বাগেরহাট—৩ আসন (রামপাল ও মোংলা) দীর্ঘদিন ধরে একটি একচেটিয়া রাজনৈতিক প্রভাবের আওতায় থাকলেও এবার ভিন্ন এক রাজনৈতিক সম্ভাবনার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে

বাগেরহাট—৩ আসন (রামপাল ও মোংলা) দীর্ঘদিন ধরে একটি একচেটিয়া রাজনৈতিক প্রভাবের আওতায় থাকলেও এবার ভিন্ন এক রাজনৈতিক সম্ভাবনার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। ইসলামী মূল্যবোধে বিশ্বাসী, জনগণের সঙ্গে নিবিড় সংযোগ তৈরি করে অগ্রসর হচ্ছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর মনোনীত প্রার্থী, সিনিয়র আইনজীবী ও ইসলামী চিন্তাবিদ অ্যাডভোকেট মাওলানা শেখ আব্দুল ওয়াদুদ।

তিনি শুধু একজন প্রার্থী নন—তিনি হয়ে উঠছেন এই এলাকার সাধারণ মানুষের, বিশেষ করে অবহেলিত ও উন্নয়নবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর আশার প্রতীক।

 ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট
বাগেরহাট—৩ আসনটি ঐতিহাসিকভাবে আওয়ামী লীগ পরিবারের কাছে একপ্রকার ‘অদৃশ্য লকড’ হয়ে ছিল। কুবের চন্দ্র মন্ডল থেকে তালুকদার আব্দুল খালেক পর্যন্ত, সবসময়ই জয়ী হয়েছেন আওয়ামী পরিবারের কোনো না কোনো প্রার্থী। ১৯৯৬ সালে জামায়াত মনোনীত শহীদ মাওলানা গাজী আবু বকর সিদ্দিক (রহ.) দ্বিতীয় অবস্থানে থেকে এই আসনে সম্মানজনক ফল করেন। এরপর একাধিকবার সংগঠনের পক্ষে ভোটের লড়াই হলেও কোনো প্রার্থী চোখে পড়ার মতো সংগ্রাম করতে পারেননি।

 কঠিন মাটিতে দৃঢ় পদক্ষেপ
বাংলাদেশের দ্বিতীয় সমুদ্রবন্দর, মোংলা এবং চিংড়ি শিল্পনির্ভর রামপাল—এই দুই উপজেলাকে ঘিরে গড়ে উঠেছে বাণিজ্যনির্ভর একটি ভোটব্যাংক, যেখানে ইসলামপন্থী রাজনীতি বরাবরই একপ্রকার উপেক্ষিত থেকেছে। তবে সেই কঠিন মাটিতে গত দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে নিয়মিত, নিবেদিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে জনসংযোগ গড়ে তুলেছেন শেখ আব্দুল ওয়াদুদ। শহীদ গাজী আবু বকর সিদ্দিক (রহ.)-এর শাহাদাতের পর থেকেই তিনি মাঠে ছুটে চলেছেন নিঃশব্দে, নিরবধি।

 মাঠের মানুষ, মাঠেই থাকেন
পেশায় একজন সিনিয়র আইনজীবী হয়েও শেখ আব্দুল ওয়াদুদ সপ্তাহের প্রতিটি বৃহস্পতিবার থেকে শনিবার পর্যন্ত সময় দেন নিজের নির্বাচনী এলাকায়। প্রতিটি ওয়ার্ডে, ইউনিয়নে জানাজায়, দাওয়াতে, বিপদে-আপদে তিনি থাকেন সাধারণ মানুষের পাশে। রাজনৈতিক পরিচয় দেখেন না—মানবিক সম্পর্ককে প্রাধান্য দেন।

গ্রামীণ পোশাকে, সাধারণ আচরণে, হিন্দু-মুসলিম নির্বিশেষে মানুষের বাড়ি গিয়ে খোঁজখবর রাখেন। তরুণদের সঙ্গে সংযোগ রাখেন খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক ও সামাজিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে। রোগীর চিকিৎসা সহায়তা, মসজিদ মেরামত, রাস্তা সংস্কার, আইনি সহায়তা থেকে শুরু করে একাধিক উদ্যোগের পেছনে রয়েছেন তার নিজস্ব অর্থায়ন।

 সাহসী ও সচল নেতৃত্ব
যেখানে অনেক প্রার্থী নির্বাচনের সময় হঠাৎ এলাকাবাসীর কাছে হাজির হন, সেখানে শেখ আব্দুল ওয়াদুদ বছরের পর বছর ধরে স্থানীয় মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলেছেন হৃদয়ের টানে। তিনি নিছকই ‘ভোট চাইতে আসা নেতা’ নন, বরং মানুষের সুখ-দুঃখের সাথী, এলাকায় সমাদৃত এক ‘আপনজন’।

 এক নিস্প্রভ আসনকে সজীব করেছেন
যে আসনে ইসলামী রাজনীতি দীর্ঘদিন ধরে নিস্প্রভ ছিল, সেখানে তিনি প্রাণ ফিরিয়ে এনেছেন। প্রতিনিয়ত আয়োজন করছেন সাংগঠনিক বৈঠক, মতবিনিময় সভা, সাধারণ মানুষের সঙ্গে মত গ্রহণমূলক সংলাপ। বাগেরহাট—৩ আসনকে তিনি পরিণত করেছেন একটি গণসংযোগ ভিত্তিক গণরাজনীতির পরীক্ষাগারে।

ইসলামপন্থী রাজনীতির নতুন পথচলা
এই আসনে জামায়াত মনোনীত প্রার্থী হিসেবে শেখ আব্দুল ওয়াদুদ শুধু একটি নির্বাচনী লড়াই করছেন না, তিনি একটি মডেল প্রতিষ্ঠা করছেন—যেখানে সততা, আন্তরিকতা ও মাঠপর্যায়ের সংযোগই বিজয়ের মূল পুঁজি।

জয়-পরাজয় আল্লাহর হাতে—তবে নির্বাচনের প্রথাগত ধারা ভেঙে প্রার্থীর দায়বদ্ধতা, মানবিক সম্পর্ক ও নিষ্ঠা কীভাবে ভোটে প্রভাব ফেলতে পারে—তা শেখ আব্দুল ওয়াদুদ ভাইয়ের মাধ্যমে ইতোমধ্যেই প্রমাণিত হতে শুরু করেছে।

 রামপাল-মোংলায় এখন শুধু ভোটের হিসাব নয়, গড়ে উঠছে বিশ্বাসের ভিত্তি।
শেখ আব্দুল ওয়াদুদ—একজন প্রার্থী নন, বরং এই সময়ের এক দৃষ্টান্ত।