অভ্যন্তরীণ বাণিজ্যের আড়ালে প্রায় ৩৪ কোটি টাকা বিদেশে পাচারের অভিযোগে বেক্সিমকো গ্রুপের কর্পোরেট গ্যারান্টেড সহযোগী প্রতিষ্ঠান Autumn Loop Apparels Limited–এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ওয়াসিউর রহমানকে গ্রেফতার করেছে অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।


সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিটের বিশেষ পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদের তত্ত্বাবধানে পুলিশ পরিদর্শক মো. ছায়েদুর রহমানের নেতৃত্বে একটি দল তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় বুধবার (৩০ জুলাই) ঢাকার মধ্যবাড্ডা ডিআইটি প্রজেক্ট এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে।

সিআইডির প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, জনতা ব্যাংকের লোকাল অফিস শাখা (মতিঝিল, ঢাকা) থেকে Autumn Loop Apparels Ltd. তিনটি এলসি বা সেলস কন্ট্রাক্ট গ্রহণ করে। প্রতিষ্ঠানটি ২০২০ সালের ৩০ ডিসেম্বর থেকে ২০২৪ সালের ১০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পণ্য রপ্তানির কার্যক্রম চালালেও, রপ্তানির বিপরীতে বিদেশ থেকে অর্থ দেশে ফেরত আনার বাধ্যবাধকতা মানা হয়নি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রজ্ঞাপন (FE 1/77-BB, ১৬ এপ্রিল ১৯৭৭, Appendix 3/5) অনুযায়ী, রপ্তানির চার মাসের মধ্যে রপ্তানিমূল্য দেশে ফেরত আনতে হয়। কিন্তু সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানটি ইচ্ছাকৃতভাবে এই অর্থ দেশে ফেরত না এনে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ (সংশোধনী ২০১৫) অনুযায়ী অর্থপাচারের অপরাধ করেছে।

তদন্তে আরও জানা গেছে, ওয়াসিউর রহমান (৫০), পিতা এম.এ. ওয়াহিদ ও মাতা বেগম নুরুন্নাহার, Autumn Loop Apparels–এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও শেয়ারহোল্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। তিনি ও অন্যান্য আসামিরা যৌথভাবে স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ব্যবহার করে প্রায় ৩৪ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেন।

এ ঘটনায় মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ (সংশোধনী ২০১৫) এর ৪(২)/৪ ধারায় রাজধানীর মতিঝিল থানায় একটি মামলা (নং: ১২, তারিখ: ১৭/০৯/২০২৪) দায়ের করা হয়। মামলাটি বর্তমানে সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিটে তদন্তাধীন।

গ্রেফতারকৃত ওয়াসিউর রহমানকে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করে রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে। পাশাপাশি, তার ও তার সহযোগীদের বিদেশে কোনো অবৈধ সম্পদ রয়েছে কি না, সে বিষয়ে অনুসন্ধান অব্যাহত রয়েছে।

এ ছাড়া, বেক্সিমকো গ্রুপের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও ভাইস চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমানের ভূমিকা নিয়েও তদন্ত শুরু করেছে সিআইডি। অভিযোগ রয়েছে, তিনি আত্মীয়স্বজনদের নামে একাধিক প্রতিষ্ঠান খুলে অর্থ পাচারের সুযোগ করে দিয়েছেন।