বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলা জুড়ে চলছে ফসলি জমির মাটি কাটার ধুম। কোথাও দিনে আবার কোথাও রাতে। ইটভাটা মালিকদের সঙ্গে যোগসাজশ করে মাটি কাটার এই মহোৎসবে মেতেছেন প্রভাবশালী কতিপয় ব্যক্তিরা। এসব মাটি কাটার ফলে আবাদি জমির পরিমাণ দিন দিন কমে যাচ্ছে। মারাত্মক হুমকির মুখে পড়ছে আশেপাশের ফসলি জমিগুলো। এছাড়াও মাটি বহন করা ট্রাকের চাকায় নষ্ট হচ্ছে গ্রামীণ সড়ক। বর্ষা মৌসুমে চলাচলে দুর্ভোগের আশঙ্কা এলাকাবাসীর। প্রশাসনকে জানিয়েও কোনো ফল পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। যেসব এলাকায় দিনের বেলা মাটি কাটতে স্থানীয়রা প্রতিবাদ করেন, সেসব এলাকায় রাতের আঁধারে মাটি কাটা হয়। তবে এখন বেশির ভাগ এলাকায় রাতেই মাটি কাটা হচ্ছে বলে জানান স্থানীয়রা। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাতে যখন সবাই ঘুমিয়ে পড়ে সে সময় ভেকু মেশিন দিয়ে মাটি কাটেন অসাধু ব্যবসায়ীরা। উপজেলার দেউলী, সৈয়দপুর, ময়দানহাট্টা, কিচক, আটমূল ইউনিয়নের ৮ থেকে ১০ জায়গায় আবাদি জমি পুকুর বানানো হচ্ছে। রবিবার (১২ জানুয়ারি) রাত ১০টার দিকে সরেজমিনে উপজেলার দেউলী ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর ও রহবল হাজীপাড়া এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, রাতের আঁধারে ভেকু দিয়ে মাটি কেটে ট্রাকে করে পার্শ্ববর্তী ইটভাটায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। সেখানে সিকিউরিটি গার্ড হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন কয়েকজন ব্যক্তি। মাটি কাটার ফলে ফসলি জমি পুকুর সমান গভীর হয়ে যাচ্ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কৃষ্ণপুর (মধুপুর) গ্রামের এক ব্যক্তি বলেন, উপজেলার দেউলী ইউনিয়নের রহবল (হাজিপাড়া) গ্রামের মৃত নান্নু আকন্দের ছেলে সাহাজুল আকন্দ মাটি কেটে ইটভাটায় বিক্রি করছেন। এর আগে দিনের বেলা মাটি কেটেছেন। পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকসহ বিভিন্নভাবে প্রতিবাদ করলে এখন রাতের বেলা মাটি কাটছেন।প্রশাসনকে অবগত করলেও কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছেন না। এ প্রসঙ্গে শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাহমিনা আক্তারের সাথে কথা হলে তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, আমাদের যতটুকু সম্ভব হচ্ছে ততটুকু ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। রাতের বেলা মাটি কাটার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, রাতে মাটি কাটলে সেই দায়ভার আমাদের ওপর বর্তায় না। সেক্ষেত্রে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সহযোগিতা নিতে বলেন এই নির্বাহী কর্মকর্তা। এ বিষয়ে শিবগঞ্জ থানার ওসি আব্দুল হান্নান ও মোকামতলা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ সারওয়ার পারভেজ জানান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশ ছাড়া আমরা কোনো পদক্ষেপ নিতে পারবো না। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করার আমাদের কোনো নিয়ম নাই। ইউএনও মহোদয় আমাদেরকে নির্দেশ দিলে আমরা সহযোগিতা করবো।