ভোলার পশ্চিম ইলিশা ইউনিয়নে এক চাঞ্চল্যকর ও মর্মান্তিক ঘটনার জন্ম দিয়েছে দিনমজুর ইসমাইল ও প্রতিবন্ধী নারী আসমার দাম্পত্য জীবন

ভোলার পশ্চিম ইলিশা ইউনিয়নে এক চাঞ্চল্যকর ও মর্মান্তিক ঘটনার জন্ম দিয়েছে দিনমজুর ইসমাইল ও প্রতিবন্ধী নারী আসমার দাম্পত্য জীবন। মামাতো-ফুপাতো সম্পর্কের সূত্র ধরে ২০১১ সালের শেষ দিকে পারিবারিকভাবে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন ইসমাইল ও আসমা (প্রতিবন্ধী)।

এলাকাবাসী জানান, বিয়ের পর থেকেই ইসমাইল নানা অজুহাতে শ্বশুরবাড়ি থেকে নগদ অর্থ ও আসবাবপত্র নেন। দিনমজুর হওয়ায় সংসার চালাতে হিমশিম খাওয়া ইসমাইলকে শ্বশুর আমির হোসেন ফরাজি একটি অটোরিকশা কিনে দেন। এরপর সংসারে কিছুটা স্বচ্ছলতা ফিরে আসে এবং দম্পতির ঘরে একটি কন্যাসন্তানের জন্ম হয়, যার বয়স বর্তমানে ১২ বছর।

কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ইসমাইলের চাহিদা বাড়তে থাকে। বাড়ি পাকা করতে এবং বিদেশ যাওয়ার খরচ বাবদ তিনি শ্বশুরবাড়ি থেকে আরও টাকা দাবি করেন। মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে আসমার বাবা নগদ দুই লক্ষ টাকা দেন। এরপর ইসমাইল প্রবাসে পাড়ি জমান এবং সেখান থেকে তার বড় ভাই বিল্লালকে মালয়েশিয়ায় পাঠানোর ব্যবস্থাও করেন।

প্রতিবন্ধী জানার পরও শুধুমাত্র সুযোগ-সুবিধা ভোগ করার জন্যই ইসমাইল এই বিয়ে করেছিলেন বলেও জানান স্থানীয় বাসিন্দারা।

আসমার বড় বোন সাহিদা আক্তার বললেন, আমার বোন শারীরিকভাবে একটু অসুস্থ ছিল তাই তার সুখের কথা চিন্তা করে আমার বাবা পাত্র পক্ষের সকল চাহিদাই পূরণ করেছে। দাম্পত্য জীবনে আমার বোনের সাথে ওর শ্বশুর-শাশুড়ী, ননদ, ঝা কারো সাথেই ঝগড়াঝাটি হয়নি তাহলে বিনা অপরাধে ইসমাইল তাঁর মায়ের ইন্ধনে কেন আমার বোনকে তালাক দিলো। প্রশাসনের কাছে আমরা এই অন্যায়ের উপযুক্ত বিচার চাই। 

ভুক্তভোগী আসমা জানান, বিগত চার বছর ধরে ইসমাইল আর দেশে ফেরেননি। সম্প্রতি আসমা জানতে পারেন, তিনি দেশে ফিরে ঢাকায় বোনের বাসায় অবস্থান করলেও স্ত্রী ও সন্তানের খোঁজ রাখেননি। এমনকি মিথ্যা বলেও তার মা মাসুমা বেগমকে ঢাকায় নিয়ে গিয়ে বোনের বাসায় দেখা করেন এবং পুনরায় বিদেশে চলে যান। এরপর ইসমাইল ফোনে আসমাকে জানান যে, তাকে ডিভোর্স পেপার পাঠানো হয়েছে।

এ বিষয়ে ইসমাইলের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিষয়টি স্বীকার করেন এবং বলেন, "আমার বউ আমার কথা শুনতো না, তাই তালাক দিয়েছি। তবে সে ডিভোর্স পেপার পেয়েছে কি না, তা জানি না।"

অন্যদিকে, ইসমাইলের মা বলেন, "বিয়ের সময় ছেলে পক্ষ অনেক দাবি করেছিল, যা মেয়ের পরিবার পুরোপুরি পূরণ করেনি।"

আসমা ও তার পরিবার এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, তারা এই অন্যায়ের সঠিক বিচার চান এবং প্রশাসনের কাছে ন্যায়বিচারের দাবি জানিয়েছেন।