চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার ভূজপুর ৫নং ওয়ার্ডে অবস্থিত হালদা নদীর দুটি বাঁধ বর্তমানে চরম ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে, যা বর্ষা মৌসুমের শুরুতেই ভয়াবহ বন্যার আশঙ্কায় ফেলেছে স্থানীয় বাসিন্দাদের।

নদীর পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাঁধের ফাটল ও দেবে যাওয়া অংশ যেকোনো মুহূর্তে ভেঙে গিয়ে পুরো এলাকা তলিয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। এতে শত শত মানুষের জীবন-জীবিকা, কৃষি জমি, ঘরবাড়ি ও গবাদিপশু হুমকির মুখে পড়বে বলে স্থানীয়রা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।


ভূজপুর সিংহরিয়া কুম্ভারপাড় এলাকায় ঝুঁকিপূর্ণ হালদা বাঁধ পরিদর্শনে গিয়ে সোমবার (১৪ জুলাই) উপজেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দ দ্রুত মেরামতের দাবি জানিয়েছেন। তারা বাঁধের বর্তমান পরিস্থিতিকে অত্যন্ত উদ্বেগজনক বলে আখ্যায়িত করে এর আশু সংস্কারের ওপর জোর দেন।

স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, সম্প্রতি নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বাঁধের কয়েকটি স্থানে বড় ফাটল দেখা দিয়েছে এবং কিছু অংশ দেবে গেছে। এ কারণে গত বছরের বন্যার ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে না উঠতেই আবারও ভাঙনের আশঙ্কায় দিন কাটছে স্থানীয়দের। স্থানীয় বাসিন্দা ও ভিডিপি সদস্য জয়নাল আবেদিন উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, "গত বছর মেরামত হলেও হালদার বাঁধের বিভিন্ন অংশ দুর্বল হয়ে পড়েছে। তারপরও ঝুঁকি নিয়ে শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী চলাচল করছে, কখন ভেঙে সব তলিয়ে যায়। প্রশাসনকে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে।"

উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব জহির আজম চৌধুরী পরিদর্শনের সময় বাঁধের নাজুক অবস্থা প্রত্যক্ষ করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। তিনি বলেন, "আমরা দেখেছি বাঁধটি খুবই নাজুক অবস্থায় আছে। এখনই ব্যবস্থা না নিলে বর্ষার পানিতে এটি ভেঙে যেতে পারে। আমরা দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি।" তিনি আরও যোগ করেন, বাঁধটি দ্রুত মেরামত বা শক্তিশালী করার ব্যবস্থা না নিলে ভূজপুরবাসী বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হবে, তাই সরকারের উচিত এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করা।

এদিকে, এই বিষয়ে জানতে চাইলে পানি উন্নয়ন বোর্ড চট্টগ্রামের উপ-সহকারী প্রকৌশলী সোহাগ জানান, "আমরা হালদার বাঁধের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে অবগত আছি। ভূজপুরের ক্ষতিগ্রস্ত দুই পয়েন্টে জিও ব্যাগ দিয়ে মেরামত করা হবে এবং স্থায়ী সমাধানের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে বাজেট চেয়ে আবেদন করা হবে। আশা করছি দ্রুতই কাজ শুরু করা যাবে।"

অন্যদিকে, ভূজপুর ইউপি চেয়ারম্যান শাহজাহান চৌধুরী বলেন, "আমরা বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখছি। কতৃপক্ষের সাথে আমাদের যোগাযোগ হচ্ছে এবং যেকোনো জরুরি পরিস্থিতি মোকাবেলায় আমরা প্রস্তুত আছি।"

তবে স্থানীয়রা দ্রুত এই সমস্যার স্থায়ী সমাধান দেখতে চান, যাতে প্রতি বছর বর্ষা এলেই তাদের মধ্যে বন্যার আতঙ্ক সৃষ্টি না হয়।