নেপালে 'জেন জি' গোষ্ঠীগুলোর ব্যাপক সহিংস বিক্ষোভের ফলে সৃষ্ট রাজনৈতিক অস্থিরতার মাঝে দেশটির প্রথম নারী প্রধান বিচারপতি সুশীলা কার্কির নাম অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী পদের জন্য আলোচিত হচ্ছে।

এই পরিস্থিতিতে সাবেক প্রধান বিচারপতি সুশীলা কার্কি 'দ্য স্টেটসম্যান'কে জানিয়েছেন, জনগণ চাইলে তিনি একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নেতৃত্ব দিতে প্রস্তুত। তিনি বর্তমান পরিস্থিতিকে "কঠিন সময়" বলে বর্ণনা করেছেন।

'দ্য স্টেটসম্যান'-এর সঙ্গে এক কথোপকথনে ৭৩ বছর বয়সী কার্কি দেশের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, 'সংঘর্ষ শুরু হওয়ার পর থেকে আমি ঘুমাতে পারিনি। বাইরে কী ঘটছে তা আমি ঠিক জানি না, তবে যা ঘটেছে তা সত্যিই হৃদয়বিদারক। দ্য স্টেটসম্যান এর এক প্রতিবেদন থেকে এসকল তথ্য জানা যায়।

সাম্প্রতিক সহিংসতায় সরকারি বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে অন্তত ১৯ জনের প্রাণহানির পর নেপালে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের আলোচনা শুরু হলে রাজনৈতিক বিতর্কে তার নাম উঠে আসে। কার্কিসহ অন্যান্য মানবাধিকার কর্মীরা সক্রিয়ভাবে রাজপথে থেকে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন এবং বিক্ষোভে আহতদের সহায়তা করছেন।

নেপালের বিচার বিভাগে সুশীলা কার্কির কর্মজীবন ঐতিহাসিক। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন সাংবিধানিক পরিষদের সুপারিশের পর তিনি ২০১৬ সালের ১১ জুলাই প্রধান বিচারপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ২০১৭ সালের ৩০ এপ্রিল মাওবাদী কেন্দ্র এবং নেপালি কংগ্রেস তার বিরুদ্ধে সংসদে অভিশংসন প্রস্তাব দাখিল করে। তবে ব্যাপক জনরোষ এবং সংসদের কার্যক্রমের ওপর সুপ্রিম কোর্টের অন্তর্বর্তীকালীন আদেশের কারণে প্রস্তাবটি শেষ পর্যন্ত প্রত্যাহার করা হয়।

কার্কি একজন প্রশংসিত লেখিকাও। ২০১৮ সালে তার আত্মজীবনীমূলক প্রথম বই 'ন্যায়' প্রকাশিত হয়। ২০১৯ সালে তার দ্বিতীয় বই, 'কারা' নামের একটি উপন্যাস প্রকাশিত হয়। উপন্যাসটি নেপালের পঞ্চায়েত শাসনামলে বিরাটনগর জেলে কার্কির কারাবাসের অভিজ্ঞতা থেকে লেখা।

উল্লেখ্য, মঙ্গলবার দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির বিরুদ্ধে তীব্র বিক্ষোভ অগ্নিসংযোগ ও সহিংসতায় রূপ নেয়। বিক্ষোভকারীরা রাজনীতিবিদদের বাড়িতে ভাঙচুর চালায়, সরকারি ভবনে আগুন ধরিয়ে দেয় এবং সংসদ ভবন অগ্নিসংযোগ করে, যার ফলে প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করতে বাধ্য হন।