আমাদের এই মার্কেটটা আসলে একটু ভিন্ন ধরনের। এখানে অনেক ধরনের উপাদান আছে, যা অন্যান্য বাজারে দেখা যায় না। আমাদের বাজারে দুটি পক্ষ রয়েছে। একটি পক্ষ ট্রেডার, যারা আসে এবং চলে যায়। আরেকটি পক্ষ হচ্ছে বিনিয়োগকারী। তবে আমাদের দেশে যে পরিমাণ বিনিয়োগকারী থাকা উচিত, তা নেই। একটি বাজারে ট্রেডার এবং বিনিয়োগকারী থাকবেই। তবে আমাদেরকে এখনো চেষ্টা করতে হচ্ছে ট্রেডারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখতে বিনিয়োগকারী বাড়ানোর।

পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীরে চেয়ে ট্রেডার, অর্থাৎ যারা শেয়ার কেনাবেচা করে, তাদের সংখ্যাই বেশি বলে মনে করেন নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন- বিএসইসির কমিশনার শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ। এই বিষয়টি ছাড়াও আরও একটি আক্ষেপ রয়েছে তার। সেটি হলো, বিনিয়োগকারীরা যেসব তথ্য উপাত্ত দেখে বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নেবে, সেগুলো সহজলভ্য নয়। গত দুই বছরে চাপ দিলেও কোম্পানিগুলো তা উন্মুক্ত করছে না। পুঁজিবাজারে শেয়ার কেনার সময় মুনাফা করতে হয় বলে মন্তব্য করেন শামসুদ্দিন। এ নিয়েও তার আরেকটি আক্ষেপ আছে। সেটি হলো, দেশে বিনিযোগকারীরা গুজবের ওপর নির্ভর করে যখন শেয়ার বিক্রির সময়, তখন কেনে আর যখন কেনার সময় তখন বিক্রি করে।


পুঁজিবাজার নিয়ে কাজ করা সাংবাদিকদের সমিতি ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্টস ফোরামের (সিএমজেএফ) উদ্যোগে 'এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ফান্ড (ইটিএফ)’ নিয়ে আয়োজিত কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে রোববার তিনি এ কথা বলেন। বিএসইসি কমিশনার বলেন, ‘আমাদের এই মার্কেটটা আসলে একটু ভিন্ন ধরনের। এখানে অনেক ধরনের উপাদান আছে, যা অন্যান্য বাজারে দেখা যায় না।‘আমাদের বাজারে দুটি পক্ষ রয়েছে। একটি পক্ষ ট্রেডার, যারা আসে এবং চলে যায়। আরেকটি পক্ষ হচ্ছে বিনিয়োগকারী। তবে আমাদের দেশে যে পরিমাণ বিনিয়োগকারী থাকা উচিত, তা নেই। একটি বাজারে ট্রেডার এবং বিনিয়োগকারী থাকবেই। তবে আমাদেরকে এখনো চেষ্টা করতে হচ্ছে ট্রেডারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখতে বিনিয়োগকারী বাড়ানোর। তবে শেয়ারবাজারে টেকনিক্যাল অ্যানালাইসিস করা ঊভয় পক্ষের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ।


দ্বিতীয় আক্ষেপের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘অনেক সময় একজন বিনিয়োগকারী তথ্য বিশ্লেষণ করে বিনিয়োগ করতে চাইলেও পারে না। কারণ, কিছু কোম্পানি এখনো কোম্পানির সব তথ্য ওয়েবসাইটে প্রকাশ করে না। ফলে কেউ বিশ্লেষণ করে বিনিয়োগ করতে চাইলেও তথ্যের অভাবে তা পারছে না। এ বিষয়টি সমাধানের জন্য গত ২ বছরে চিঠি দিয়েও সম্ভব হয়নি। ‘যদি একটি কোম্পানির নিরীক্ষিত হিসাব না পাওয়া যায়, তাহলে একজন বিনিয়োগকারী ওই কোম্পানির সম্পর্কে কীভাবে জানবেন? ওই কোম্পানির কী আছে, কী নাই এবং ব্যবসায়িক অবস্থা সম্পর্কে জানতে আর্থিক হিসাবের দরকার। অন্যথায় একজন বিনিয়োগকারীর লোকসানের সম্ভাবনা থাকে। তাই আমরা সব কোম্পানিকে ওয়েবসাইটে আপডেট তথ্য প্রকাশের অনুরোধ করব। এ বিষয়ে আমরা কঠোর হয়ে কাউকে শাস্তি দিতে চাই না। তবে কঠিন সিদ্ধান্ত নেওয়ার মতো আইনগত সক্ষমতা আছে।


অধ্যাপক শামসুদ্দিন মনে করেন, বিনিয়োগকারীরা ভুল সময় শেয়ার কেনে আর বিক্রি করার সময়ও ভুল করে। এটি তাদের লোকসানের অন্যতম কারণ। শেয়ারবাজারে কেনার সময় লাভ করতে হয় বলেও মন্তব্য করেন বিএসইসি কমিশনার। বলেন, ‘বিক্রি করে আসলে লাভ হয় না। তাই সঠিক সময়ে কিনতে হবে। কিন্তু আমাদের দেশের শেয়ারবাজারে অদ্ভুত অদ্ভুত গুজবে বিনিয়োগকারীরা বিভ্রান্ত হয়ে পারে। এছাড়া যখন কেনার সময় তখন তারা বিক্রি করে এবং বিক্রির সময় কেনে।