আজ (১৫ অক্টোবর) বুধবার সকালে মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কের আনারপুর সংলগ্ন জেএমআই ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক নামের কারখানার শ্রমিকেরা এ-ই আন্দোলন কর্মসূচি পালন করে। শ্রমিক আন্দোলন ও ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ভাটেরচর নতুন রাস্তা এলাকায় মহাসড়ক বন্ধ করে ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণের কাজ করার কারণে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।ভবেরচর হাইওয়ে থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বুধবার ভোর ৫ টা থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ভবেরচর নতুন রাস্তা সংলগ্ন এলাকায় দুই পাশে রাস্তা বন্ধ করে ফুটওভার ব্রিজ এর স্লিপ বসানোর কারনে এবং শ্রমিকদের আন্দোলনের সূত্রে ধরে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েন দূরপাল্লা যাত্রীসহ স্থানীয়রা। সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ভোর পাঁচটা থেকে হাইওয়ে পুলিশ ও থানা পুলিশের সহযোগিতায় ফুটওভার ব্রিজের স্লিপ বসানোর চলমান। অপরদিকে জেএমআই ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের শ্রমিকেরা সকাল ৭ ঘটিকায় কাজে যোগ না দিয়ে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান ফটকের সামনে জড়ো হয়ে মহাসড়ক অবরুদ্ধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। এ সময় কোম্পানির পক্ষ থেকে প্রশাসনিক কর্মকর্তারা আন্দোলনকারীদের শান্ত করার চেষ্টা করলে তাদের ধাওয়া দেন শ্রমিকেরা। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে শ্রমিকদের শান্ত করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়।
আন্দোলনকারী শ্রমিকদের মধ্যে হাবিব মিয়া বলেন, জেএমআই ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক কর্তৃপক্ষ আমাদের সঙ্গে যে আচরণ করে তা অমানবিক। সরকারি কোনো নিয়মনীতির তোয়াক্কা করেন না তারা। জোর করে শ্রমিকদের ওভারটাইম করতে বাধ্য করা। অসুস্থ হলে হাসপাতালে যেতে না দেওয়া। বিভিন্ন কারণে বাধ্য হয়ে এ-ই ২১ দফা দাবি নিয়ে আমরা মাঠে নেমেছি।আরেক আন্দোলনকারী আল আমিন বলেন, আমাদের কাজ নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়। বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে নির্দিষ্ট পরিমাণ কাজ না করতে পারলে বেতন কেটে দেওয়া হয়। সরকারি ছুটি, এমনকি ঈদের সময়ও আমরা ছুটি পাই না। এ রকম অমানবিক নিয়ম অন্য কোনো কোম্পানিতে আছে কি না, আমাদের জানা নেই। দীর্ঘদিনের সঞ্চিত ক্ষোভে আজ আমরা বাধ্য হয়ে রাস্তায় নেমেছি।আন্দোলনকারী সুমাইয়া আক্তার বলেন, জরুরি প্রয়োজনে অফিস চলাকালীন সময়ে আমরা বাসায় এক মিনিটও কথা বলতে পারি না। পদোন্নতি, বেতন বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন দিক দিয়ে শ্রমিকেরা বৈষম্যের শিকার। সবকিছু মিলিয়ে আজকের এই আন্দোলন।মহাসড়কে শ্রমিকদের বিক্ষোভের খবর পেয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিপুলসংখ্যক সদস্য উপস্থিত হন। বিষয়টি সম্পর্কে প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপক মাসুম মিয়ার সঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের পক্ষ থেকে বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা শ্রমিকপক্ষে সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে মারধরের শিকার হয়েছে। আমরা পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করছি।গজারিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, আন্দোলনের খবর পাওয়া মাত্রই ঘটনাস্থলে ছুটে আসি। শ্রমিক ও মালিক উভয় পক্ষের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করছি। শ্রমিকদের মহাসড়ক থেকে সরে যাওয়ার দাবি জানিয়ে আমি তাদের আশ্বস্ত করেছি।বিষয়টা সম্পর্কে গজারিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার কোহিনুর আক্তার বলেন, সকাল সাড়ে নয়টায় ঘটনাস্থলে যাই,সেখানে গিয়ে শ্রমিকদের দাবি দেওয়ার কথা শুনি এবং তাদের তাদের আশ্বস্ত করে মহাসড়ক থেকে সরে যাওয়ার অনুরোধ করেন। তাঁদের ন্যায্য দাবিগুলো পূরণ করা হবে বলেও আশ্বস্ত করেন মালিকপক্ষ ।