প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব মো: শফিকুল আলম বলেছেন, জুলাই যোদ্ধাদের ত্যাগের কারণেই একনায়কতন্ত্রের পতন হয়েছে এবং জাতিসংঘ জুলাই হত্যাকাণ্ড নিয়ে সঠিক তদন্ত করেছে। জুলাই হত্যাকাণ্ডের সব আসামির বিচার করা হবে। ন্যায় প্রতিষ্ঠার জন্য বিচার কিছুটা দেরিতে হচ্ছে, তবে সঠিক সময়ে তা সম্পন্ন হবে।


রবিবার (১০ আগস্ট) দুপুরে সাভারের খাগান এলাকায় মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে ঐতিহাসিক জুলাই বিপ্লব ২০২৪-এর বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত পক্ষকালব্যাপী বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের সমাপনীতে যোগ দিয়ে তিনি এ কথা বলেন।

প্রেস সচিব বলেন, সরকারি কর্মচারী হয়েও দেশের মানুষের অধিকারকে খর্ব করে যারা ফ্যাসিবাদী হাতকে শক্তিশালী করেছেন, অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ বিষয়গুলো সামনে আরও দৃশ্যমান হবে। তবে সরকার কারও বিরুদ্ধে কোনো অন্যায় করবে না। কেবলমাত্র যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

শফিকুল আলম বলেন, আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় জাতীয় সংসদ নির্বাচন দেশের ইতিহাসের সবচেয়ে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য হবে। সবাই নিজের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারবেন। আমরা একটি নতুন বাংলাদেশ গড়তে চাই। 

ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তায় পুলিশের জন্য ৪০ হাজার বডি ক্যামেরা কেনার কথা জানিয়ে প্রেস সচিব বলেন, আমরা আশা করব নির্বাচন হবে খুবই শান্তিপূর্ণ। এখানে থাকা ১১টি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ১৮ জুলাই থেকে একটানা ৫ আগস্ট পর্যন্ত পথে ছিলেন। হাসিনার কুখ্যাত নিরাপত্তা বাহিনী তাদের অনেককে হত্যা করেছে। সেই শহীদদের প্রতি আমাদের ওয়াদা, দেশের অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, আমরা শ্রদ্ধা ও সালাম জানাই শহীদদের প্রতি। আমাদের হৃদয়ের অন্তস্থল থেকে তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। শহীদ শাকিল হোসেন পারভেজ ও শহীদ আহনাফ আবির আশরাফুল্লাহর আত্মার শান্তি কামনা করছি। তারা আমাদের যে পথ দেখিয়েছেন সেই পথ থেকে যাতে বিচ্যুত না হই। আমরা যেন জাতিকে একটি সুন্দর নির্বাচন উপহার দিই এবং জাতিকে একটি শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক উত্তরণ উপহার দিই, এটাই ছিল শহীদের প্রত্যাশা।

শহীদদের স্মরণে এদিন জুলাই বিপ্লবে শহীদ মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী শহীদ শাকিল হোসেন পারভেজের নামে চত্বর উদ্বোধন এবং ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ছাত্র শহীদ আহনাফ আবির আশরাফুল্লাহর নামে লাইব্রেরির উদ্বোধন, বৃক্ষরোপণ, আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং বিভিন্ন প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ করা হয়। 

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান ও সাবেক সচিব মোহাম্মদ ফজলুর রহমান। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আব্দুর রবের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্য ও সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট মো. মতিউর রহমান আকন্দ। প্রধান আলোচক ছিলেন ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় নেতা ও শীর্ষ জুলাই যোদ্ধা মো. আবু সাদিক কায়েম।