উল্লেখ্য ২০০৭ সালের ৬ মার্চ আমান ও তার স্ত্রী সাবেরার বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন এবং সম্পদের তথ্য গোপন করার অভিযোগ এনে রাজধানীর কাফরুল থানায় এ মামলা দায়ের করে দুদক। অভিযোগে উল্লেখ করা হয় ১৯৯২ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত আমান ও তার স্ত্রী ৯ কোটি ৯৪ লাখ ৬৩ হাজার টাকার সম্পত্তি অবৈধভাবে অর্জন করেন।

বিএনপির সিনিয়র নেতা ও সাবেক এমপি আমানউল্লাহ আমান ও তার স্ত্রী সাবেরা আমানের বিরুদ্ধে দুদকের করা একটি মামলার রায় বহাল রেখেছে হাইকোর্ট। ২০০৭ সালের জরুরী অবস্থার সময় দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা জ্ঞাত বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও সম্পদের তথ্য গোপন করার মামলায় আমান দম্পতির আপিল খারিজ করে আমানউল্লাহ আমানের ১৩ বছর ও তার স্ত্রী সাবেরা আমানের ৩ বছরের কারাদন্ড বহাল রেখে বিচারপতি মো: নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ মঙ্গলবার এই রায় দেয়। রায়ের অনুলিপি হাতে পাওয়ার দুই সপ্তাহের মধ্যে তাদেরকে নিম্ন আদালতে আত্মসমার্পন করতে বলা হয়েছে এই রায়ে। হাইকোর্টের একই বেঞ্চ ২০০৭ সালে দুদকের করা আরেকটি মামলায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুর ৯ বছরের কারাদন্ড বহাল রেখেছে।

উল্লেখ্য ২০০৭ সালের ৬ মার্চ আমান ও তার স্ত্রী সাবেরার বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন এবং সম্পদের তথ্য গোপন করার অভিযোগ এনে রাজধানীর কাফরুল থানায় এ মামলা দায়ের করে দুদক। অভিযোগে উল্লেখ করা হয় ১৯৯২ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত আমান ও তার স্ত্রী ৯ কোটি ৯৪ লাখ ৬৩ হাজার টাকার সম্পত্তি অবৈধভাবে অর্জন করেন। তত্বাবধায়ক সরকারের আমলে গঠিত বিশেষ জজ আদালত আমানকে ১৩ বছর ও তার স্ত্রী সাবেরাকে ৩ বছরের কারাদন্ড দেয়। ওই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করেন আমান দম্পতি। ২০১০ সালে তাদের আপিল মঞ্জুর করে খালাস দেয় হাইকোর্ট। দুদক হাই কোর্টের সেই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করলে ২০১৪ সালের ২৬ মে হাই কোর্টের উক্ত রায়টি বাতিল করে পুনরায় আপিল শুনানির নির্দেশ দেয় আপিল বিভাগ।

তারই ধারাবাহিকতায় গত ১৪ মে পুন:শুনানি শেষে ৩০ মে রায়ের দিন ধার্য্য করে হাই কোর্ট। এদিকে ২০০৭ সালের ২১ মার্চ বিএনপি সরকারের সাবেক প্রতিমন্ত্রী ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু'র বিরুদ্ধে রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানায় আরেকটি মামলা করে দুদক। অভিযোগ আনা হয় ৪ কোটি ৯৬ লাখ ১১ হাজার টাকার সম্পত্তি অবৈধভাবে অর্জন ও সম্পদের তথ্য গোপন করার। একই বছরের নভেম্বরে বিশেষ জজ আদালত ওই মামলায় টুকুকে ৯ বছরের কারাদন্ড দেয়। ওই রায়ের বিরুদ্ধে টুকু আপিল করলে ২০১১ সালের ১৫ জুন তাকে খালাস করে হাই কোর্ট। তবে হাই কোর্টের সেই রায়ের বিরুদ্ধে দুদক আপিল করলে ২০১৪ সালের ২১ জানুয়ারী রায়টি বাতিল করে পুন:শুনানীর নির্দেশ দেয় আপিল বিভাগ। সেই অনুযায়ী গত ১৭ মে পুন:শুনানি শেষে ৩০ মে রায়ের দিন ধার্য্য করে হাই কোর্ট।

সেই অনুযায়ী আজ ওই দুই মামলার রায় ঘোষনা করা হল। রায় ঘোষনার সময় আদালতে দুদকের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন আইনজীবি খুরশিদ আলম খান, রাষ্ট্রপক্ষের অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিনউদ্দিন মানিক।আমান দম্পতির পক্ষে উপস্থিত ছিলেন আইনজীবি মাহবুব উদ্দিন খোকন আর টুকুর পক্ষে ছিলেন আইনজীবি আজমানুল হোসেন কিউসি ও সাইফুল্লা মামুন। রায় ঘোষনার পর থেকে বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা এই রায়ের বিরুদ্ধে নিন্দা জানিয়েছেন। এক প্রতিক্রিয়ায় দলটির মহাসচিব মির্জা ফকরুল ইসলাম জানিয়েছেন "এটি জনগনের গনতন্ত্র ফিরিয়ে আনার আন্দোলনে বাধা সৃষ্টি করতে আন্দোলনের সাথে সম্পৃক্ত নেতাকর্মীদের হয়রানির উদ্দেশ্যে সরকারের দমন-পীরনের ধারাবাহিকতা। কিন্তু জনগন এসব মেনে না নিয়ে আন্দোলনের মাধ্যমে গনতন্ত্র ও সুষ্ঠ বিচারব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করবে"। আমান দম্পত্তি ও টুকুর আইনজীবিরা গনমাধ্যমে রায়ের বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়ায় লড়াই চালিয়ে যাওয়ার ঘোষনা দিলেও বিস্তারিত কিছু জানাননি।