দুই যুগেও অচল ফেনীর ৩ কোটি ৫০ লাখ টাকার সুইমিংপুল

ফেনী শহরের দাউদপুল এলাকায় ২০০০ সালে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের উদ্যোগে নির্মিত আট লেনের সুইমিংপুলটি দুই যুগ পার হলেও এখনো চালু হয়নি। প্রায় ৩ একর জায়গাজুড়ে নির্মিত এই সুইমিংপুল তৈরিতে ব্যয় হয়েছিল ৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা। অথচ দীর্ঘদিনের অবহেলায় এটি মাদকসেবী ও বখাটেদের আস্তানায় পরিণত হয়েছে। বর্তমানে সুইমিংপুলটির দেয়ালে ফাটল ধরেছে, পলেস্তারা খসে পড়ছে, আর মোটর ও যন্ত্রপাতি ব্যবহারের অভাবে নষ্ট হয়ে গেছে।২০১৪ সালে এটি মরহুম ক্রীড়া সংগঠক মাহবুব উল হক পেয়ারার নামে নামকরণ করা হয়। নির্মাণের পর থেকে এটি সাঁতার প্রশিক্ষণ বা প্রতিযোগিতার জন্য ব্যবহৃত হয়নি। তবে ২০১২ সালে একটি প্রতিযোগিতার আয়োজনের গুঞ্জন শোনা গেলেও তার কোনো প্রমাণ মেলেনি। আধুনিক সুযোগ-সুবিধা থাকার পরও জেলা ক্রীড়া সংস্থার অবহেলায় সুইমিংপুলটি জাতীয় পর্যায়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ ভেন্যু হয়ে উঠতে পারেনি।সরেজমিনে দেখা যায়, সুইমিংপুলটি এখন সম্পূর্ণ পরিত্যক্ত। মূল ভবনের সামনের গ্লাস ভাঙা, দেয়ালের রঙ কালচে হয়ে গেছে। ভবনের চারপাশ অপরিচ্ছন্ন ও অপরাধপ্রবণ হয়ে পড়েছে। ভবনের প্রতিটি রুমেই ধ্বংসযজ্ঞের চিত্র দেখা যায়—আগুনে পোড়া চেয়ার, ভাঙা বাথরুম ফিটিংস, এলোমেলো যন্ত্রপাতি এবং কুকুরের অবাধ বিচরণ। সুইমিংপুলে পানির অভাব, নিরাপত্তা রক্ষী না থাকা এবং নির্জনতা জায়গাটিকে অপরাধের কেন্দ্রে পরিণত করেছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।স্থানীয় বাসিন্দারা ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, এত ব্যয়ে নির্মিত সুইমিংপুলটি এখন ভুতুড়ে বাড়িতে রূপ নিয়েছে। রাতে এখানে মাদকসেবী ও অসামাজিক কার্যকলাপের দৃশ্য দেখা যায়। তাদের মতে, সুইমিংপুলটি চালু না করলে বিকল্প হিসেবে বিনোদন পার্ক তৈরির মাধ্যমে এর যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করা যেতে পারে।ফেনী জেলা প্রশাসক মো. সাইফুল ইসলাম জানান, বিষয়টি দুর্ভাগ্যজনক। তিনি সুইমিংপুল পরিদর্শনের পর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন।