ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার পূর্ব শ্যামপুর খাল এক সময় প্রবাহমান ছিলো। শুধু বর্ষা নয় সারা বছরই কম বেশী স্রোত থাকতো এ খালে। ছোট বড় বিভিন্ন নৌকা চলাচলের পাশাপাশি এ খাল থেকে মাছ আহরণ করে জীবন নির্বাহ করতো অনেক জেলেরা। সারা বছর এ খালে পানি থাকার কারনে কৃষি ফসলেও ঘটতো দারুণ বিপ্লব। এখন এসব শুধুই ইতিহাস আর মানুষের মুখের গল্প। বর্তমানে দখল আর দূষণে ময়লা-আবর্জনার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে শ্যামপুরের এই খাল। ভুবেনেশ্বর নদী থেকে উৎপত্তি হওয়া প্রায় ১০ কিলোমিটার দীর্ঘ এই খালটি অযত্ন আর অবহেলায় বিলীন হওয়ার পথে। খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, ৩০/৩৫ ফুটেরও বেশি গভীর এ খালটির স্লুইস গেটের সামনে বাজারের বর্জ্য ফেলা হচ্ছে নিয়মিত। উৎসমুখে খাল ভরাট করে তৈরি করা হয়েছে স্থানীয় একটি ইট ভাটার রাস্তা। খালের উপরে বালু ভরাট করে তৈরি করা হয়েছে অটোস্ট্যান্ড এবং একটু দূরেই একটি মাইক্রোস্ট্যান্ড। এসব কারনে পুরো খালটির প্রস্থ কমে সরু একটি ক্যানেলে রূপ নিয়েছে। এখন এই খালের কালো দূর্গন্ধজনীত ময়লা পানিতে কিছু কীটপতঙ্গ আর মশা মাছিছাড়া কিছুই বাস করে না। পানি এতোটাই বিষাক্ত যে কোনপ্রজাতির মাছ এখানে বাঁচতে পারে না। মারাত্মক হুমকিতে রয়েছে এখানকার জীব-বৈচিত্র্য।স্থানীয়দের অভিযোগ, ক্রমাগত দখল আর দূষণে অস্তিত্ব হারাতে বসা খালটিকে রক্ষায় সংশ্লিষ্টদের তেমন কোনো তৎপরতা নেই। তাদের মতে, সুপরিকল্পিত উদ্যোগ না নেওয়ায় আগের রূপে ফিরছে না উপজেলার বুক চিরে বয়ে যাওয়া এ খাল।খালের আশে পাশের বাসিন্দারা বলেন, খালের পাশে অনেকদিন যাবৎ খুব কষ্টে বসবাস করছেন তারা। পানি দূষিত হওয়ায় অনেক দুর্গন্ধ ছড়ায় বাতাস ছাড়লেই। পানিতে অনেক মশা তৈরি হয়েছে। তারা এই কষ্ট থেকে মুক্তি পেতে চান।সম্প্রতি এ বিষয়ে সদরপুর উপজেলা পরিষদের একটি মতবিনিময় সভায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার আল মামুন বলেন, পূর্ব শ্যামপুরের খালটিকে স্বরূপে ফিরিয়ে আনতে অবৈধ দখল উচ্ছেদ ও পুনঃখননসহ নানামুখী পরিকল্পনা নেওয়ার বিষয়ে শীঘ্রই আমরা উদ্যোগ গ্রহন করবো। এ ক্ষেত্রে সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন।