পুলিশের কনস্টেবল পদে ৬ লাখ টাকার বিনিময়ে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে প্রতারণামূলকভাবে অর্থ আত্মসাৎ করার

পুলিশের কনস্টেবল পদে ৬ লাখ টাকার বিনিময়ে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে প্রতারণামূলকভাবে অর্থ আত্মসাৎ করার অপরাধে প্রতারক চক্রের ছয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে মাগুরা সদর থানা পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন ১। মেহেদী হাসান শিকদার (২৭), পিতা- আইনুদ্দিন ছুরাব শিকদার, সাং- দশহাজার, থানা-কোতয়ালী, জেলা- ফরিদপুর, ২। মোঃ বাবলু মল্লিক (৩৮), পিতা- মোঃ আবু বক্কর মল্লিক, সাং-বরই, থানা ও জেলা-মাগুরা, ৩। মোঃ কবির হোসেন (৩৯), পিতা- মৃত মখছেদ আলী, সাং-চরমধুয়া, থানা-নকলা, ৪। মোঃ মিরাজুল ইসলাম (৫৬), (অবঃ প্রাপ্ত সেনা সদস্য, কর্পোরাল সেনা নং-২৪০৫৮১৮), পিতা- মৃত আঃ মান্নান মিয়া, সাং-খায়ের হাট, থানা- কাশিয়ানী, জেলা-গোপালগঞ্জ, ৫। মোঃ রাসেল শেখ (২৮), পিতা-মোঃ কুদ্দুস শেখ, সাং-নিজনান্দুয়ালী, থানা ও জেলা- মাগুরা, ৬। মোঃ হাবিবুর রহমান (৪৫), পিতা- আঃ মজিদ বিশ্বাস, সাং-বিনোদপুর, থানা- মহম্মদপুর, জেলা- মাগুরা। আটকের সময় তাদের কাছ থেকে আত্মসাৎকৃত ৬৭ হাজার টাকা, একটি কালো রংয়ের টয়োটা ল্যান্ড ক্রুজার প্রাডো গাড়ী, গ্রেপ্তারকৃত আসামী অবসরপ্রাপ্ত কর্পোরাল মোঃ মিরাজুল ইসলাম (৫৬) এর নিজ নামে লাইসেন্সকৃত একটি শর্টগান ও ৪ রাউন্ড কার্তুজ এবং ৭টি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়। মামলার বাদী মোছাঃ পলি বেগম, স্বামী-মৃত রইচ মোল্যা, সাং-বরই, থানা-মাগুরা সদর, জেলা- মাগুরা জানান ০২নং আসামী মোঃ বাবলু মল্লিক তার প্রতিবেশী হওয়ায় অনুমান ১০/১২ দিন পূর্বে বাদীর নিকট তার ছেলে রবিন (১৯) কে পুলিশে চাকুরি দেওয়ার কথা বলে। কিন্তু তিনি মোঃ বাবলু মল্লিক এর কথা বিশ্বাস না করলে ০২নং আসামী বলে ০১নং আসামী মেহেদী হাসান শিকদার তার আপন ভগ্নিপতি এবং সে বর্তমান সরকারের অতি গুরুত্বপূর্ণ একজন ব্যক্তির এপিএস হিসাবে দায়িত্ব পালন করছে। পরবর্তীতে ০১নং আসামী মেহেদী হাসান শিকদার বাদীর নিকট মোবাইল ফোনে নিজেকে বর্তমান সরকারের অতি গুরুত্বপূর্ণ একজন ব্যক্তির এপিএস বলে পরিচয় দেয় এবং তিনি বাদীর ছেলেকে ০৬ লক্ষ টাকার বিনিময়ে পুলিশে চাকরি দিয়ে দিবেন বলে তাকে আশ্বস্ত করে। গত ৩০/১০/২০২৪ খ্রিঃ পলি বেগম ০২ নং আসামী মোঃ বাবলু মল্লিক এর নিকট ৩ লক্ষ টাকা প্রদান করেন এবং চাকুরির দেওয়ার পর বাকী ৩ লক্ষ টাকা আসামীদের দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। পরবর্তীতে গত ০৩/১১/২০২৪ খ্রিঃ রাতে ০ ২নং আসামী মোঃ বাবলু মল্লিক এর বাড়ীতে এজাহারনামীয় অন্যান্য সকল আসামীরা এসে বাদীর সাথে দেখা করে। এসময় ০১নং আসামী নিজেকে বর্তমান সরকারের অতি গুরুত্বপূর্ণ একজন ব্যক্তির এপিএস পরিচয় দেয় এবং ০৩নং আসামী মোঃ কবির হোসেন কে তার ড্রাইভার, ০৪নং আসামী মোঃ মিরাজুল ইসলাম কে সেনা বাহিনীর অফিসার হিসাবে পরিচয় করিয়ে দেয়। গত ০৪/১১/২০২৪ খ্রিঃ সকালে বাদীর ছেলে রবিন (১৯), মাগুরা পুলিশ লাইনে কন্সটেবল নিয়োগ পরীক্ষা দিতে গেলে আসামীরা একটি কালো রংয়ের টয়োটা ল্যান্ড ক্রুজার প্রাডো গাড়ীতে এসে বাদীর সাথে পুলিশ লাইন এর সামনে রাস্তার উপর দেখা করেন। পরবর্তীতে আসামীদের কথাবার্তা ও আচরণ পলি বেগমের কাছে সন্দেহজনক মনে হলে তিনি জানতে পারেন আসামীরা জনৈক হুজাইফা, পিতা-শরিফুল, সাং-চাপাতলা, থানা-মহম্মদপুর, জেলা-মাগুরার নিকট থেকেও পুলিশের চাকুরি দেওয়ার কথা বলে নগদ ৪০,০০০/- (চল্লিশ হাজার) টাকা নিয়েছে।মোছাঃ পলি বেগম আজ থানায় এসে আসামীদের বিরুদ্ধে এজাহার দায়ের করলে মাগুরা জেলার সুযোগ্য পুলিশ সুপার জনাব মিনা মাহমুদা, বিপিএম মহোদয় দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রতারকদের গ্রেফতারের নির্দেশ দিলে মাগুরা সদর থানা পুলিশ আসামীদেরকে মাগুরা পুলিশ লাইনসের সামনে থেকে আজ গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। প্রাথমিক তদন্তে জানা যায় আসামীরা একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র এবং তারা দীর্ঘদিন ধরে চাকরি দেওয়ার কথা বলে বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকা হতে মানুষের কাছ থেকে প্রতারণামূলকভাবে মোটা অংকের অর্থ আত্মসাৎ করে আসছে।