নেত্রকোনার গুণী ব্যক্তিত্ব ভাস্কর্য ও মৃৎশিল্পী পুষ্পরঞ্জন আচার্য্যের ৭ম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ২০১৬ সালের ৬ জুন ৭৬ বছর বয়সে তিনি পরলোকগমন করেন।দিবসটি উপলক্ষে প্রয়াতের আত্মার শান্তি কামনায় পারিবারিক ভাবে বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হয়েছে। আজীবন দারিদ্রতার কষাঘাতে জর্জরিত নির্মোহ এই মানুষটি ছিলেন সৃষ্টিশীলতার অনন্য প্রতীক। নেত্রকোনা জেলা শহরের অদূরবর্তী অজপাড়া গাঁ সহিলপুরে ১৯৩৮ সালে এক প্রখ্যাত শিল্পী পরিবারে জন্মেছিলেন তিনি।দাদা বিজয় নারায়ণ আচার্য্য ছিলেন উপমহাদেশের প্রখ্যাত কবিয়াল।তার পিতা রাধাগোবিন্দ আচার্য্য ছিলেন বিখ্যাত মৃৎশিল্পী। বিখ্যাত কবিয়াল মদন আচার্য্য ছিলেন তার কাকা। শিল্পী স্বত্ত্বার দীক্ষা তিনি পারিবারিক ভাবেই পেয়েছিলেন।
পুষ্পরঞ্জনের শিল্পী স্বত্ত্বায় ছিল বাংলা আর বাংলার মানুষ। যার প্রতিফলন দেখতে পাওয়া যায় তার নির্মিত প্রতিটি ভাস্কর্যের পরতে পরতে। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ৫৫টির ও অধিক ভাস্কর্য তৈরী করেছিলেন তিনি। যার মধ্যে, বেকার নয় হকার, আজোও ভুলেনি মা বাংলার দামাল ছেলেকে, মুক্তিযোদ্ধার মা, স্বাধীনতা, ভাষা আন্দোলন, নির্যাতিতা নারী,এসিড নিক্ষেপ-যদি বোন হতাম,সাইক্লোন, কৃষক, দুর্ভিক্ষ দিন,বন্দী জীবন, স্বজন হারা,ধর্ম আইন নিরপেক্ষ মানুষ, কৃষক ধন্য যোগায় অন্ন,কঙ্কাল, পঙ্গু মুক্তিযোদ্ধা,বাউলশিল্পী,আজকের শিশু আগামী দিনের দ্বীপ,উল্লেখ যোগ্য। এর মধ্যে 'আজোও ভুলেনি মা বাংলার দামাল ছেলেকে' ভাস্কর্য টি বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরে সংরক্ষিত রয়েছে।
তিনি বলতেন 'নো ফ্রেন্ডশিপ-নো প্রোগ্রেস',
যেখানে বন্ধুত্ব নেই-সেখানে অগ্রগতি নেই।
পরিবার সমাজ তথা দেশের প্রতিটি ক্ষেত্রে
বন্ধুত্ব থাকা চাই।
তার ছোট ছেলে নয়ন আচার্য্য জানান,তার পিতার বানানো এসব মূল্যবান ভাস্কর্য গুলির অধিকাংশ সংরক্ষণের অভাবে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এগুলো রক্ষার্থে সরকারের আশুদৃষ্টি ও পৃষ্ঠপোষকতা দাবি করেন তিনি।