খোঁজাখুজি করার সময় শাহ আলম এর ভাই মোঃ ফেরুজ মাজন (২০) গত ০৮/১০/২০২৩ তারিখ সকাল অনুমানিক ০৮:০০ ঘটিকার সময় লোকমুখে জানতে পারে যে, ঝিনাইগাতী থানাধীন কুচনীপাড়া সাকিনস্থ কুচনীপাড়া টু কুরুয়াগমী পাকা রাস্তার পশ্চিম পাশে সাবেক চেয়ারম্যান জনৈক সামছুল হকের ধান ক্ষেতের পূর্ব পাশে রাস্তার ধারে পানিতে একটি লাশ পাওয়া গিয়েছে

মোঃ মঞ্জুরুল হক, ঝিনাইগাতী, শেরপুরঃ ০৭/১০/২০২৩ খ্রিঃ তারিখ সন্ধ্যা আনুমানিক ০৬:৩০ ঘটিকার সময় শাহ আলম, শ্রীবরদী থানাধীন মাটিয়াকুড়া সাকিনস্থ জনৈক আবু রায়হান মেম্বার এর অটোরিকশা রাখার গ্যারেজ হতে অটোরিকশা নিয়ে ভাড়া মারার জন্য বের হয়। পরবর্তীতে রাত গভীর হলেও  শাহ আলম (৪১) বাড়ীতে না ফেরায় পরের দিন তার স্ত্রী মোছাঃ মোরশেদা বেগম ঘুম থেকে উঠে ডিসিস্ট শাহ আলম রাতে বাড়ীতে আসে নাই বলে বিষয়টি জানিয়ে অটোরিকশা চার্জ দেওয়ার গন্তব্যস্থল জনৈক আবু রায়হান মেম্বার এর অটোরিকশা গ্যারেজের উদ্দেশ্যে রওনা দেয় এবং  শাহ আলম এর বাড়ীর অন্য লোকজন তাকে খোঁজাখুজি করতে থাকে।

খোঁজাখুজি করার সময়  শাহ আলম এর ভাই মোঃ ফেরুজ মাজন (২০) গত ০৮/১০/২০২৩ তারিখ সকাল অনুমানিক ০৮:০০ ঘটিকার সময় লোকমুখে জানতে পারে যে, ঝিনাইগাতী থানাধীন কুচনীপাড়া সাকিনস্থ কুচনীপাড়া টু কুরুয়াগমী পাকা রাস্তার পশ্চিম পাশে সাবেক চেয়ারম্যান জনৈক সামছুল হকের ধান ক্ষেতের পূর্ব পাশে রাস্তার ধারে পানিতে একটি লাশ পাওয়া গিয়েছে। তাৎক্ষনিক  শাহ আলম এর স্ত্রী ও ভাই বর্ণিত স্থানে গিয়ে লাশটি শাহ আলম এর বলে সনাক্ত করে।

পরে ডিসিস্টের স্ত্রী বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে ঝিনাইগাতি থানায় এজাহার দায়ের করলে ঝিনাইগাতী থানার মামলা নং-০৯, তাং-০৮/১০/২০২৩ খ্রিঃ, ধারা-৩৯৪/৩০২/২০১/৩৪ পেনাল কোড রুজু করা হয়। মামলাটি রুজু হওয়ার পূর্বে হত্যাকাণ্ডের মূল রহস্য দ্রুত সময়ের মধ্যে উদঘাটন, আসামি গ্রেফতার ও মামলার যথাযথ তদন্তের লক্ষ্যে শেরপুর জেলার সুযোগ্য পুলিশ সুপার জনাব মোনালিসা বেগম পিপিএম-সেবা মহোদয় 
জেলা পুলিশের জ্যৈষ্ঠ কর্মকর্তাদের নিয়ে ঘটনাস্থল সরেজমিনে পরিদর্শন করে দ্রুত সময়ের মধ্যে ঘটনার মূল রহস্য উদঘাটনে জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও তদন্তকারী কর্মকর্তাকে দিক-নির্দেশনা প্রদান করেন।

পুলিশ সুপার, শেরপুর মহোদয়ের দিকনির্দেশনায় দ্রুত সময়ের মধ্যে ঘটনার মূল রহস্য উদঘাটন করার জন্য অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্) জনাব মোঃ খোরশেদ আলম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) জনাব মোঃ সাইদুর রহমান ও সহকারী পুলিশ সুপার (নালিতাবাড়ী সার্কেল) জনাব মোঃ দিদারুল ইসলামের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ঝিনাইগাতী থানার অফিসার ইনচার্জ জনাব মোঃ মনিরুল আলম ভূইয়া নেতৃত্বে ঝিনাইগাতি থানার এসআই (নিরস্ত্র) রাজীব ভৌমিক, এসআই (নিরস্ত্র) মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন,  এসআই (নিরস্ত্র) মোঃ তোফাজ্জল হোসেন, এসআই (নিরস্ত্র) মোঃ দুলাল, জেলা গোয়েন্দা শাখা এসআই (নিরস্ত্র) মোঃ আবু বক্কর সিদ্দিক, শ্রীবরদী থানার এসআই (নিরস্ত্র) মোঃ শফিকুর রহমান এবং এলআইসি শাখার এসআই (নিরস্ত্র) মোঃ আশিকুর রহমান ও এসআই (নিরস্ত্র) হেলাল উদ্দিন সহ সঙ্গীয় ফোর্সের সম্মিলিত অভিযানে লুণ্ঠিত অটোরিক্সাটি ঝিনাইগাতী থানাধীন বালিয়াচন্ডি পশ্চিমপাড়া সাকিনস্থ জনৈক আবুল হোসেন (৫২) এর বসত বাড়ীর বাহির আঙ্গিনা হতে উদ্ধার করা হয়। 

এলআইসি শাখার মাধ্যমে তথ্য প্রযুক্তি ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ঘটনায় জড়িত আসামি ১। মোঃ সবুজ মিয়া (৩৯), পিতা- শাহ জাহান মিয়া, সাং- ইটাহাটা থানা- জয়দেবপুর, জেলা-গাজীপুর ও ২। মোঃ রূপন (২০), পিতা- আঃ রহিম, সাং- ছোট মালিঝিকান্দা, থানা- ঝিনাইগাতী, জেলা- শেরপুরদ্বয়কে গ্রেফতার করা হয়। 

গ্রেফতারকৃত আসামিদ্বয়কে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, পূর্বে এক সময় ডিসিষ্ট শাহ আলম (৪১) ঢাকায় বাস কাউন্টারে চাকুরী করতো। কিছুদিন পূর্বে ডিসিষ্ট শাহ আলম (৪১ নিজ এলাকায় এসে ভ্যান গাড়ী চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ শুরু করে। ঘটনার কিছুদিন পূর্বে ডিসিষ্ট শাহ আলম (৪১) কিস্তিতে একটি অটোরিক্সা ক্রয় করে চালাতে থাকে। আসামি মোঃ রূপন (২০), আসামী মোঃ সবুজ মিয়া (৩৯) কে বলে যে, একটি অটোরিকশা ছিনতাই করতে পারলে সে বিক্রি করে দিতে পারবে। এই বলে আসামি মোঃ সবুজ মিয়া (৩৯) ও মোঃ রূপন (২০) ডিসিষ্ট শাহ আলম (৪১) এর অটোরিকশাটি ছিনতাই করার জন্য পরিকল্পনা করে। ঘটনার রাত গত ০৭/১০/২০২৩ তারিখ রাত অনুমানিক ০৮:০০ ঘটিকার সময় কুচনীপাড়া বাজার হতে আসামি মোঃ সবুজ মিয়া (৩৯) ও মোঃ রূপন (২০) দ্বয় ডিসিষ্ট শাহ আলম (৪১) এর অটোরিক্সাটি ৫০০ টাকায় ভাড়া করে অটোরিক্সাটি ছিনতাই করার জন্য ঝিনাইগাতী থানা এলাকার বিভিন্ন জায়গায় ঘুরাফেরা করে নির্জন জায়গা খুঁজতে থাকে।

ঘোরাঘুরির একপর্যায়ে বাকাকুড়া বাজারে ডিসিষ্ট শাহ আলম (৪১) ও আসামি মোঃ সবুজ মিয়া (৩৯) একটি দোকান হতে গরুর মুখে লাগানো লাইলনের রশি ক্রয় করে ঘটনাস্থল কুচনীপাড়া এলাকায় এসে ডিসিষ্ট শাহ আলম (৪১) কে ৫০০/- টাকা ভাড়ার পরিবর্তে ৫০/- টাকা ভাড়া দেয় এবং বাকী ৪৫০/- টাকা পরে দিবে বলে ডিসিষ্ট শাহ আলমকে চলে যেতে বলে। পরে ডিসিষ্ট শাহ আলম অটোরিকশা চালিয়ে বাড়ীর উদ্দেশ্যে চলে আসতে থাকলে কিছুক্ষন পর আসামি মোঃ সবুজ মিয়া মোবাইল ফোনে ডিসিষ্ট শাহ আলমকে ঘটনাস্থল কুচনীপাড়া এলাকায় বাকী ৪৫০/- টাকা ভাড়া নেওয়ার জন্য আসতে বলে। আসামি সুবজ মিয়ার কথামত ডিসিষ্ট শাহ আলম অল্প কিছুক্ষণ পর ঘটনাস্থল কুচনীপাড়া এলাকায় আসলে আসামি সবুজ মিয়া অটোরিকশার পিছনে বসে এবং আসামি মোঃ রূপন অটোরিকশা সামনের বাম পাশের সীটে বসে কুচনীপাড়া বাজারের দিকে যেতে বললে অটোরিক্সার পিছনের সীটে বসা সবুজ মিয়া পিছন দিক থেকে এবং মো: রুপন সামনের সিটের বাম পাশ থেকে উভয়েই ডিসিষ্ট শাহ আলম এর গলায় লাইলনের রশি পেঁচাইয়া শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করে ডিসিষ্ট শাহ আলম এর মৃত দেহ ঘটনাস্থলে ফেলে রেখে আসামি মোঃ রূপন আসামি মোঃ সবুজ মিয়াকে নিয়ে অটোরিকশা চালিয়ে অটোরিকশা বিক্রি করার জন্য বিভিন্ন জায়গায় ঘুরাফেরা করে কোন উপায় না পেয়ে ঝিনাইগাতী থানাধীন বালিয়াচন্ডি পশ্চিমপাড়া সাকিনস্থ জনৈক আবুল হোসেন (৫২) এর বসত বাড়ীর বাহির আঙ্গিনায় ফেলে রেখে চলে যায়।

গ্রেফতারকৃত আসামীদ্বয়ের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি ফৌঃ কাঃ বিঃ ১৬৪ ধারা মোতাবেক বিজ্ঞ আদালতে উপস্থাপন করা হবে। উদ্ধারকৃত আলামতে বর্ণনাঃ
১. একটি ব্যাটারী চালিত সবুজ রংয়ের অটোরিকশা ২. হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত দুই টুকরো রশি। ৩. মোমরী কার্ড ও অটোরিকশার চাবি। 
সোমবার (০৯ অক্টোবর) পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে চাঞ্চল্যকর ক্লুলেস শাহ আলম হত্যাকাণ্ডের মূলরহস্য উদঘাটন, আসামি গ্রেফতার ও আলামত উদ্ধার বিষয়ে স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদের সাথে ব্রিফিং করেন শেরপুর জেলার সুযোগ্য পুলিশ সুপার জনাব মোনালিসা বেগম পিপিএম-সেবা।

ব্রিফিং কালে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) জনাব মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান জুয়েল পিপিএম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্) জনাব মোঃ খোরশেদ আলম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) জনাব মোঃ সাইদুর রহমান, সহকারী পুলিশ সুপার (নালিতাবাড়ী সার্কেল) জনাব মোঃ দিদারুল ইসলাম সহ জেলা পুলিশের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।