুপার, জনাব মোহাম্মাদ গোলাম আজাদ খান, পিপিএম-বার মহোদয় মানিকগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে (বিজয় মেলা মাঠে) মশাল জ্বালিয়ে দিনটি পালন করেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন মানিকগঞ্জ জেলা পরিষদের চেয়াম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগ এর সভাপতি জনাব অ্যাডভোকেট গোলাম মহিউদ্দিনসহ অন্যান্য রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এবং মানিকগঞ্জ জেলা পুলিশের অন্যান্য উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ।