পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার লালুয়া ইউনিয়নের মুক্তিযোদ্ধা বাজারে বসে বৃহত্তম গরু-ছাগলের হাট। প্রতি সপ্তাহে শনিবার বসা এই হাট থেকে বিপুল পরিমাণ সরকারি রাজস্ব আদায় করা হলেও এখনো হাটের জন্য নির্ধারিত কোনো জায়গা বরাদ্দ করা হয়নি। ফলে বাজারের প্রধান সড়ক ও তার দুই পাশে গরু-ছাগলের হাট বসছে। এতে যান চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি হওয়ার পাশাপাশি ঘটছে দুর্ঘটনাও। দুর্ভোগে পড়েছেন ক্রেতা-বিক্রেতাসহ স্থানীয় বাসিন্দারা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে এই হাট বসলেও পূর্বে ইজারা না থাকায় সরকারের রাজস্ব খাতে কোনো অর্থ জমা পড়তো না। তবে গত বছর থেকে হাটটি সরকারিভাবে ইজারা দেওয়া হয়। এর পর থেকে হাটে গবাদি পশুর ক্রয়-বিক্রয়ের পরিমাণ উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। কিন্তু হাটের জন্য নির্দিষ্ট কোনো জায়গা না থাকায় বাধ্য হয়ে সড়কের ওপর বসানো হচ্ছে গরুর হাট। ফলে জনদুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে।
গরু বিক্রেতা সুমন বেপারী বলেন, “জায়গা না থাকায় গরু সড়কের উপরেই রাখতে হয়। গাড়ি আসা-যাওয়ার সময় গরু নিয়ে অনেক সমস্যায় পড়তে হয়, দুর্ঘটনারও ভয় থাকে।”
একই অভিযোগ করেন মোটরসাইকেল চালক মাসুম ও অটোচালক সালাম। তারা বলেন, “হাটের দিনে যানজট লেগেই থাকে। দুর্ঘটনা ঘটছেও প্রায়ই। এ অবস্থায় আমাদের গাড়ি চালানো দুঃসাধ্য হয়ে পড়ে।”
ক্রেতা শিক্ষক হালিম, মুছা বিশ্বাস, স্বপন গাজীসহ অনেকে বলেন, “এই হাট সরকারিভাবে পরিচালিত হলেও গরু রাখার জায়গা নেই। হাটের জন্য নির্দিষ্ট একটি স্থান অত্যন্ত জরুরি। বিষয়টি নিয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া দরকার।”
হাট ইজারাদারের পক্ষে বিশ্বাস রাশেদ মোশাররফ কল্লোল বলেন, “বাজার থেকে প্রতিবছর বিপুল পরিমাণ অর্থ রাজস্ব খাতে জমা দিচ্ছি। অথচ বাজারের জন্য নির্দিষ্ট জায়গা না থাকায় ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়েই বিপাকে পড়ছেন। যদি দ্রুত পদক্ষেপ না নেওয়া হয়, তাহলে হাট চালানোই কঠিন হয়ে পড়বে।”
এ বিষয়ে লালুয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব শওকত হোসেন তপন বিশ্বাস বলেন, “মুক্তিযোদ্ধা বাজারের গরুর হাটের নির্দিষ্ট কোনো জায়গা নেই। বাজারের নিকটস্থ সরকারি জমিতে হাটটি স্থানান্তরের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে দাবি জানানো হয়েছে।”
কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রবিউল ইসলাম বলেন, “জনসুবিধার্থে বাজার সম্প্রসারণের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। নিকটবর্তী কোনো সরকারি জমি পাওয়া গেলে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
এদিকে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, রাজনীতিক ও সচেতন মহলও গরুর হাটের জন্য নির্দিষ্ট জায়গা বরাদ্দের দাবি জানিয়েছেন। জনদুর্ভোগ লাঘবে বিষয়টি দ্রুত বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়েছেন এলাকাবাসী।