লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে চাঁদার দাবিতে মেঘনা নদীর তীর রক্ষা প্রকল্পের কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন ইউনিয়ন জামায়াত নেতা, বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার মাতব্বরহাট এলাকার পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ওয়েস্টার্ন ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানির কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের সাহেবের হাট ইউনিয়ন
সভাপতি মাস্টার লোকমান হোসেন ও ওই ইউনিয়নের ৭নাম্বার ওয়ার্ড জামায়াতের সভাপতি আনোয়ার হোসেন।
এ সময় তারা বালু ও পাথর ভর্তি প্রতি বাল্কহেড লোড আনলোড থেকে ৮হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন, বিষয়টি নিয়ে ওই এলাকায় এখন মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
জানা যায়, বাংলাদেশ আভ্যন্তরিন নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) চলতি বছরের জুলাই থেকে এক বছরের জন্য কমলনগর উপজেলার নবীগঞ্জ থেকে পাটারিরহাট এলাকা পর্যন্ত লক্ষ্মীপুর জেলার হারুনুর রশিদ নামে এক ব্যক্তিকে লিজ দেন। পরে হারুনুর রশিদ মাতাব্বরহাট ঘাট সাহেবের হাট জামায়াতের সভাপতি লোকমান মাস্টারকে সাব লিজ দেন। সাব লিজ নিয়ে জামায়াত নেতা লোকমান মাস্টার ও ওয়ার্ড সভাপতি আনোয়ার হোসেন মিলে ওই ঘাটের পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ওয়েস্টার্ন ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানির লোকজনের কাছ থেকে বিভিন্ন ট্রলার,বাল্কহেড ও জাহাজ প্রতি মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করেন। বালু ও পাথর ভর্তি বাল্কহেড বা জাহাজ প্রতি ৮ হাজার টাকা না দিলে কাজ বন্ধ করে দেওয়ার হুশিয়ারিও দেন তারা। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ওয়েস্টার্ন ইঞ্জিনিয়ারিং তাদের কথার গুরুত্ব না দিলে বৃহস্পতিবার সকালে জামায়াত নেতা লোকমান মাস্টারের নির্দেশে আনোয়ারসহ তাদের লোকজন নিয়ে ওয়েস্টার্ন ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানির কাজ বন্ধ করে দেন। এর আগে জেলা প্রশাসকের এক মিটিংয়ে নদী বাঁধ প্রকল্পের উন্নয়নে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান থেকে কোন টাকা নেয়া যাবে না মর্মে একটি রেজুলেশন হয়। জেলা প্রশাসক এ বিষয়ে বিআইডব্লিওটিএ পানি উন্নয়ন বোর্ডকে চিঠি দিয়ে অবহিত করেন।
এ বিষয়ে ওয়েস্টার্ন ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানির ম্যানেজার বোরহান উদ্দিন বলেন, জামায়াত নেতা লোকমান মাস্টার আমাদের অফিসে এসে তারা ইজারা এনেছে বলে জাহাজ প্রতি লোড-আনলোডে ৮হাজার টাকা দাবি করেন। আমাদেরতো এভাবে টাকা দেওয়ার নিয়ম নেই বলে তাদের জানাই। এখন বৃহস্পতিবার সকালে তারা এসে আমাদের কাজ বন্ধ করে দেয়। আমরা বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি।
এদিকে সাহেবেরহাট ইউনিয়ন জামায়াতের সভাপতি মাস্টার লোকমান হোসেন বলেন, আমরা জেলার হারুনুর রশিদ থেকে সাব-লিজ এনেছি। আমরা সরকারের নির্দেশনা মোতাবেক ইজারা দাবি করছি। কাজ বন্ধ করার বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না।
এ বিষয়ে ইজারদার হারুনুর রশিদ বলেন, আমি মাতব্বরহাট ঘাট লোকমান মাস্টারকে সাব-লিজ দিয়েছি। সরকার আমাদের ইজারা দিয়েছেন এখন ওই ঘাট থেকে টোল আদায়তো আমরা করবো। এ সময় তিনি ঝামেলা না করে বসে সমাধান করার দাবি করেন।
এ বিষয়ে উপজেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা আবুল খায়ের বলেন, বিষয়টি আমার নলেজে নেই। কি হয়েছে আমি খোঁজ খবর নিচ্ছি।
লক্ষ্মীপুর জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো.নাহিদ উজ জামান খান বলেন, নদী বাঁধ প্রকল্পের উন্নয়ন কর্মকান্ডে কাউকে কোন টাকা দেওয়ার নির্দেশনা নেই। খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনী ব্যবস্থা নিবেন তিনি।