সফলতার সংজ্ঞা একেক জনের কাছে একেক রকম। আল কুরআনের বিভিন্ন আয়াতে কারা ইতিমধ্যে সফলতা অর্জন করেছে এবং কারা সফলতা অর্জন করবে তা বর্ণিত রয়েছে। আর পবিত্র আল কুরআনে বর্ণিত সূরা আল আসরকে সফলতার মাপকাঠি হিসেবে বিবেচিত হয়। আমাদের সমাজ ব্যাবস্থায় বেশীরভাগ মানুষের সফলতার মানদন্ড হচ্ছে টাকা-পয়সা, ধন-দৌলত, বাড়ী-গাড়ী, ক্ষমতা, খ্যাতি, যশ, শক্তি প্রভৃতি। তবে আল কুরআনে বর্ণিত সূরা আল আসর (ঞযব ঞরসব) এ যে মহাসত্য ঘোষিত হয়েছে তা সফলতার সাধারণ চিত্র থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন।
সূরাটিতে মানুষের প্রকৃত সাফল্য ও ব্যার্থতার মানদন্ড পেশ করা হয়েছে। বিবেক-বুদ্ধি সম্পন্ন ব্যক্তি মাত্রই জীবনের কোন লক্ষ্য- উদ্দেশ্য ও আদর্শ রয়েছে যা অর্জনের জন্যই সে নিজের কষ্ট ও মেহনত উজাড় করে দেয়। সূরা আল আসর অধ্যয়নের মাধ্যমে বোঝা যায়, মানুষের সাফল্য টাকা-পয়সা, ধন-দৌলত, বাড়ী-গাড়ী, ক্ষমতা, খ্যাতি এসবের উপর ভিত্তি করে নির্ধারিত হয় না; বরং সাফল্যের জন্য সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ শর্ত হচ্ছে ঈমান, এরপর নেক আমল, তারপর পরস্পর সত্যের উপদেশ এবং ধৈর্য ধারনে পরস্পরকে উদ্বুদ্ধ করা।
আল কুরআনে বর্ণিত সূরা আল আসর অনুযায়ী এই চারটি শর্ত পূর্ণ করতে ব্যর্থ হলে মহান আল্লাহর কাছে ক্ষতিগ্রস্ত, ব্যর্থ, অনূত্তীর্ণ ও অসফল হিসেবে গণ্য হবে। দুনিয়ার কোন মানুষই ক্ষতিগ্রস্ত হতে চায় না। কিন্তু এই সূরায় মহান আল্লাহ সময়ের কসম করেছেন, যার অর্থ দ্রুত অতিবাহিত হওয়া সময় সাক্ষ্য যে, নিশ্চয়ই সমগ্র মানবজাতি ক্ষতির মধ্যে রয়েছে। সুতরাং নিশ্চিত ক্ষতি থেকে বাঁচতে; প্রথমত, মহান আল্লাহর প্রতি ঈমান আনয়ন ও ঈমানের বাস্তবায়ন করা। আল্লাহর হুকুম আহকাম মেনে চলা। দ্বিতীয়ত, পূণ্য অর্জনের জন্য কুরআন ও সুন্নাহ বর্ণিত ভাল কাজ করা। তৃতীয়ত, পরস্পরকে মহাসত্য আল কুরআন এর পথে অবিচল থাকার উপদেশ ও পরামর্শ দিতে হবে।
এবং সর্বশেষে, মানুষ তার নির্ধারিত পথে ধৈর্যের সাথে অবিচল থাকবে। কোন বিপদ-আপদ,বাধা-বিপত্তি, লোভ-লালসা তার পথ থেকে বিচ্যুত করতে পারবে না। তথ্যসূত্র: ডা: ইসরার আহমেদ রাহিমাহুল্লাহ/সূরা আসর সফলতার মাপকাঠি ।