যৌতুকের জন্য মারধরের অভিযোগে ভারতীয় এক তরুণীর দায়ের করা মামলায় বাংলাদেশি এক যুবককে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত। গত সোমবার সূত্রাপুর থানায় মামলা হওয়ার পর বুধবার রাতে আব্দুল ওয়াকিল নামের ওই যুবককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। বৃহস্পতিবার তাকে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক মো. ফিরোজ আলী। এ সময় আসামির পক্ষে জামিন চেয়ে আবেদন করেন তার আইনজীবী। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকার মহানগর হাকিম আশেক ইমাম জামিন নাকচ করে ওয়াকিলকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
বাদীপক্ষের আইনজীবী মো. হায়দার তানভীরুজ্জামান বলেন, “ভিকটিম ওই তরুণী তার ভালোবাসার জন্য ধর্ম ছেড়েছে, পরিবার ছেড়েছে, রাষ্ট্র ছেড়েছে। তারপরও স্বামীর মন পায়নি, যৌতুকের জন্য মারধর করেছে তাকে। “নির্যাতিত মেয়েটা আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের নাগরিক। তিনি বাংলাদেশে এসেছেন মেডিকেলে পড়ালেখা করার জন্য। এভাবে বিদেশি নাগরিকরা হয়রানির শিকার হলে আমাদের দেশের সুনাম ক্ষুণ্ন হবে।” ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ওই ভারতীয় তরুণী ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে বাংলাদেশে আসেন। গত সোমবার তিনি সূত্রাপুর থানায় এ মামলা দায়ের করেন। এজাহারে বলা হয়, ২০২২ সালের এপ্রিল মাসে আব্দুল ওয়াকিলের সঙ্গে ফেইসবুকে পরিচয় হয় ওই ছাত্রীর। ওয়াকিলের বাড়ি শেরপুর জেলার নালিতাবাড়ী উপজেলায়, ময়মনসিংহে নার্সিং পড়েন তিনি। দুজনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠলে এক পর্যায়ে তারা বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন।ওয়াকিল তখন ওই তরুণীকে ধর্মান্তরিত হতে বলেন।
২০২২ সালের ১২ সেপ্টেম্বর সেই ভারতীয় তরুণী ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। ওই বছরের ১৭ সেপ্টেম্বরে ঢাকা জজ কোর্ট থেকে এফিডেভিট করে এক লাখ টাকা কাবিননামায় বিয়ে করেন তারা। মামলার এজাহারে বলা হয়, কলকাতায় ওই তরুণীর পরিবারের অনেক ধনসম্পদ আছে জেনে ওয়াকিল ‘যৌতুক’ দাবি করেন। এ বিষয়ে প্রতিবাদ করলে ওই তরুণীকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করেন ওয়াকিল। শ্বশুরবাড়ি নিয়ে যেতে বললে ওয়াকিল তালবাহানা করে তাকে বিভিন্ন হোটেলে নিয়ে যেতেন এবং মাঝে মধ্যে হোটেলে একসঙ্গে থাকতেন। বর্তমানে ওই তরুণী নয় সপ্তাহের গর্ভবতী জানিয়ে মামলায় বলা হয়, গত ৫ মার্চ বিষয়টি ওয়াকিলকে জানালে তিনি গর্ভপাত করতে বলেন। প্রতিবাদ করলে মারধর করেন। দশ লাখ টাকা না দিলে তালাক দেওয়ার হুমকি দেন।