"নতজানু পররাষ্ট্রনীতি নয়, স্বনির্ভর ও স্বাধীন পররাষ্ট্র নীতির বাস্তবায়ন চাই" শ্লোগানকে ধারন করে এক নাগরিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

সার্বভৌমত্ব সুরক্ষা পরিষদের সভাপতি লেঃ কর্ণেল খন্দকার ফরিদুল আকবরের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা আল ইহযাযের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা বক্তব্য রাখেন।

সমাবেশে বক্তারা বলেন,গত ২২ এপ্রিল জন্মুকাশ্মিরের পেহেলগামে বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে বসবাসকারী কথিত অনুপ্রবেশকারীদের ধরতে অভিযান শুরু করে দেশটির কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। অবৈধ অভিবাসী সন্দেহে বিভিন্ন রাজ্যে আটক মুসলমান ও বাংলা ভাষাভাষীদের বিমানে করে বাংলাদেশের সীমান্ত এলাকায় আনা হয়।এরপর তাদের তুলে দেওয়া হয় বিএসএফের হাতে। আর বিএসএফ সুযোগ বুঝে তাদের বাংলাদেশে ঠেলে পাঠিয়ে দিচ্ছে। ৭মে খাগড়াছড়ি জেলার মাটিরাঙা ও পানছড়িতে ৬৬জন এবং কুড়িগ্রাম সীমান্ত দিয়ে ৩৬ জনকে দিয়ে পুশ ইন করে ভারত যা এখনো অব্যাহত রয়েছে। বিজিবি সদর দপ্তরের তথ্যানুযায়ী গত ৭মে থেকে ৩১ মে পর্যন্ত ২৪ দিনেই ১হাজার ২২২ জনকে বাংলাদেশে পুশ ইন করেছে ভারত। জুন মাসে আরো ১৩০০জনের অধিক ভারতীয়কে জোরপূর্বক পুশ ইন করা হয়।

তাঁরা বলেন, আসামের মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন-বিদেশী শনাক্ত হলেই পুশ ইন করা হবে বাংলাদেশে। তারই ধারাবাহিকতায় আন্তর্জাতিক সীমান্ত নিরাপত্তা আইন এবং আন্তর্জাতিক অভিবাসন ও মানবাধিকার আইন লঙ্ঘন করে পুশ ইন করা হচ্ছে। ভারতীয় নাগরিক এবং রোহিঙ্গাদেরকে অবৈধভাবে পুশ ইন চালিয়ে যাচ্ছে এই প্রতিবেশী রাষ্ট্রটি।
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিলেও বাংলাদেশ একটি স্বাধীন দেশ হওয়া সত্ত্বেও অন্তর্বর্তী সরকার কেনো বলিষ্ঠ প্রতিবাদী ভূমিকা নিতে পারছেনা পররাষ্ট্র উপদেষ্টাকে তার জবাব দিতে হবে।

"ভারত থেকে পুশ ইন হচ্ছে বাস্তবিক অর্থে তা ঠেকানো সম্ভব নয়"বলে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের বক্তব্যের তীব্র সমালোচনা করে বক্তারা বলেন,২০০৩ সালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এমন মোর্শেদ খানের বিচক্ষণতায় ২০০ এর বেশি ভারতীয়কে পুশ ইন করার প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে দেওয়া হয়।সরকারকে উদ্দেশ্য করে তারা বলেন,  আপনারা ২০০৩ সাল থেকে শিক্ষা গ্রহন করুন এবং নতজানু পররাষ্ট্রনীতি থেকে বেরিয়ে আসুন। পুশ ইন নিয়ে চিঠি চালাচালি বন্ধ করে পুশ ইন হওয়া ভারতীয়দের পুশব্যাক করুন।একই সাথে বাংলাদেশে অবৈধভাবে অবস্থানরত হাজার হাজার ভারতীয় নাগরিককে পুশব্যাক করুন।

বক্তারা আরো বলেন, ভারতবিরোধী বড় বড় কথা বলে সস্তা জনপ্রিয়তা অর্জনের হীন চেষ্টা বাদ দিয়ে স্বনির্ভর , জবাবদিহিমূলক ও স্বাধীন পররাষ্ট্রনীতি বাস্তবায়ন করুন। এদেশের জনগণ আর নতজানু দুর্বল পররাষ্ট্রনীতি দেখতে চায় না।

সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন 
ইসলামী মুভমেন্ট বাংলাদেশের চেয়ারম্যান এডভোকেট খায়রুল আহসান,সাবেক রাষ্ট্রদূত মোঃ শাকিব আলী,ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য আশরাফ আলী আকন,ডেপুটি এটর্নী জেনারেল ফরিদ উদ্দিন খান,এডভোকেট আফতাব হোসেন মোল্লা,মেজর হারুন অর রশিদ (অবঃ),
ডেপুটি এটর্নী জেনারেল মনসুর রহমান 
মেজর মোঃ মাসুদ উল হাসান (অবঃ), কালের ছবি পত্রিকার সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম শিশির, তাঁতীদলের সহ-সভাপতি কাজী মনিরুজ্জামান, আমজনতা দলের সাংগঠনিক সম্পাদক আরিফ বিল্লাহ,লুবনা আক্তার,মোঃ সাইদুল ইসলাম প্রমুখ।