সোমবার ( ২৫ আগস্ট) বিকেলে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সারাহ্ ফারজানা হকের আদালতে রিমান্ড শুনানিতে এ কথা জানান তিনি। শুনানি শেষে জুলাই আন্দোলনের সময় রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানার আসাদুল হক বাবু হত্যা মামলায় কনটেন্ট ক্রিয়েটর তৌহিদ আফ্রিদির ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
এর আগে তৌহিদ আফ্রিদিকে আদালতে হাজির করে সাতদিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির পুলিশ পরিদর্শক খান মো. এরফান। আর রিমান্ড বাতিলের আবেদন করেন আসামিপক্ষের আইনজীবী মোরশেদ হোসেন শাহিন।
আইনজীবী মোরশেদ হোসেন শাহিন জাগো নিউজকে বলেন, ‘তৌহিদ আফ্রিদি লিভার ও কিডনির জটিল রোগে আক্রান্ত। লিভারের এ সমস্যা থেকেই ক্যানসার হয়। আমরা আদালতে তার অসুস্থতার কাগজপত্র উপস্থাপন করে রিমান্ড নামঞ্জুরের আবেদন করি। আদালত ধৈর্য সহকারে সবকিছু শুনেছেন। পরে আসামির পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।’
রিমান্ড আবেদনে উল্লেখ করা হয়, আসামি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেশ ও বিদেশে একজন আলোচিত কনটেন্ট ক্রিয়েটর ও মাই টিভি চ্যানেলের পরিচালক হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে উল্লিখিত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে বিগত পতিত সরকারের বিশেষ সুবিধাপ্রাপ্ত ও আজ্ঞাবহ হয়ে ছাত্র-জনতার বিরুদ্ধে অবস্থান নেন। চব্বিশের জুলাইয়ে স্বৈরাচারীর পক্ষ নিয়ে সে সেলিব্রেটি ও অন্যান্য কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের দিয়ে আন্দোলন বন্ধে প্ররোচিত করেছে এবং যারা তার কথায় দ্বিমত পোষণ করেছেন তাদের বিভিন্ন হুমকি ও ভয়ভীতি দেখিয়েছেন।
এক্ষেত্রে সরাসরি একজন মিডিয়া সন্ত্রাসী ও প্রভাবশালী কনটেন্ট ক্রিয়েটর হিসেবে এবং ওই টিভি চ্যানেলের পরিচালক হয়ে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের বিপক্ষে লাইভ প্রচার করে উসকানিমূলক বক্তব্য ও প্রচার কার্যক্রম চালিয়ে ছাত্রজনতার দাবিকে উপেক্ষা করে আন্দোলন বিরোধীদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদদ যোগায়।
আরও বলা হয়, আসামির উসকানিমূলক কার্যক্রমে অনুপ্রাণিত হয়ে স্থানীয় আওয়ামী সন্ত্রাসী, রাজনৈতিক নেতা, কর্মী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নির্বিচারে গুলিবর্ষণে মামলার ভিকটিম আসাদুল হক বাবু মৃত্যুবরণ করে বলে তদন্তে প্রকাশ পায়। মামলার প্রকৃত ঘটনা, অজ্ঞাতনামা আসামিদের পরিচয় শনাক্তকরণ ও রহস্য উদঘাটনের লক্ষ্যে আসামিকে নিবিড়ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য সাতদিনের রিমান্ড প্রয়োজন।গত ২৪ আগস্ট রাতে বরিশাল থেকে তৌহিদ আফ্রিদিকে গ্রেফতার করেন সিআইডি পুলিশ।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট যাত্রাবাড়ীতে জুলাই আন্দোলনে অংশ নেন মো. আসাদুল হক বাবু। দুপুর আড়াইটার দিকে আসামিদের ছোঁড়া গুলিতে গুলিবিদ্ধ হন আসাদুল। চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় গত বছরের ৩০ আগস্ট যাত্রাবাড়ী থানায় হত্যা মামলা করেন নিহতের বাবা জয়নাল আবেদীন। মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ২৫ জনকে আসামি করা হয়। মামলায় আসামির তালিকায় নাসির উদ্দিন ও তৌহিদ আফ্রিদির নামও রয়েছে। মামলায় নাসির উদ্দিন ২২ নম্বর এবং তার ছেলে তৌহিদ আফ্রিদি ১১ নম্বর এজাহারনামীয় আসামি।
একই মামলায় গত ১৭ আগস্ট রাজধানীর গুলশান থানা এলাকা থেকে নাসির উদ্দিন সাথীকে গ্রেফতার করা হয়। পরদিন ১৮ আগস্ট তার ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ড শেষে গত ২৩ আগস্ট আসামিকে কারাগারে পাঠানো হয়।