এছাড়াও ভিডিও ধারণ করতে গিয়ে ৬ জন সাংবাদিক আহত হন।তাদের মোবাইল, সাইকেল, মানিব্যাগ নিয়ে যান বহিরাগতরা। গুলিবিদ্ধরা ছাড়া বাকিরা চিকিৎসাগ্রহণ করে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসলেও এখনও হাসপাতালে নিয়মিত চেকআপ করতে হচ্ছে গুলিবিদ্ধদের। সেই আন্দোলনের কালোরাতের দুঃস্মৃতি থেকে কোনোভাবেই নিজেদের মুক্ত করতে পারছেন না তারা।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে গুরুতর আহত হয়েছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) কর্মরত সাংবাদিকরা। গত ১৫ জুলাই দিবাগত রাতে ছাত্রলীগের বর্বরোচিত আক্রমণ এবং পুলিশি হামলায় আহত হয় প্রায় কয়েকজন সাংবাদিক। এদের মধ্যে গুলিবিদ্ধ হন চারজন।

এছাড়াও ভিডিও ধারণ করতে গিয়ে ৬ জন সাংবাদিক আহত হন।তাদের মোবাইল, সাইকেল, মানিব্যাগ নিয়ে যান বহিরাগতরা। গুলিবিদ্ধরা ছাড়া বাকিরা চিকিৎসাগ্রহণ করে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসলেও এখনও হাসপাতালে নিয়মিত চেকআপ করতে হচ্ছে গুলিবিদ্ধদের। সেই আন্দোলনের কালোরাতের দুঃস্মৃতি থেকে কোনোভাবেই নিজেদের মুক্ত করতে পারছেন না তারা।

আহত সাংবাদিকরা হলেন, দৈনিক ইত্তেফাকের প্রতিনিধি আরিফুজ্জামান উজ্জল, মানবজমিনের প্রতিনিধি মো ইমরান হোসাইন, বণিক বার্তার প্রতিনিধি মেহেদী মামুন, দৈনিক বাংলার প্রতিনিধি আব্দুর রহমান সার্জিল, প্রথম আলোর প্রতিনিধি আব্দুল্লাহ আল মামুন, বিডিএন৭১ এর প্রতিনিধি রবিউল হাসান, ডিবিসি নিউজের প্রতিনিধি জোবায়ের আহমেদ, দ্য সাউথ এশিয়ানের প্রতিনিধি সাকিব আহমেদ, দৈনিক যুগান্তরের প্রতিনিধি মোসাদ্দেকুর রহমান,বাংলা ট্রিবিউনের এস এম তাওহীদ, শেয়ার বিজের ওসমান সরদার, দৈনিক জনকন্ঠের ওয়াজহাতুল ইসলাম, আমাদের সময়ের নোমান বিন হারুন, সময়ের আলোর প্রতিনিধি মুশফিকুর রিজন।

গুলিবিদ্ধ দৈনিক বাংলার প্রতিনিধি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের ছাত্র আব্দুর রহমান খান সার্জিল বলেন, আমরা সাংবাদিকরা সবাই একদিকে ছিলাম। আমাদের লক্ষ করে পুলিশ ছররা গুলি ছুড়তে থাকে। এক পর্যায়ে আমি আহত হয়ে নিচে বসে পড়ি। পরবর্তী আমাদের উদ্ধার করে এনাম মেডিকেলে নিয়ে আসা হয়। সেখানেই আমরা চিকিৎসা নিতে থাকি। আমার পায়ে এখনো প্রায় ৭০ টির মতো ছররা গুলি রয়েছে। মাঝে মাঝে তীব্র ব্যথা করে। ডাক্তারের পরামর্শ মতো চিকিৎসা চলছে। হাঁটাচলায় কষ্ট হচ্ছে।’

গুলিবিদ্ধ বর্ণিক বার্তার প্রতিনিধি সাংবাদিক মেহেদী মামুন জানায়, পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে পুলিশ আমার উপর সরাসরি গুলি চালায় । আমি বারবার সাংবাদিকতার কার্ড দেখালেও তারা বিরত থাকেনি। আমার শরীর ৩০টার উপরে ছররা গুলি লেগেছিলো, এর মধ্যে ১৭টি বের করতে পেরেছি। বাকিগুলো শরীরে রয়ে গেছে। ডাক্তারের নিয়মিত চেকআপে রয়েছি।মানবজমিনের প্রতিনিধি মো ইমরান হোসাইন বলেন, ওইদিন পুলিশ ও ছাত্রলীগ ধারালো অস্ত্র দিয়ে শিক্ষার্থীদের উপর হামলা করছিলো । তখন ভিডিও ধারণ করতে গিয়ে ছাত্রলীগের দ্বারা আক্রমণের শিকার হই। আমার মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে যায়। আমি এখন সুস্থ আছি।

আহত সাকিব আহমেদ সেই রাতে দুর্বিষহ স্মৃতি রোমন্থন করে বলেন, ওইদিন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা করে। ছাত্রলীগের কিছু ভাড়া করা সন্ত্রাসী সাবেক প্রক্টর প্রক্টর আ.স.ম ফিরোজ-উল হক ও পুলিশের সামনেই আমাকেও লাঠি দিয়ে আঘাত করলে আমার মাথা ফেটে রক্ত বের হতে থাকে। আমার মাথায় আটটি সেলাইয়ের প্রয়োজন হয়। এখন আমি শারীরিকভাবে পুরোপুরি সুস্থ। তবে এখনো সেই রাতে দুর্বিষহ স্মৃতি মনে পড়লে হাত পা কেঁপে উঠে।’