জয়পুরহাটের ক্ষেতলালে চাঁদা দাবীকে কেন্দ্র করে বিএনপি নেতাদের নেতৃত্বে থানায় হামলার ঘটনার ঘটেছে। এসময় দুই পুলিশ সদস্যসহ ৬ জন আহত হয়েছে।
মঙ্গলবার ইফতারের পূর্ব মুহুর্তে ক্ষেতলাল থানায় এ ঘটনা ঘটে। এসময় বিএনপির নেতাকর্মীরা থানা ঘেরাও করে।
ক্ষেতলাল থানার অফিসার ইনচার্জ মাহবুবুর রহমান সরকার জানান, থানায় পুলিশ হেফাজতে থাকা তিনজনকে ছিঁনিয়ে নেওয়ার জন্য উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক পার্থের নেতৃত্বে থানায় হামলা করে দায়িত্বরত ২ পুলিশ সদস্যকে আহত করে থানা অবরুদ্ধ করে। পুলিশ বাধ্য হয়ে সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপ কামনা করলে সেনাবাহিনী সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে ৩ জনকে আটক করে ডিবি পুলিশ ও সেনাবাহিনী।
আহতরা হলেন, ক্ষেতলাল থানার পুলিশ কনস্টেবল কাজী জাফর ও পুলিশ কনস্টেবল সুমন মিয়া, ক্ষেতলাল পৌর এলাকার শাখারুঞ্জ গ্রামের তোফাজ্জল হোসেন, একই গ্রামের আমিরুল ইসলাম, বগুড়ার শাহজাহানপুরের রফিক ও আব্দুল মমিন।
ভুক্তভোগী আহত রফিক জানান, ক্ষেতলাল পৌর এলাকার শাখারুঞ্জ গ্রামের তোফাজ্জল হোসেন জমি রেজিস্ট্রির জন্য ক্ষেতলাল উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে আসেন। এসময় স্থানীয় পৌর বিএনপির ৯ নং ওয়ার্ডের সভাপতি কবির চৌধুরীর নেতৃত্বে বিএনপি কর্মী মাসুদ চৌধুরী, গোলাম মওলা ও জুয়েল সেখানে উপস্থিত হয়ে তার নিকট থেকে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে। চাঁদা দিতে অপারগতা জানালে তারা উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী আশিক পার্থকে বিষয়টি জানায়। খবর পেয়ে উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক পার্থ সেখানে উপস্থিত হয়ে চাঁদা না দিলে দলিল রেজিস্ট্রি করতে দেওয়া হবে না বলে হুমকি দেয়। তাকে বাধা দিতে গেলে তোফাজ্জলসহ তার চার আত্মীয়কে মারপিট করে রক্তাক্ত করে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। পুলিশ থানা থেকে তোফাজ্জলকে গুরুতর আহত অবস্থায় ক্ষেতলাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করান।
থানায় পুলিশ হেফাজতে থাকা বাকি তিনজনকে ছিঁনিয়ে নেওয়ার জন্য উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী আশিক পার্থের নেতৃত্বে শতাধিক লোকজন থানায় আক্রমণ করে দায়িত্বরত ২ পুলিশ সদস্যকে আহত করে থানা অবরুদ্ধ করে। পুলিশ বাধ্য হয়ে সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপ কামনা করলে সেনাবাহিনীর ঘটনাস্থলে এসে লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে উপজেলা বিএনপি'র ৩ জনকে আটক করে সেনাবাহিনী।
পরে খবর পেয়ে জেলা পুলিশ সুপার আব্দুল ওয়াহাবের নেতৃত্বে জেলা পুলিশের অতিরিক্ত ফোর্স, জেলা গোয়েন্দা শাখা ও কালাই থানা পুলিশের শতাধিক সদস্য থানায় অবস্থান নেয়।
এ বিষয়ে উপজেলা বিএনপির সভাপতি খালেদুল মাসুদ আঞ্জুমান বলেন, দলের যে কেউ হোক যে অপরাধ করবে তার বিরুদ্ধে দলীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ক্ষেতলাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মাহবুবুর রহমান সরকার বলেন বিএনপির নেতৃত্বে থানায় হামলা করে পুলিশকে বেধড়ক মারপিট করে এ ঘটনায় তিনজনকে আটক দেখানো হয়েছে বাকিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে৷