গোসাইরহাট উপজেলা থেকে স্ট্যান্ড রিলিজ হয়ে সম্প্রতি তাহিরপুরে যোগদান করেন আফজাল হোসেন। তবে তার দায়িত্ব পালনের ধরন ও আচরণে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে তিনি অফিসের কার্যক্রম নিজের ইচ্ছামতো পরিচালনা করছেন। সহকর্মী ও উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের তিনি বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। সেখানে থাকাকালীনও তার বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগ উঠেছিল। নতুন কর্মস্থলে এসেও তিনি একই ধরণের কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি জানিয়েছেন, তার আচরণে মনে হয় তিনি একজন মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তি। কাকে কী বলতে হবে সে বিষয়ে তার কোন সচেতনতা নেই। তার কর্মকাণ্ডে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন সবাই। তারা মনে করেন, তাকে অন্যত্র বদলি করা ছাড়া আর কোনো সমাধান নেই। আফজাল হোসেন শুধু তাহিরপুর নয়, জেলার জগন্নাথপুর, দোয়ারাবাজার এবং জামালগঞ্জ উপজেলায়ও অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন। এতে তার প্রভাব আরও বেড়ে গেছে বলে অভিযোগ করেছেন সংশ্লিষ্টরা। একাধিক উপজেলায় দায়িত্ব নেয়ার সুবাদে “অবৈধ আয়ের পথ” তার জন্য উন্মুক্ত হয়েছে বলেও তারা মনে করেন। সহকর্মীদের অভিযোগ, আফজাল হোসেন ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে অফিসের যাবতীয় কার্যক্রম নিজের মতো করে পরিচালনা করছেন। উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশ মানতে নারাজ তিনি। জেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উপ-পরিচালকের সঙ্গেও তার সম্পর্কের অবনতি ঘটেছে মাত্র সাত-আট মাসের মধ্যে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ভুক্তভোগী বলেন, “তার আচরণে মনে হয় তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন। কখন কাকে কী বলতে হয় সে বিষয়ে তার কোনো সচেতনতা নেই। তার কর্মকাণ্ডে আমরা অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছি।” তাদের মতে, তাকে বদলি ছাড়া আর কোনো সমাধান নেই।
অভিযোগ রয়েছে, ঢাকার কৃষি বাজার শাখার সোনালী ব্যাংকের নিজস্ব একাউন্টে সম্প্রতি তিনি মোটা অঙ্কের টাকা লেনদেন করেছেন। আর্থিক লেনদেনে রহস্য অনুসন্ধানে জানা গেছে,
ঢাকার কৃষি বাজার শাখার সোনালী ব্যাংকের নিজস্ব একাউন্টে আফজাল হোসেন গত কয়েক মাসে উল্লেখযোগ্য অঙ্কের টাকা লেনদেন করেছেন।
তার নিজ একাউন্ট নং-৪৪৪৬১০১০০৬৩৬৩ তে চলতি বছরের, ২ জুন জমা দিয়েছেন ৬২ হাজার টাকা৷ ২৩ এপ্রিল জমা দিয়েছেন ৭৫ হাজার টাকা৷ ১৫ জুন জমা দিয়েছেন ৬৫ হাজার টাকা৷ প্রশ্ন উঠেছে, এত টাকা তিনি কোথা থেকে পেলেন? সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে তার বেতন-ভাতা দিয়ে এ ধরনের মোটা অঙ্কের টাকা জমা দেওয়া সম্ভব নয়। সংশ্লিষ্টরা ধারণা করছেন, অবৈধ আয়ের উৎস থেকেই এ অর্থ এসেছে। নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, আফজাল হোসেন অত্যন্ত কৌশলীভাবে দুর্নীতির পথ বেছে নিয়েছেন। তিনি জেলার একাধিক উপজেলায় দায়িত্ব গ্রহণ করে অবৈধ পথে অর্থ উপার্জনের সুযোগ নিয়েছেন। “ধরি মাছ না ছুঁই পানি” কায়দায় তিনি কাজ করেন। সরাসরি হাত না লাগিয়েও নানা উপায়ে নিজের স্বার্থসিদ্ধি করছেন। অনিয়ম দূর্নীতি বিষয়ে মোবাইল ফোনে বক্তব্য জানতে চাইলে তাহিরপুর উপজেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের কর্মকর্তা আফজাল হোসেনে গাড়িতে আছি বলে ফোন বন্ধ করে ফেলেন৷ একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। তাহিরপুরসহ জেলার একাধিক উপজেলায় দায়িত্ব পালনকারী এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগের শেষ নেই। ভুক্তভোগী ও সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, তার অব্যাহত স্বেচ্ছাচারিতা ও দুর্নীতির কারণে প্রশাসনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হচ্ছে। তাই তার বিরুদ্ধে দ্রুত তদন্ত ও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরি হয়ে পড়েছে।##