রাজধানীর স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ মিটফোর্ড হাসপাতালের ৩ নম্বর গেটসংলগ্ন রজনী ঘোষ লেনে মো. সোহাগ (৪৩) নামে এক ভাঙারি ব্যবসায়ীকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। বুধবার (৯ জুলাই) সন্ধ্যা ৬টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত সোহাগ কেরানীগঞ্জ মডেল থানার পূর্ব নামাবাড়ি গ্রামের ইউসুফ আলী হাওলাদারের ছেলে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে মিটফোর্ড এলাকার ৪ নম্বর রজনী ঘোষ লেনে ভাঙারির ব্যবসা করতেন।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সোহাগকে একা পেয়ে মঈনসহ ৪-৫ জন ব্যক্তি পাথর দিয়ে মাথায় আঘাত করে। এরপর তাকে উলঙ্গ করে নির্মমভাবে মারধর করা হয়। ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।

নিহতের বন্ধু মামুন অভিযোগ করে বলেন, “গত দুই-তিন মাস ধরে মঈন প্রতি মাসে মোটা অঙ্কের চাঁদা দাবি করত সোহাগের কাছ থেকে। সোহাগ টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় প্রায় দুই মাস আগে হুমকি দিয়েছিল—তোকে দেখে নেব। সেই হুমকিই বাস্তব হলো আজ।”

স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, অভিযুক্ত মঈন চকবাজার থানা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী ছিলেন। তার বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরেই হাসপাতালের ফুটপাত ও কেমিক্যাল ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদা তোলার অভিযোগ রয়েছে। এমনকি হাসপাতালের তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগেও অর্থের বিনিময়ে সুপারিশ করার কথা শোনা যায়।

এ ঘটনায় চকবাজার থানা ছাত্রদলের এক নেতাও মঈনের রাজনৈতিক সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করে বলেন, “মঈন দলের কর্মসূচিতে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করতেন এবং দলের দুর্দিনে পাশে ছিলেন। তবে তিনি এমন ঘটনায় জড়াতে পারেন—এটা বিশ্বাস করা কঠিন।”

এ বিষয়ে কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুজ্জামান জানান, “ভাঙারি ব্যবসাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিনের দ্বন্দ্ব ছিল। সেই বিরোধ থেকেই এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। ইতোমধ্যে জনি ও মঈন নামে দুইজনকে আটক করা হয়েছে। ঘটনার বিস্তারিত জানার জন্য প্রত্যক্ষদর্শীদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।”

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এ এলাকায় রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় চাঁদাবাজি ও দখলদারিত্বের কারণে ব্যবসায়ীরা দীর্ঘদিন ধরে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। সোহাগ হত্যাকাণ্ড সেই সহিংসতারই নির্মম বহিঃপ্রকাশ।