রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরে বুড়িগঙার আদি চ্যানেল উদ্ধারে গত কয়েক বছরে বেশ কয়েকটি প্রকল্প হাতে নেয় সরকার। তারই ধারাবাহিকতায় গত বছর গাবতলি-সদরঘাট রাস্তার পাশের বুড়িগঙার আদি চ্যানেলটি উদ্ধারে কাজ শুরু করে ঢাকা দক্ষিন সিটি করপোরেশন। অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদে অভিযান চলে প্রায় তিন মাস। এরপরই গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে শুরু হয় খালটি পরিষ্কারের কাজ। সিটি কর্পোরেশনের আধুনিক যন্ত্রপাতি দিয়েও প্রচুর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হয় মৃত এবং আবর্জনার স্তুপে পরিনত হওয়া এই খালটিকে সচল করতে। দীর্ঘ সময় ধরে কাজ শেষে বুড়িগঙার এই শাখাটিতে প্রায় ২৫ বছর পর আবার বুড়িগঙার পানি প্রবেশ করে। প্রাথমিক কাজ শেষ ঘোষনা করে পরবর্তীতে এই চ্যানেলটি ঘিরে নানা উন্নয়নমূলক কাজের আশ্বাস দেন ঢাকা দক্ষিনের মেয়র। কিন্তু এর মাঝে আবার ময়লা-আবর্জনায় ভরে যাচ্ছে উদ্ধারকৃত এই খালটি।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় কামরাঙ্গীরচরের অন্যতম প্রবেশ মুখ কোম্পানীঘাট ব্রিজ সংলগ্ন যায়গাটির বেহাল অবস্থা। চারিদিকে ময়লার স্তুপ ও দূর্গন্ধে সয়লাব চারপাশ। এই পথ দিয়ে চলাচল করেন কামরাঙ্গীরচর ও হাজারীবাগের কয়েক লাখ মানুষ। ব্রিজের পাশের দোকানীদের সাথে কথা বলে জানা যায় সিটি কর্পোরেশনের কাজের শেষে কয়েকদিন কিছুটা পরিচ্ছন্ন থাকলেও তার কিছুদিন পর থেকে আবার ময়লা ফেলতে থাকে বিভিন্ন মানুষজন। মো: হাকিম নামে এক দোকানদার বলেন " মাইনষে হাতে কইরা বাসার ময়লা নিয়া আসে, ব্রিজ পাড় হওয়ার টাইমে ফেইক্কা ফালায় দেয় আর রাইতের বেলায় ভ্যান দিয়া নানা খাবারের দোকানের ময়লা, কসাইখানার ময়লা, ফ্যাক্টরির ময়লা এমনকি বাসা-বাড়ি ভাংগার ময়লা (রাবিশ) ফালাইয়া যায়। কি করব কন? দেখনের কেউ নাই যার যেমনে মন চায় ওমনেই করে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন জনপ্রতিনিধি মর্নিং পোষ্টকে বলেন- " আসলে এটা সিটি কর্পোরেশনের গাফলতির ফল, উদ্ধার শেষে তাদের উচিত ছিলো চ্যানেলটি সংরক্ষন করা এবং জনসচেতনতা বাড়ানো।
এর পরও কেউ আমলে না নিলে কঠোর আইনি পদক্ষেপ নেয়া উচিত। তিনি আরো বলেন এভাবে চলাটা তো উচিত না সরকারি টাকায় পরিষ্কার হবে আবার সেইটা ময়লা করবে, এভাবে এই সমস্যার কোনো সমাধান হবেনা। আমাদের প্রত্যেককে সচেতন হতে হবে। আর ময়লা ফেলা বন্ধে সিটি কর্পোরেশনকেই উদ্যেগি হতে হবে। এই পথে চলাচলকারি নানা শ্রেনী পেশার মানুষেরাও এই থেকে পরিত্রান চায়। এই পথে চলাচলকারী স্কুলছাত্রী আনিকা বলে এই ব্রিজ পাড় হওয়ার সময় দূর্গন্ধে নাকাল হতে হয় পাশাপাশি পরিবেশ দূষন ও স্বাস্থ্যঝূকি তো আছেই। সব মিলিয়ে এই জলাশয়টির পরিপূর্ন উদ্ধার চান এলাকাবাসী। পাশাপাশি ময়লা ফেলে ফের দখলের পায়তারা চলছে নাকি সেই বিষয়েও প্রশাসনের নজর চান কেউ কেউ। সবার আশা বুড়িগঙার এই আদি চ্যানেলটি সম্পূর্নরুপে ফিরে আসলে কামরাঙ্গীরচর সহ ঢাকার জলাশয় সমৃদ্ধ হবে। এছাড়াও অগ্নি দূর্ঘটনা রোধে পানির উৎস হিসেবেও কার্যকর ভূমিকা রাখবে জলাশয়টি।