বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি ও দুই হলের নাম পরিবর্তন করে নতুন নামের ব্যানার টাঙিয়ে দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি ও দুই হলের নাম পরিবর্তন করে নতুন নামের ব্যানার টাঙিয়ে দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। নাম পরিবর্তনের দাবি জানানোর দীর্ঘদিন অপেক্ষার পর আজ মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) দুপুরে শিক্ষার্থীরা নিজেরাই এ কাজ করেন। শিক্ষার্থীরা শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি নামের ব্যানার সরিয়ে কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার নাম দিয়েছেন। এদিকে বঙ্গবন্ধু হলের পরিবর্তন করে ‘বিজয় ২৪ হল’ এবং শেখ হাসিনা হলের পরিবর্তে ‘কবি সুফিয়া কামাল হল’ নামের ব্যানার টাঙান বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীরা। জানা যায়, গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনটি হল ও কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের নাম পরিবর্তনের দাবি জানিয়ে আসছেন শিক্ষার্থীরা। পরবর্তী সময়ে ২ ডিসেম্বর হলের নাম পরিবর্তন-বিষয়ক কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তবে কমিটি গঠনের এক মাস পেরিয়ে গেলেও আসেনি কোনো সিদ্ধান্ত। রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী সাকিব আল হাসান বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের পতনের পর জুলাই বিপ্লবের স্পিসকে ধারণ করে আমরা শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন ধরে হলের নাম পরিবর্তনের দাবি জানিয়ে আসছিলাম। প্রশাসন নাম পরিবর্তনের জন্য কমিটি করলেও তাদের কোনো কার্যকর মিটিং হয়নি বা কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ নিচ্ছিল না। প্রশাসন ব্যর্থ হলে আমরা শিক্ষার্থীরা পরিবর্তন করে দিয়েছি। আমরা সম্মিলিত সিদ্ধান্তে, নামগুলো নির্ধারণ করেছি। এগুলো নিয়ে কোনো বিতর্ক হবে না।’ মৃত্তিকাবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সোহানুর রহমান সিফাত বলেন, ‘আমরা প্রশাসনের কাছে অনেক আগেই স্মারকলিপি দিয়েছিলাম। কিন্তু প্রশাসন নাম পরিবর্তন করতে পারেনি। তাই আমরা শিক্ষার্থীরা নাম পরিবর্তন করে দিয়েছি। আমরা চাই প্রশাসন এই নামগুলো বহাল রাখুক। আর বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের নতুন কী নাম হবে, এটা নিয়ে ঐকমত্যে পৌঁছানো যায়নি। তাই পরিবর্তন করা হয়নি। অতি শিগগির এটাও পরিবর্তন করা হবে।’ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক, হল ও কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির নাম পরিবর্তন-বিষয়ক কমিটির এক সদস্য বলেন, ‘অনেক দিন হয়েছে নাম পরিবর্তনের জন্য কমিটি করা হয়েছে। কিন্তু আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অফিশিয়ালি জানায়নি। আমরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেখতে পেয়েছিলাম কমিটিতে আমাদের নাম রয়েছে। ৯ জানুয়ারি আমাদের ফোন করেই জানানো হয় যে কিছুক্ষণ পর এমন একটি মিটিং আছে। তারপর ১২ তারিখ আবার একটি মিটিং করা হয়। সেখানে কী প্রক্রিয়ায় নাম পরিবর্তন করা যায়, সে বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়। কিন্তু এসব বিষয় প্রশাসনের মধ্যে তেমন আন্তরিকতা দেখা যায়নি।’ হলের নাম পরিবর্তন-বিষয়ক কমিটির আহ্বায়ক ও বঙ্গবন্ধু হল প্রভোস্ট মো. মেহেদী হাসান বলেন, ‘হলের নাম পরিবর্তন বিষয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একটি মিটিং করেছি। পরবর্তী সময়ে উপাচার্যের সঙ্গে এ বিষয়ে কিছু কথা বলা হয়েছে। কমিটি থেকে নামের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে স্টুডেন্টরা যদি কিছু করে থাকে তবে সেটা তাদের স্ক্রিপ্ট থেকে হয়তো করছে।’ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. এ টি এম রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘নাম পরিবর্তন-সংক্রান্ত যে কমিটি হয়েছে, ওই কমিটিতে বিভিন্ন নাম সাজেস্ট করবে। সেই সাজেশন এর ওপর ভিত্তি করে সিন্ডিকেট একটি ডিশিসন নেবে। সেই ডিসিশন যখন অ্যাপ্রুভ হবে, তখন ফাইনালি নাম চেন্স হবে। কমিটি থেকে কোনো সিদ্ধান্ত আসছে কি না, এ বিষয়ে জানা যায়নি।’